নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন

‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শেখ জামাল ০ : ৩ ফরাশগঞ্জ
ঢাকা আবাহনী ০ : ০ চট্ট. আবাহনী
স্পোর্টস রিপোর্টার : ঘরোয়া ফুটবলের মর্যাদাপূর্ণ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নতুন রানার্সআপ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে কি হারাতে পারে তালিকার তলানীর দল ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব? এ প্রশ্নটি গতকাল ভাবিয়ে তুলেছিল দেশের ফুটবলপ্রেমীদের। প্রশ্ন যাই থাক না কেন, ঘটনা কিন্তু সত্যি। চলমান প্রিমিয়ার লিগের শেষ রাউন্ডে শেখ জামালকে ঠিকই হারালো ফরাশগঞ্জ। প্রথম লেগে যে দলটি শেখ জামালের কাছে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল দ্বিতীয় লেগে তারাই কিনা সহজ জয় তুলে নিলো। গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে লিগের শেষ রাউন্ডের প্রশ্নবিদ্ধ ম্যাচে ফরাশগঞ্জ ৩-১ গোলে হারায় শেখ জামালকে। বিজয়ী দলের হয়ে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড চিনেদো ম্যাথিও দু’টি এবং মিডফিল্ডার আলমগীর একটি গোল করেন। জামালের গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড সলোমন কিং পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ দেন। এই জয়ে ২২ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট পেয়ে তালিকার এগারতমস্থানে উঠে আসলো ফরাশগঞ্জ। সমান ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট পাওয়া শেখ জামাল এক ম্যাচ আগেই দ্বিতীয়স্থানে থেকে রানার্সআপ নিশ্চিত করেছে। শেখ জামালের কাছে হেরে গেলে কালই অবনমন নিশ্চিত হয়ে যেতো ফরাশগঞ্জের। কিন্তু জামালের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট পাওয়ায় আগামী মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে টিকে থাকার আশা বেঁচে থাকলো তাদের। এক ম্যাচ কম খেলে তাদের সমান পয়েন্ট মুক্তিযোদ্ধারও। অন্যদিকে ২১ ম্যাচে রহমতগঞ্জের পয়েন্ট ১৫। তাই শেষ ম্যাচে সাইফের বিপক্ষে হেরে গেলে কাটা পড়বে রহমতগঞ্জই। কিন্তু তারা জিতে গেলে শেষ রক্ষা হবে না ফরাশগঞ্জের। তখন হয়তো তাদের বিদায় নিতে হবে, নয়তো প্লে অফে নির্ধারিত হবে ভাগ্য। প্লে অফটা অবশ্য নির্ভর করবে আজ মুক্তিযোদ্ধা-বিজেএমসি ম্যাচের ফলাফলের উপর।
বলা যায় কাল অদৃশ্য ইশারায় ফরাশগঞ্জের বিপক্ষে বড় ব্যবধানের হার মেনে নিলো শেখ জামাল। ম্যাচের প্রথম গোল থেকেই সমঝোতার ছাপ স্পষ্ট বুঝা গেছে। ২৪ মিনিটে যে গোলটি করে ফরাশগঞ্জ এগিয়ে যায় সেটি ছিল প্রশ্ন বিদ্ধ। ডান প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ফরাশগঞ্জের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড চিনেদো ম্যাথিও। তার পেছন পেছন ছুটে যান শেখ জামালের দু’ডিফেন্ডার। কিন্তু ম্যাথিও যখন ডান পায়ে বল জালে ঠেলে দিচ্ছিলেন তখন রহস্যজনক আচরণ করেন জামালের গোলরক্ষক মো: নাঈম। ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়ে বল আটকে দেয়ার একটা চেষ্টা করতে পারতেন তিনি। কিন্তু তা না করে যেনো বলটা জালে প্রবেশের অপেক্ষাই করতে থাকেন নাঈম। বল যখন জাল স্পর্শ করছে তখন তিনি তাকিয়ে দৃশ্যটি যেন উপভোগ করছিলেন (১-০)। এরপর ম্যাচের চিত্র যা ছিল তা অনেকটা পাড়া মহল্লার কিশোরদের ফুটবল খেলার মতো। জামালের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা যেনো পোস্টের সামনে গিয়েই জমে বরফ হয়ে যাচ্ছিলেন। স্টেডিয়ামে উপস্থিত শ’খানেক দর্শকের চোখে-মুখে সন্দেহ। তবে কি ফরাশগঞ্জকে ম্যাচটা ছেড়ে দিয়েছে শেখ জামাল? এক গোলে পিছিয়ে থেকে যেখানে জামাল গোলশোধে মরিয়া হয়ে লড়বে সেখানে তাদের দেখা গেছে গাছাড়া ভাবে খেলতে। ফলে ম্যাচের ৩০ মিনিটে দ্বিতীয় গোল আদায় করেন নেয় ফরাশগঞ্জ। এসময় বল নিয়ে জামাল বক্সে ঢুকে পড়েন ম্যাথিও। এগিয়ে এসে তাকে ল্যাং মেরে ফেলে দেন জামাল গোলরক্ষক নাঈম। রেফারী পেনাল্টির নির্দেশ দিলে তা থেকে ডান পায়ের শটে দ্বিতীয় গোল করেন করেন ম্যাথিও (২-০)। ৩৫ মিনিটে প্রতিপক্ষ দলের তিন ডিফেন্ডারের সামনে দিয়ে বল নিয়ে শটে তৃতীয় গোল করে ফরাশগঞ্জ মিডফিল্ডার আলমগীর (৩-০)। বিরতির পর বিচ্ছিন্ন কিছু আক্রমণ করলেও গোল করার কোন ইচ্ছাই দেখা যায়নি জামাল ফরোয়ার্ডদের মাঝে। ৬৮ মিনিটে নিশ্চিত গোল হাতছাড়া করেন সলোমন কিং। এসময় ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে পেয়েও কিং বল তুলে দেন ফরাশগঞ্জ গোলরক্ষকের হাতে। তবে ৯০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সলোমন কিং এক গোল (১-৩) দিলেও শেষ পর্যন্ত তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ে ফরাশগঞ্জ। এর আগেও ২০১১ সালে প্রিমিয়ার লিগে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে পাতানো ম্যাচ খেলে ২০ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হয়েছিলো শেখ জামালকে। এবারও কি তারা সে পথেই হাঁটলো?
দিনের অপর ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী গোলশুন্য ড্র করে চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে। এই ড্র’তে ২২ ম্যাচে ৫২ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা আবাহনী তালিকার শীর্ষে থাকলেও ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে থেকে লিগ শেষ করল চট্টগ্রামের দলটি। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী ও রানার্সআপ শেখ জামালের হাতে ট্রফি তুলে দেনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। এ সময় আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুর্শেদী ও সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন মহি উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।