পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
২০১৮ সালকে আমি দেখতে চাই ভিন্ন আঙ্গিকে। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে। দেশের মানুষগুলো বদলে যাবে। মানুষ মানুষের জন্য হবে। জীবন হবে জীবনের জন্য। খুন হবে না, গুম হবে না দেশে। আর একবারও প্রশ্ন ফাঁস হবে না। ফেন্সিডিল, ইয়াবার রাজ্যে আগুন জ্বলবে; ভূমিদস্যুরা দেশ ছেড়ে পালাবে, ঘুষখোররা আর ঘুষ খাবে না। মাতৃত্ব, পিতৃত্ব, ভ্রাতৃত্য আর বন্ধুত্বের বন্ধন হবে অটুট। ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক নিবিড় হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র বিকশিত হবে। শাসকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
২০১৮ সালটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বছরেই রয়েছে বড় বড় কয়েকটি ইভেন্ট। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংবিধান অনুযায়ী এ বছরের কোনো এক সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। বাংলাদেশে প্রতিটি নির্বাচনের বছর ঘটনাবহুল সহিংসতায় ভরপুর থাকে। ২০১৮ তেমনই এক সহিংসতার কালো মেঘের আশঙ্কার মধ্যে শুরু হচ্ছে। বছরের শুরুতেই বেগম জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায় দিয়ে বছরের রাজনীতি উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এরপর নির্বাচন কেন্দ্রিক উত্তাপ বছরজুড়েই বাংলাদেশকে এক অগ্নিকুÐে রাখবে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে নির্বাচন কেন্দ্রিক দূরত্ব কমেনি। বরং দুই প্রধান রাজনৈতিক দলই তাঁদের নিজেদের অবস্থানে অনঢ় থাকার ঘোষণা দিয়েছে। এরকম প্রেক্ষাপটে ২০১৮’র সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, কীভাবে একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব? তবে, ২০১৮’র প্রবেশ মুখে দাঁড়িয়ে একটি কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, ২০১৮’র নির্বাচন ২০১৪ এর মতো প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন হবে না। এই নির্বাচন যদি সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে শেষ পর্যন্ত না হয় তাহলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অগ্রযাত্রা নাকি অনির্বাচিত শাসনের পুনরাবৃত্তি ঘটবে ২০১৮ তে?
এদিকে ২০১৮-কে ঘিরে অনেক প্রত্যাশা, অনেক স্বপ্ন, অনেক কল্পনা। হবে মেট্রোরেল, হবে পদ্মা সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে। বিশাল বিশাল স্বপ্ন আমাদের সামনে। যদিও সময়ের বিচারে খুব দীর্ঘ নয় একটি বছর, মাত্র তিনশো পঁয়ষট্টিটি দিন। তবু মানুষকে প্রতিটি দিনই ইঙ্গিতে-ইশারায় ডাকে। অজানা আগামীকালের পথে ডেকে নিয়ে যায়। দিন থেমে থাকে না। আলো ও আঁধারের অবিচ্ছিন্ন আবর্তনের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যায় নতুন বছর। পুরনো বছরের ধূসর দিনগুলোর কথাও পাশাপাশি আমাদের মনে পড়বে কী পেয়েছি, কী হারিয়েছি। নতুনের প্রতি সবসময়ই মানুষের থাকে বিশেষ আগ্রহ ও উদ্দীপনা। নতুনের মধ্যে নিহিত থাকে অমিত সম্ভাবনা। সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করার সুযোগ করে দিতে এলো নতুন বছর। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে এগিয়ে চলাই জীবন।
নতুন বছরে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা সকল বাঙালির সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রত্যাশা। আরও প্রত্যাশা হিংসা, বিদ্বেষ, বিভেদ ও হানাহানি পরিহার করে বাংলাদেশটা পরিণত হবে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সুখী ও সুন্দর মানুষের দেশে। নতুন বছরের কাছে প্রত্যাশা ভালো থাকার, সুন্দর থাকার। দেশ হোক অস্থিতিশীলতা-সহিংসতা-নৃশংসতা মুক্ত। চাই অর্থনৈতিক উন্নয়ন। নতুন বছরের কাছে চাওয়া একটি সুন্দর জীবন। সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ, শিক্ষাঙ্গণে সুস্থ পরিবেশ। মানুষে মানুষে শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা। সব মিলে হবে একটি শান্তিময় দেশ। ২০১৮-কে ঘিরে এমন স্বপ্নই দেখছি আমরা। অনাগত রাজনৈতিক হানাহানি, প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে আমাদের প্রিয় স্বদেশ মুক্ত থাকুক, সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে গিয়ে বিশ্বের দরবারে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকুক, এই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।