Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শীতকালীন অসুখে করণীয়

| প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঋতু পরিবর্তনের পালাক্রমে শীতের আগমনী র্বাতায় সর্বত্রই সর্দি, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, বাতব্যথা, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাসহ নানান ধরনের অসুখ-বিসুখ পরিলক্ষিত হয় । আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে অনেকেই কিন্তু সহজে নিজেকে উক্ত পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে না। ঋতু পরিবর্তনকালীন পরিবর্তিত আবহাওয়ার সাথে দ্রæত খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য দেহাভ্যন্তরে বিভিন্ন ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া চলতে থাকে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। শীতকালে বাতাসে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে আর্দ্রতাও কমে যায়, যা আমাদের শ্বাসনালির স্বাভাবিক কর্মপ্রক্রিয়াকে বিঘিœত করে ভাইরাসের আক্রমণকে সহজ করে । তাই শীতকাল বিভিন্ন রোগ জীবাণু বিশেষতঃ ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত অনুকূল । শীতের এ সময়টাতে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ মানুষকে বেকায়দায় ফেলে দেয়, যেমন-ঠান্ডা, সর্দি, কাশি, খুসখুসে কাশি, হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া, শরীর ব্যথা, শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা, গলাব্যথা, জ্বরসহ শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা।
জেনে নেই শীতকালীন অসুখ-বিসুখ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে -
*যারা শীতকালে অতিসংবেদনশীলতার কারণে সর্দি, কাশি, ঠান্ডাসহ বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হন, তারা শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন উষ্ণ গরম পানি বা গরম পানীয় হিসেবে জোশিনা চা দিয়ে দিনটা শুরু করুন। তাতে শরীরের উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে, ঠান্ডা কম লাগবে এবং সেই সাথে শীতকালীন বিভিন্ন সমস্যা থেকেও আপনি মুক্তি পাবেন।
*যাদের ঠান্ডা সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগাবেন না এবং ঠান্ডা খাবার পরিহার করুন। প্রয়োজনে উষ্ণ প্রকৃতির এবং গরম খাবার গ্রহণ করুন।
*যাদের গলায় ব্যথা হয় তাদের জন্য কুসুম গরম পানি পান করা ভাল এবং হালকা গরম পানিতে লবণ দিয়ে কুলকুচি করা উচিত। প্রয়োজনে গলায় গরম কাপড় পেঁচিয়ে রাখুন।
* শীতকালে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মৌসুমী ফল, শাক-সবজি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। কারণ ভিটামিন-সি ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
*ঠান্ডা লাগলে গলায়, বুকে, পিঠে সরিষার তেল হালকাভাবে মালিশ করলে এবং গরম সেঁক দিলে উপকার পাওয়া যায়। সরিষার তেল শরীর গরম রাখে, যা ঠান্ডা লাগার প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
* ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশুদের প্রতি যতœ নিতে হবে। শিশুকে ঠান্ডা হতে নিরাপদে রাখতে হবে।
*প্রতিদিনের খাবারে কাঁচা রসুন, লবঙ্গ ও আদা ব্যবহার করুন। কারণ উক্ত উপাদানগুলো ঠান্ডা লাগা ও কাশি কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী। আদা ও লবঙ্গের সমন্বয়ে প্রস্তুত হারবাল চা খুবই কার্যকর।
*শীতের সকালে-বিকালে নাক বন্ধ মনে হলে নাক দিয়ে গরম পানির ভাপ নিলে ভালো বোধ হয়। উপকার বেশি পেতে হলে গরম পানিতে কিছু ফিটকিরি বা মেনথোলের টুকরা দিয়ে ভাপ নিলে বন্ধ হওয়া নাক পরিস্কার হয়ে যাবে ।
* শীতে পানি খাওয়া কম হয়। ফলে শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দেয়। এজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করুন।
* শীতকালে পরিস্কার-পরিছন্ন থাকা বেশি প্রয়োজন। এ সময় ধুলাবালি ও রোগ-জীবাণুর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেয় ফলে অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। তাই অবশ্যই পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে।
* কিছু কিছু মানুষের শীতের তীব্রতায় হাতের আঙ্গুল নীল হয়ে যায়। তারা অবশ্যই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবেন যেন কোনোভাবেই ঠান্ডা না লাগে।
* যাদের অ্যালার্জি আছে তাদেরকে অবশ্যই ধুলোবালি, ফুলের রেণু ও ডাস্ট এড়িয়ে চলতে হবে, মুখে মাস্ক ব্যবহার করা, ঠান্ডা এড়িয়ে চলা, অ্যালার্জি তৈরি করে এমন বস্তু থেকে দূরে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ। তাই বিশ্ব নবী মোহাম্মদ (সা:) বলেছেন-পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক।

ষ ডা: মাও: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিষ্ট, মোবা:০১৭১৬২৭০১২০



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন