পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে : পিলার ধসে পড়ায় সেতুটির মাঝখানের অংশ ১০ ফুট পর্যন্ত ধসে গেছে। গাড়ি উঠলেই সেতুটি কেঁপে উঠছে। তবু থেমে নেই চলাচল। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলছে এই সেতুসংলগ্ন সাতটি গ্রামের ১৫ হাজার বাসিন্দা। সেতুটির অবস্থান চট্টগ্রামের রাউজানের ১ নম্বর হলদিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলিখিল সড়কে। এলাকাবাসী জানান, ডাবুয়া খালের ওপর নির্মিত এই সেতুটির মাঝের পিলারের ১০ ফুট অংশ গত জুন মাসে ধসে পড়ে। এরপর থেকে ছয় মাস ধরে ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু পার হচ্ছে সংলগ্ন সাত গ্রামের মানুষ। গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর ওপর ওঠার আগে গাড়ি হালকা করতে কয়েকটি অটোরিকশা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে অটোরিকশাগুলো ধীরে ধীরে পার হচ্ছে। চালকেরা জানালেন, যানবাহন উঠলেই সেতু কেঁপে উঠে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়লে প্রাণহানি ঘটবে এমন আশঙ্কা জানার পরও বিকল্প পথ না থাকায় তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে এভাবেই চলতে বাধ্য হচ্ছেন ছয় মাস ধরে।
এলাকাবাসী জানান, আলিখিল, বালুখালী, বৃবানপুর, পুড়া বাজার, কুলালপাড়া, কচুপাড়া, খদ্দের বাড়িÍএই সাত গ্রামের মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা এটি। এ ছাড়া স্থানীয় আলিখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইয়াছিন নগর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়, হযরত ইয়াসিন শাহ স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং রাউজান কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর যাতায়াতেরও একমাত্র মাধ্যম এই সেতু। ভাঙা সেতুর কারণে কৃষকদের পণ্য বাজারে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পণ্য পরিবহন বিঘ্নিত হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার সবজি চাষ কম হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। সেতু এলাকায় কথা হয় দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তমিজ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, সেতু ভাঙার কারণে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষি উৎপাদন কমে গেছে এ এলাকায়। তিনি জানান, আগে এ এলাকায় ৫৫ টন মাছ চাষ হতো। এখন তা ১১ টনে নেমে এসেছে।
আট কিলোমিটার দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়ে ছোট্ট দুই নাতিকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন জাহানারা বেগম (৫০)। অটোরিকশা থেকে নেমে সেতুটি পার হচ্ছিলেন তাঁরা। জাহানারা বেগম বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে পড়ার কারণে খুব কষ্টে আছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হতে হয়। এটি নতুন করে নির্মাণ করা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ লোকমান বলেন, এই সেতুর ওপর দিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য অটোরিকশা সার্ভিস চালু আছে। ৪০ থেকে ৫০টি অটোরিকশা প্রতিদিন এ এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। খালি অটোরিকশাটি নিয়ে পার হওয়ার সময়ও সেতু কেঁপে ওঠে। এ তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। বিকল্প না থাকায় তবু এই সেতু দিয়ে বাধ্য হয়ে তাঁদের পার হতে হচ্ছে দিনের পর দিন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, গত মে মাসের শেষের দিকে বর্ষার বন্যায় সেতুটি তলিয়ে গিয়েছিল। পানি নেমে যাওয়ার পরে সেতুটির মাঝখানের পিলারের ১০ ফুট ধসে পড়ে। এ কারণে ১৪৫ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতুর ৭০ ফুট অংশের ১০ ফুট পর্যন্ত দেবে যায়। ৭০ ফুটের দুই পাশে ফাটলের সৃষ্টি হয়। ওই ফাটলের ওপর কোনো রকমে ঝুলে রয়েছে সেতুর ওই অংশটি। সেতুটি যান চলাচলের উপযোগী না হলেও প্রচÐ ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়ে এলাকার বাসিন্দারা চলাচল করছে।
শাহাজাহান বলেন, বন্যার পর স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা প্রকৌশলীকে নিয়ে সেতুটি পরিদর্শন করে নতুন সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছিলেন এলাকাবাসীকে। তিনি দ্রæত এখানে নতুন সেতু নির্মাণ করে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভাঙা সেতুটি পরিদর্শন করেছি। সেতুটি নির্মাণের জন্য চার কোটি টাকার একটি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ না পাওয়ায় এখনো কিছু করা যাচ্ছে না। বরাদ্দ এলে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।