রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) থেকে তাজ উদ্দিন : কোন ধরনের ছুটি না নিয়েই প্রায় ৬ বছর দেশের বাইরে অবস্থান করছেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার গৌড়স্থান উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর থেকে একনাগাড়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত তিনি। তবে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ ও পত্র প্রেরণ করলেও কোন উত্তর দেয়নি রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি জানায়, বিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষককের মধ্যে আছেন মাত্র ৮ জন। বিনা ছুটিতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ১ জন। এছাড়া ৪ জন শিক্ষক ২০০৬ সালের পর থেকে বিভিন্ন সময় অন্যত্রে চাকরি নিয়ে চলে যান। ফলে শূণ্য হয়ে যায় বিদ্যালয়ের গণিত, বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা ও বিপিএড শিক্ষকের পদ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজম খান জানান, বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালে। মাত্র দু‘বছরের ব্যবধানে ২০০৬ সালে একাডেমিক স্বীকৃতি (এমপিও) লাভ করে। ওই সময় মোট ১৩জন শিক্ষক ছিল। যাদের মধ্যে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বাজালিয়া দিয়ারকুল এলাকার মো: ইসলাম মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ছিলেন গণিত শিক্ষক। বিদ্যালয়টি একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করার পর থেকে বিভিন্ন সময় ৪ জন শিক্ষক ব্যক্তিগত কারণে অব্যাহতি নিয়ে চলে গেছেন। তবে গণিত শিক্ষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম কোন ধরনের ছুটি না নিয়ে ২০১২ সাল থেকে একনাগাড়ে অনুপস্থিত রয়েছেন।
সেই সময় অনেক খোঁজখবর নেয়ার পর জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম ওমরা ভিসা নিয়ে সৌদি গিয়ে চাকরি করছেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট রফিকুল ইসলামকে প্রথম সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর ২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারি রফিকুল ইসলামকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করে পত্র প্রেরণ করা হয়। তবে পরিবারের কেউ পত্র গ্রহণ করেনি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য নূরুন হুদা চৌধুরী ইনকিলাবকে জানান, রফিকুল ইসলাম বিদেশ থেকে দেশে এসে হঠাৎ একটি যোগদানপত্র জমা দেয়। এতে সে জটিল রোগে অসুস্থ বলে উল্লেখ করে। তবে কোন চিকিৎসাপত্র বা সংশ্লিষ্ট কোন কাগজপত্র জমা দেননি। এই আবেদন জমা দিয়েই তিনি আবার শ্রমিক ভিসা নিয়ে সৌদি আরব চলে গেছেন।
বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি ও বিদেশ চলে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হাছিনা আক্তার বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে রফিকুল ইসলামের বিরোধ ছিল। একপর্যায়ে এই বিরোধ তিক্ততায় পৌঁছে। পরে ২০১২ সালে ওমরা হজ শেষে দেশে না ফিরে সেখানেই চাকরি করেন। এবার দেশে এসে আর যেতে চাননি। চেয়েছিলেন বিদ্যালয়ে যোগদান করে এখানেই থেকে যাবেন। তবে পরিচালনা কমিটি যোগদান করতে দেয়নি। তাই গত ২৬ অক্টোবর আবার সৌদি চলে গেছেন।’
রফিকুল ইসলামের মুঠোফোন বা যোগাযোগের ব্যবস্থা আছে কিনা জানতে চাইলে হাছিনা আক্তার বলেন, ‘ভাই, উনি গেছেন মাত্র দু মাস হয়েছে। এখনো মোবাইল নম্বর নেননি। বাসায় বিভিন্ন সময় ল্যান্ডফোনে কথা বলেন। নির্দিষ্ট কোন নম্বর নেই।’ রফিকুল ইসলাম কোন রোগে আক্রান্ত কিনা জানতে চাইলে হাছিনা বলেন, আমার জানা নেই।
অতি সম্প্রতি ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন কমিটির সভাপতি নুরুল হুদা চৌধুরী। বৈঠকে রফিকুল ইসলামকে নতুনভাবে শোকজ করা সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
শিক্ষক সংকটে বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ গণিত, বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞানসহ ৫ বিষয়ে শিক্ষক না থাকায় থমকে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও শিক্ষা কার্যক্রম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।