Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মেয়র নির্বাচন নিয়ে মাঠে লিটন সাথে স্ত্রী ও কন্যা

রাজশাহী সিটি নির্বাচনী হাওয়া-২

রেজাউল করিম রাজু : | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হাইকমান্ডের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে নির্বাচনী মাঠে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কেন্দ্রীয় নেতা এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। কেন্দ্র এবং স্থানীয়ভাবে দলের শুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার কারণে এমনিতে নগরজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছিলেন। ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি ছিল নির্বাচন ঘিরে। আগামী জুন মাসের মধ্যে সম্ভাব্য সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিষয়টি মাথায় নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন। আর এতে গতি লাভ করে বিগত রমজান ও ঈদকে ঘিরে। তার আশা ছিল মেয়র অথবা এমপি নির্বাচনের কোনো একটায় হাইকমান্ডের সবুজ সঙ্কেত পাবেন। আর এখন মেয়র হিসেবে নির্বাচন করার সবুজ সঙ্কেত মেলায় তার প্রচারণার গতি বাড়িয়েছেন। এখন সব অনুষ্ঠানে সামনে নিয়ে আসছেন সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের ব্যাপারটি। তার সময়কার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে ভুল করছেন না। নগরীতে ব্যানার-ফেস্টুনে শোভা পাচ্ছে মেয়র থাকাকালীন সময় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের সচিত্র ছবি। তার সাথে যেসব নেতা যাচ্ছেন তারাও বক্তব্যে আনছেন মেয়র নির্বাচনের বিষয়টি। আর এর মধ্য দিয়ে আগামী মেয়র নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে এটা বলা যায় নিঃসন্দেহে। প্রত্যেকটি সভা-সেমিনারে তার সময়কার উন্নয়ন কর্মকান্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরা হচ্ছে। আগামীতে সুযোগ পেলে কি করা হবে তার পরিকল্পনার কথা বলছেন। রাজশাহী মহানগরীকে সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তোলাই তার স্বপ্ন এমনটি বলছেন। যেমনটি শুরু করেছিলেন। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নগরবাসীর আশীর্বাদ কামনা করছেন। শুধু লিটন একা নন, তার সহধর্মিণী ও কন্যাও মাঠে তৎপর রয়েছেন। জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যদের ছয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে লিটনই রাজনীতির মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এর সাথে সঙ্গী করেছেন স্ত্রী শাহীনা আক্তার রেনী ও কন্যা অর্নাকে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান লিটন। এতে সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন সহধর্মিণী শাহীনা আক্তার রেনী। আর বড় কন্যা অনিক জামান অর্না। সেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেত্রী। স্থানীয় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সদর্প বিচরণ। এক কথায় পুরো পরিবার রাজনীতির মাঠে। কখনো কখনো তিনজনকেই মাঠে দেখা যায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে। গৃহবধূ শাহীনা আক্তার রেনী এখন নিজেকে সমাজসেবীর আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কম যাচ্ছে না কন্যা অর্নাও। এখন স্ত্রী তার স্বামীর তথা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আর কন্যা তার পিতার জন্য মাঠ চষে ফিরছেন। দিন যত যাবে প্রচারণার গতি আরো বাড়বে এটি নিশ্চিত করে বলা যায়। দল ক্ষমতায় আছে তার পুরো সুবিধা প্রচারণার কাজে লাগাতে ভুল করছেন না। বিগত নির্বাচনে বিশাল ভোটের ব্যবধানে পরাজয়ের বিদ্ধ কাঁটা এবার উপড়ে ফেলতে চান। মেয়র থাকার সময় নগরীর দৃশ্যমান বেশ কিছু উন্নয়ন করেছিলেন। পরিকল্পনাও ছিল অনেক। এর মধ্যে মরা পদ্মা তীরের কিছু অংশকে দৃষ্টিনন্দন করে তোলার মধ্য দিয়ে সবার নজর কাড়েন। সিটি কর্পোরেশনের জমিকে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে উন্নয়ন করে আয় বাড়ানোর তৎপরতা ছিল। দারুচিনি প্লাজা, সিটি সেন্টার, স্বপ্নচ‚ড়া, বৈশাখীসহ আইটি বহুতল ভবনের কাজ শুরু হয়। নগর ভবন সংলগ্ন স্বপ্নচূড়ায় সিটি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয় করার বেশ কিছু কাজ হয়। এ ভবন থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের কাজকর্ম শুরুর জন্য ঢাকা হতে টেলিভিশনের কর্মকর্তারা কয়েক দফা আসেন। এছাড়াও বেশ কিছু নতুন রাস্তার কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে নির্বাচনে তিনি ছিটকে পড়েন। স্থবিরতা দেখা দেয় তার সময়ে নেয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলোয়। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে শুরু করা ভবনগুলোর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এসব ভবন ঘিরে যেসব পরিকল্পনা ছিল তার অপমৃত্যু ঘটে। আজো এ ভবনগুলোর কাজ শেষ হয়নি। কোনোটি আবার পোড়ো বাড়ির রূপ নিয়েছে। নির্বাচনে পরাজয়ের পর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন আমি রাজশাহীর উন্নয়নে এত কিছু করলাম। তারপর কেন হারলাম? এর জবাব ছিল লিটন হারেনি, হেরেছে আওয়ামী লীগ। হেফাজতবিরোধী হাওয়ার বিরূপ প্রভাব পড়ে ব্যালট পেপারে। আর তার সাথে ছিল ঘরের শত্রæ বিভীষণের মতো নিজ দলের মধ্যে থাকা লিটনবিরোধী একটি গ্রæপ। সে সময় নির্বাচন সংক্রান্ত দৈনিক ইনকিলাব রিপোর্ট ও জরিপে আগেই বলা হয়েছিল। ফলাফলেও তা দেখা যায়। এবার অবশ্য পরিস্থিতি ভিন্ন। দলের প্রতীকও হবে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা। আর অবশ্যম্ভাবীভাবে নির্বাচন লড়াইটা হবে ধানের শীষের সাথে। আর সম্ভাব্য প্রতিদ্ব›দ্বীও থাকবেন বিএনপি ধানের শীষ নিয়ে বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। আর তাই এবারের মেয়র নির্বাচনটা হবে ভিন্ন মাত্রার। আর ভুল নয়, মেয়রের আসনটি এবার আওয়ামী লীগ তাদের ঘরে রাখতে চায়। তাছাড়া এ নির্বাচনের ফলাফল প্রভাব ফেলবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। আর সেই নির্বাচনেরও খুব বেশি দেরি নেই।



 

Show all comments
  • আরাফাত ২০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১:৩৪ এএম says : 0
    সুষ্ঠ নির্বাচন কী আশা করতে পারি ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ