পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মেঘনা বেষ্টিত নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তৎপর রয়েছেন। মেঘনার অব্যাহত ভাঙনের শিকার এখানকার অধিকাংশ পরিবার। এক সময়কার ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি পথের ভিখারিতে পরিণত হওয়ার অসংখ্য নজির রয়েছে। হাতিয়া আসনে প্রধান সমস্যা হচ্ছে নদীভাঙন। ভাঙন রোধে স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি সরকারি উদ্যোগে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ফলে হাতিয়া উপজেলার মূল ভূখন্ড ক্রমান্বয়ে সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। হাতিয়া নদীভাঙন রোধকল্পে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে একটি প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, অদ্যাবধি একনেকে ওই প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়নি। হাতিয়া মূল ভূখন্ডের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নদীপথ। আবার তাও প্রকৃতির দয়ার উপর নির্ভরশীল। এককথায় নদীভাঙন রোধসহ সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে হাতিয়াবাসীর দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হবে। এসব বিষয় বিশ্লেষণ করলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হাতিয়াবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাতিয়া আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমান এমপি আয়েশা ফেরদৌস, তিনবার নির্বাচিত সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী, শিল্পপতি মাহমুদ আলী রাতুল এবং ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম। বিএনপি : হাতিয়া উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মো. আলাউদ্দিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী : হাতিয়া আসন থেকে তিনবার নির্বাচিত এমপি প্রকৌশলী ফজলুল আজিম।
আয়েশা ফেরদৌস : সদালাপী ও সাদাসিধে গৃহবধূ থেকে বিগত নির্বাচনে বৃহত্তর নোয়াখালীর একমাত্র হাতিয়া আসনে ভোটারের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত আয়ামী লীগ প্রার্থী আয়েশা ফেরদৌস। হাতিয়া আসন থেকে তিনবার নির্বাচিত আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলীর সহধর্মিণী আয়েশা ফেরদৌস তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি জনপদে বিচরণ করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা বিপদ-আপদে তাকে সর্বপ্রথম প্রথম দেখা যায়। নদীভাঙন ও বিদ্যুৎ সমস্যা সম্পর্কে তিনি জানান, হাতিয়ার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আমি বেশ কয়েকবার জাতীয় সংসদে বক্তব্য রেখেছি। তন্মধ্যে হাতিয়া নলচিরা, হরণী ও চানন্দী ইউনিয়নে নদীভাঙন রোধকল্পে একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। দ্বিতীয় সমস্যা হচ্ছে বিদ্যুৎ। ইতোমধ্যে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর হাতিয়ায় পৌঁছেছে। অচিরেই বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, হাতিয়ার ছয় লক্ষাধিক অধিবাসীর সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা বেশ সচেতন। যার ধারাবাহিকতায় হাতিয়ায় উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। হাতিয়ার মাটিতে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির স্থান নেই। আমি সে লক্ষেই কাজ করছি।
মোহাম্মদ আলী : হাতিয়া আসন থেকে তিনবার নির্বাচিত সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী ভোটের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে অবস্থান করছেন। দলীয় সাইনবোর্ড ব্যতীত বর্তমানে অনেকের জামানত না থাকলেও সেক্ষেত্রে হাতিয়া আসনে মোহাম্মদ আলীর প্রচুর রিজার্ভ ভোট রয়েছে। বিগত দিনের জাতীয় নির্বাচনে সেটা একাধিকবার প্রমাণিত হয়েছে। আগামী নির্বাচনে তার স্ত্রী ও বর্তমান এমপি আয়েশা ফেরদৌসের পাশাপাশি তিনিও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।
মাহমুদ আলী রাতুল : শিল্পপতি মাহমুদ আলী রাতুল হাতিয়া আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। রাজনীতিতে নবাগত হলেও ইতোমধ্যে তিনি দুইবার হাতিয়া সফর করেন। এ সময় তার সমর্থক ও এলাকার লোকজনের সাথে যোগাযোগ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ইনকিলাবকে জানান, আমার জন্মস্থান হাতিয়া উপজেলায়। দলীয় মনোনয়ন পেলে আমি হাতিয়াবাসীর সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাব।
আমিরুল ইসলাম : ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এবং বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বিগত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হরিণ প্রতীকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। নির্বাচনে তার প্রাপ্ত ভোট ৩১ হাজার ৯৪০। আাগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী কর্মী। অবহেলিত হাতিয়াবাসীর সমস্যা সমাধানকল্পে আমি আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। এলাকার জনগণ আমার সাথে আছে। দলীয় মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমি জয়লাভ করব।
মো. আলাউদ্দিন (বিএনপি) : হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মো. আলাউদ্দিন আাগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রার্থী। হাতিয়ায় বিএনপি দলীয় কর্মকান্ডে তার উপস্থিতি লক্ষণীয়। হাতিয়া উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও প্রতিটি ওয়ার্ডে বিএনপি কমিটি গঠিত হয়েছে। একসময় স্থানীয় বিএনপি নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়লেও বর্তমানে অনেকটা শক্তিশালী বলে কয়েকজন কর্মী জানান। তারা আরো বলেন, হাতিয়ায় ধানের শীষের অসংখ্য ভোটার রয়েছে। এখন প্রয়োজন মাঠপর্যায়ে ভোটারদের সংগঠিত করা। অপরদিকে হাতিয়া বিএনপি সভাপতি মো. আলাউদ্দিন বলেন, হাতিয়া আসনে বিএনপি একটি সংগঠিত দল। বিএনপির দুর্দিনে আমি নেতৃত্বের হাল ধরেছি। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে আসনটিতে ধানের শীষ প্রার্থী জয়লাভ করবে।
প্রকৌশলী ফজলুল আজিম : প্রকৌশলী ফজলুল আজিম হাতিয়া আসন থেকে তিনবার নির্বাচিত এমপি। ওয়ান ইলেভেনে সংস্কারপন্থী আখ্যা দিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। বিএনপি টিকিটে দুইবার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার সুবাদে প্রকৌশলী ফজলুল আজিম এলাকায় অনেক কাজ করেন। অপরদিকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির দুর্বল প্রার্থিতার কারণে দলীয় নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রকৌশলী ফজলুল আজিমের পক্ষে কাজ করেন। উপজেলা বিএনপির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ প্রকৌশলী ফজলুল আজিমকে বিএনপিতে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে দারুণ আশাবাদী। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকৌশলী ফজলুল আজিম বলেন, আমি হতিয়াবাসীর সাথে আছি। এলাকার উন্নয়নে আমি নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চাই। বিগত দিনে আমার উদ্যোগে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। শিল্পপতি ও প্রকৌশলী ফজলুল আজিম তার পেশাগত কারণে ব্যস্ত থাকলেও এলাকার জনগণের সাথে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। অর্থাৎ আগামী নির্বাচনে প্রকৌশলী ফজলুল আজিম একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।