পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করে তুলতে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পাহাড়ের সশস্ত্র গ্রুপগুলো। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ধর্ষন ও হত্যাসহ নানা অপরাধে সদস্যদের অনেকেই জড়িত পড়ায় এরই মধ্যে ভেঙ্গে দু’ভাগ হয়ে গেছে ইউপিডিএফ। পূর্বের দলীয় কোন্দলের কারনে খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক মিঠুন চাকমাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের ৬দিন পর গত ৯ জানুয়ারী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ সংস্কারপন্থি দলের শীর্ষ ১৭ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের জেঠাতো ভাই অনি বিকাশ চাকমা বাদী হয়ে খাগড়াছড়ির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করতে খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, পার্টি ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে দ্বন্ধের জের ধরেই খুন হয়েছেন মিঠুন চাকমা। দলের শীর্ষ স্থানীয় অনেকেই স¤প্রতি তাকে সন্দেহ করে আসছিলেন। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বলেছে বিষয়গুলো তারা খতিয়ে দেখছে। মিঠুর হত্যার পর তার দলের শীর্ষ নেতারাও সক্রিয় কোন ভ’মিকা রাখছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, মিঠুন হত্যার পরে পুরো পার্বত্য অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনার জের ধরে আরো খুনোখুনির ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সূত্র জানায়, পার্বত্য জেলায় তিনটি আঞ্চলিক সংগঠনের মধ্যে শান্তিচুক্তির বিরোধিতাকারী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সশস্ত্র সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির ব্যাপারে অন্যদের চেয়ে বেশি বেপরোয়া বলে অভিযোগ উঠেছে। ১৯ বছর বয়সী এই সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নিজ দলের নেতাকর্মীকে খুন করার অভিযোগ এনে গত মাসে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নামে নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরই মধ্যে খুনের শিকার হলেন মিঠুন চাকমা। গত ৪ জানুয়ারী কোর্টে হাজিরা শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিজ বাড়িতে গেলে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাকে অপহরণ করে ¯øুইস গেট এলাকায় নিয়ে তার পেটে ও মাথায় গুলি করে ফেলে যায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ২০০১ সালে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্রপরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখার আহŸায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মিঠুন চাকমা। সূত্র জানায়, ইউপিডিএফ ভেঙে দুই ভাগ হওয়ার মধ্য দিয়ে পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২০ বছরে চারটি আঞ্চলিক সংগঠনের জন্ম হয়। ১৫ নভেম্বর খাগড়াছড়ির খাগড়াপুরে একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে সংগঠনটি। ইউপিডিএফ থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত ও জনসংহতি সমিতির সংস্কারপন্থী অংশের কিছু নেতাকর্মী এই দলটি গঠনের পেছনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক-এর পর থেকে সংগঠনটি ভাঙার কারণ জানিয়ে পার্বত্যবাসীর কাছে খোলা চিঠি বিলি করা হচ্ছে। এতে সেখানে ইউপিডিএফ নেতাদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নিজ দলের নেতাকর্মীকে খুন করাসহ নানা অভিযোগ তোলা হয়েছে। খোলা চিঠিতে ইউপিডিএফের কাছে যারা জিম্মি রয়েছেন তাদের একজোট হওয়ার আহŸান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তিবিরোধী বিশেষ মহলের প্ররোচনায় ইউপিডিএফ নাম দিয়ে জুম জনগণের একটা অংশকে বিভ্রান্ত। জুম জনগণের একটা অংশ এই জঙ্গিচক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কারণ, এই সংগঠনে যোগ দেয়া যায় কিন্তু সরে আসার কোনো সুযোগ থাকে না। ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক-এর ১৬ পৃষ্ঠার খোলা চিঠিতে সংগঠন ভাঙার কারণ উল্লেখ করে বলা হয়, আমরা জুম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সংগঠনের নেতৃত্বে যারা আছেন তাদের প্রতি আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল। কিন্তু মুখোশের আড়ালে নেতাদের যে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা ছিল আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ অক্টোবর খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে চাঁদাবাজি করতে আসা ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদেরকে নিজ বাড়িতে গোপনে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করায় উক্ত এলাকায় বসবাসকারী প্রফুলত্রিপুরার ছেলে নিরীহ কৃষক জীবন ত্রিপুরা(৩২) কে গুলি করে গুরুতর আহত করে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা। এ সময় জীবন ত্রিপুরা হাতে ও বুকে গুলিবিদ্ধ হয়। গুলির শব্দে পাড়া-প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। গত ২০ অক্টোবর চাঁদাবাজির এলাকা ভাগ এবং অন্যান্য আন্তঃদলীয় কোন্দলের জের ধরে জেএসএস(এমএন) গ্রুপের নেতা সমায়ুন চাকমা(৪৫) কে কুপিয়ে হত্যা করে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা। খাগড়াছড়ি জেলা সদরের কমলছড়ি ভুয়াছড়ির খ্রীষ্টান্ত পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইউপিডিএফসহ পাহাড়ী সশস্ত্রগ্রুপগুলোর সন্ত্রাসীরা শুধু হত্যা বা চাঁদা আদায় করেই ক্ষান্ত নেই। এরা পাহাড়ে ভয়াবহ রকমের নারী নির্যাতনও চালাচ্ছে। পাহাড়ি মেয়েরা বাঙালি ছেলেদের বিয়ে করলে দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে তোয়াক্কা না করে এসব মেয়েদের ধরে নিয়ে নিজেরাই শাস্তির নামে নারীদের গণধর্ষণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।