Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনতার কাতারে আজীবন

এখন কে আর ডাকবে ‘আইয়ূন যে....

শফিউল আলম : | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পরনে সাদা পাজামা পাঞ্জাবি কালো মুজিব কোট। মাথায় সাদা টুপি। সাদা-কালো দাঁড়ি। উজ্জ্বল মুখভরা হাসি আর কৌতুক মিশিয়ে বলছেন- ‘আইয়ূন যে। বইয়ূন যে। আঁর লঅয় বই ভাত ন খাই উডিত পাইত্তান নঅ। (জী আসুন। বসুন। আমার সাথে বসে ভাত না খেয়ে কিন্তু উঠতে পারবেন না)’। ষোলশহর ২নং গেইট মেয়র গলি চশমা হিলের উঁচুনিচু রাস্তাটি পেরিয়ে দিনরাত অগুণতি মানুষের আসা-যাওয়া। এ ঠিকানা জানেন না এমন কেউ সম্ভবত চট্টগ্রামে নেই। সোজা সেই নেতার বাড়িতে। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। চট্টগ্রামের গন্ডি ছাড়িয়ে সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে চেনা-পরিচিত নাম। সেই তিনি গত ১৫ ডিসেম্বর ভোররাতে সকল মায়া ছিন্ন করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন। চট্টগ্রাম হারিয়েছে সত্যিকারের অভিভাবক, বান্ধব। থেমে গেছে আজীবন রাজনৈতিক যোদ্ধার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। চাটগাঁবাসীই বলছেন, তার শূণ্যতা অপূরণীয়। শোকের রেশ চট্টগ্রামের সর্বত্র।
এগিয়ে এসে সাদরে হাত বাড়িয়ে এখন কে আর ডাকবে, ‘আইয়ূন যে...’! তিনি নিজেও আর মেহমান হবেন না। গরীব-দুঃস্থ দিনমজুর এমনকি সিটি কর্পোরেশনের সুইপারের (তিনিই নাম পরিবর্তন করেন ‘সেবক’) সন্তান থেকে শুরু করে কোটিপতি পরিবারের বিয়েতে দাওয়াত পেয়েই হাজির হয়ে দু’চারটা ভাত মুখে তুলে নবদম্পতিকে মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া-আশীর্বাদ করবেন না আর তিনি! লাশ নিজহাতে কাফন-দাফন ও জানাজায় দেখা মিলবে না। গত শুক্রবার তারই নামাজে জানাযা হলো লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে। যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি গণমানুষের দাবি-দাওয়া আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামের দীর্ঘ পথচলায় বহুবার বহু কর্মসূচি ঘোষণা করতেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এই বীর মুক্তিযোদ্ধা হুঙ্কার দিতেন বাঘের গর্জনে। জনতার ভালোবাসায় উপাধি পেয়েছেন ‘চট্টল বীর’।
দৈনিক ইনকিলাবের এই প্রতিবেদকসহ চট্টগ্রাম ও ঢাকার তার চেনাজানা সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময়েই এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কাছে জানতে চেয়েছেন, তাকে কয়েকবার মন্ত্রী হওয়ার জন্য অফার দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় নেতা হতে ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু কেন তা গ্রহণ করলেন না? কী চান তিনি? জবাবে আদতে এ কথার গুরুত্ব না দিয়ে শুধুই বলতে শুনেছি, “আমি চট্টগ্রামবাসীর সুখে-দুঃখে আছি। চট্টগ্রামের উন্নয়নে ও অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে আজীবন আছি। চট্টগ্রামের স্বার্থের প্রশ্নে আপোসহীন। যেখানে যখন কোনো অন্যায়-জুলুম হয় আমি চুপ করে ঘরে বসে থাকতে পারিনা। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। আজীবন তাই করে যাবো। আমি মহিউদ্দিন চৌধুরী মন্ত্রিত্বের ধার ধারি না। কেন্দ্রীয় নেতাও হতে চাই না। এসব পদ-পদবী নিয়ে আমার কোনো মোহ নেই, মাথাব্যাথাও নেই”। এইটুকু বলে মুখে সেই অমলিন পরিচিত হাসি আর কৌতুক ফুটিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলে চলে যেতেন আরেক কোনো প্রসঙ্গে।
এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে। এর আগে সাধারণ সম্পাদক। তিনি ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৯ সাল অবধি পর পর তিন দফায় নির্বাচিত হয়ে টানা ১৭ বছর চট্টগ্রাম সিটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবেই নিজের পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন। চট্টগ্রামে দলীয় শীর্ষপদে আসীন ছিলেন দীর্ঘকাল। কিন্তু আওয়ামী লীগের দলীয় পদ-পরিচয় ও পরিসর ছাড়িয়ে গিয়ে তিনি সকল দলের, মতাদর্শের, ধর্ম-বর্ণের মানুষকে উদারভাবেই কাছে টেনে নিতে দেখা গেছে। এক্ষেত্রে অসাধারণ এক সম্মোহনী শক্তি ছিল তার। ছিল নাটকীয়তার শত নজির। তার চশমা হিলের বাড়ির দরজা সবার জন্যই ছিল খোলা। বাস্তবিক অর্থেই চট্টগ্রামের অভিভাবক বলেই কী? মাত্র কয়েক মাস আগেও চট্টগ্রামে এক সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মঞ্চে উপবিষ্ট মহিউদ্দিন চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘আপনি আমারও নেতা। আমাদের অভিভাবক’। ভিন্ন দলের নেতাদের মুখেও তা বলতে শোনা গেছে।
চশমা হিলের মেয়র বাড়িতে মেজ্জানে (মেজবান) আপ্যায়িত কিংবা মেহমান হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। চাটগাঁর এমনকি দেশের নানা প্রান্তের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের। নিজ দলের নেতা-কর্মী-সমর্থক তো বটেই, ভিন্ন দলের নেতা-মন্ত্রী-এমপি-কর্মীরাও ছুটে গেছেন তার কাছে। বুকে জড়িয়ে নিতেন আপনজনের মতো করে। নিজ দল এবং অন্যসব দলমতের মানুষের কাছে শুধুই গ্রহণযোগ্যতাই নয়; সমভাবেই শ্রদ্ধা-সম্মানের পাত্র ছিলেন তিনি। এভাবেই মহিউদ্দিন চৌধুরী মাটির মায়ায় একান্ত মাঠের নেতা হিসেবেই আজীবন জনতার কাতারে শামিল থেকেছেন। ‘দলবাজি’র ঊর্ধ্বে থেকে জননেতা হিসেবে জনসাধারণের হৃদয়ের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন আজ এমনটি বলছেন চট্টগ্রামবাসীই।
এদেশের বিজ্ঞজন, আলেম-মাশায়েখ, পীরে কামেল ও বিদ্বান ব্যক্তিদের তিনি অকুণ্ঠ সম্মান প্রদান করে গেছেন। সর্বজনশ্রদ্ধেয় আলেমেদ্বীন সাবেক ধর্ম, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী, দৈনিক ইনকিলাব ও মসজিদে গাউছুল আজমের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সাবেক সভাপতি মরহুম হযরত মাওলানা এমএ মান্নান (রহঃ)-কে তিনি গভীর সম্মান করতেন এবং তার অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। মরহুম এমএ মান্নান মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর দলমত নির্বিশেষে গণমুখী ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম এবং ইসলামী শিক্ষা ও আদর্শকে বিকশিত করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভূমিকার প্রশংসা করে গেছেন। আবার মহিউদ্দিন চৌধুরীকে বিভিন্ন সময়েই বলতে শুনেছি, “আমাদের দেশে মাওলানা এমএ মান্নানের (রহঃ) মতো বিচক্ষণ, জ্ঞানী-গুণী ও বিশ্বমানের আলেম-ওলামা যদি আরও থাকতেন তাহলে দেশ ও জাতি অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারতো। আলেম সমাজকে একতাবদ্ধ করতে পেরেছেন মাওলানা এমএ মান্নান। তাঁর ছেলেরও সেই গুণ রয়েছে”। দৈনিক ইনকিলাবের মাননীয় সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন-এর সাথে তার ছিল আজীবন আন্তরিকতাপূর্ণ যোগাযোগ ও সুসম্পর্ক। ইনকিলাব সম্পাদক চশমা হিলে মেয়রের বাড়িতে আপ্যায়িতও হন বিভিন্ন সময়ে। মহিউদ্দিন চৌধুরী গত ১১ নভেম্বর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার মাত্র কয়েকদিন আগে (৭ ও ৮ নভেম্বর) এই প্রতিবেদকের সঙ্গে তার সর্বশেষ আলাপচারিতা হয়েছিল। এ সময় তিনি ইনকিলাব সম্পাদকের কুশলাদি যথারীতি জানতে চান। ইনকিলাব সম্পাদক নিজেও মহিউদ্দিন চৌধুরীর সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা এবং সত্যিকারের একজন পপুলার জননেতা হিসেবে তার নেতৃত্বগুণের বিষয়টির দৃষ্টান্ত তুলে ধরতেন। তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর রাখতেন। এছাড়াও দেশের প্রথিতযশা সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে তার ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ। বহির্বিশ্বের সাংবাদিকরা চট্টগ্রামে এসে তার সাক্ষাৎ পেয়ে মুগ্ধ হয়ে ফিরতেন। এরফলে আজীবন সাংবাদিক-বান্ধব হিসেবেই তিনি প্রশংসা পান।
দেশে একসময় শুধু সরকারীভাবেই হজে গমনের নিয়ম প্রচলিত ছিল। সরকারী নানামুখী অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদী হন। এরফলেই বেসরকারী হজ কাফেলার অনুমতি দেওয়া হয়। তার নেতৃত্বে গঠিত হয় দেশের প্রথম বেসরকারী ‘মেয়র হজ কাফেলা’। ইসলামী আদর্শের প্রচার-প্রসার, সুন্নীয়াতের ধারাকে বিকশিত করা, মসজিদ এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে সেবাপ্রদান, মসজিদের মুয়াজ্জিনদের মাধ্যমে সড়কবাতি নিভানো ও এরজন্য তাদেরকে ভাতা প্রদান, মসজিদ স্থাপন ও উন্নয়ন, মাদরাসা-মক্তবে শিক্ষার মানোন্নয়ন, ইসলামী জ্ঞানের চর্চা ও প্রতিযোগিতা ইত্যাদি বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি ইসলামের বহুমুখী খেদমত করে গেছেন। সিটি মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে ‘প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম’ প্রতিষ্ঠা করে উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করেন। চট্টগ্রাম মহানগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা, যোগাযোগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে তিনি অনন্য সাফল্য অর্জন করেন।
আওয়ামী লীগের সিনিয়র একজন নেতা ও মেয়রের পদে থেকেও তিনি বিচিত্র-ব্যতিক্রমী আচরণ দিয়ে সমগ্র দেশে দলীয় গন্ডির বাইরে নিজের জন্য একটি উচ্চ এবং বিরল সম্মানের স্থান করে নেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পার্বত্য শান্তিচুক্তির বিরুদ্ধে বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী জোটের পার্বত্য চট্টগ্রাম অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পালনকালে তিনি লাখো মিছিলকারীর জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী তখন মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র। তিনি মেয়র হিসেবে প্রতিবারই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যেতেন প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানাতে। এ সময় দলীয় কতিপয় নেতা-কর্মীর কারণে তাকে বিড়ম্বনা পোহাতে হতো এমনটি তিনি সাংবাদিকদের জানান। তা সত্তে¡ও হাল ছাড়েননি। একবার ঘটে যায় ‘সবুরে মেওয়া ফলে’র মতো ব্যাপার। নগরীর মোহরায় চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি শোধনাগার প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির বেশক’জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও নেতা ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাশে মঞ্চে আসীন। আর মেয়র মহিউদ্দিন ছিলেন সামনের চেয়ারে। খালেদা জিয়া নিজেই মেয়রকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান। ভাষণে তিনি চট্টগ্রাম মহানগরীকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, সড়ক রাস্তাঘাট উন্নত রাখাসহ মেয়রের সফলতার ভূয়সী প্রশংসা করে চট্টগ্রামের নেতা-মন্ত্রী-এমপিদের তার কাজকে অনুসরণের পরামর্শ দেন। ২০১৫ সালে বেগম জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত গায়েবানা জানাজায় তিনি গিয়ে শামিল হন। আর মহিউদ্দিন চৌধুরীর জানাজায়ও দেখা গেছে, নিজ দলের বাইরেও অন্যান্য দল, সাধারণ জনতার ব্যাপক স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ।
দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে মহিউদ্দিন চৌধুরী কখনও ভিখারীর বেশে, কখনও টংঘরে চা বিক্রেতা, ফেরিওয়ালা থেকে শুরু করে কঠিনতম ফেরারী জীবন অতিবাহিত করেন। কারাবরণ করেন অনেকবার। বিভিন্ন দলের কারাবন্দীদের চিকিৎসা ও সেবা, নামাজ ও কোরআন শিক্ষাদান করে তিনি তাক লাগান। হজে গিয়েও হাজীদের সেবা প্রদান করেন অনেকবার। তার নেতৃত্বেই চট্টগ্রাম থেকে শুরু হওয়া ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা’ সমগ্র দেশে আজ উদযাপিত হচ্ছে। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের ভেসে থাকা সারি সারি লাশ কর্মীদের নিয়ে নিজ হাতে দাফন-কাফন করান। নিজ দলের সরকারের আমলে আমেরিকার এসএসএ নামক কোম্পানি ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের মোহনায় পোর্ট নির্মাণের উদ্যোগের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলেন। এমনকি সর্বোচ্চ আদালতে গিয়ে আইনী লড়াই করেন। ফলে শেষ পর্যন্ত তা ভÐুল হয়ে যায়। এ বছর নগরীতে চসিকের হোল্ডিং ট্যাক্স (গৃহকর) পূর্বের হারে বহাল রাখার দাবিতে গড়ে তোলা আন্দোলনটি ছিল জীবনের সর্বশেষ সাফল্য। তার নেতৃত্বে আন্দোলনে এ ধরনের সাফল্য আসে অনেকবার। এভাবে তিলে তিলে হয়ে উঠেছিলেন জনতার নেতা।
৭৩ বছর বয়সী চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়বেটিস ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ১১ নভেম্বর তিনি চশমাহিলের বাসায় হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার তেমন উন্নতি না হওয়ায় ১২ নভেম্বর তাকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কিছুটা উন্নতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ১৫ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার ঠিক এক মাস পর তিনি পুনরায় দেশে ফিরে আসেন। সবার প্রত্যাশা ছিল চট্টল বীর ফের বীরদর্পে জনতার দাবি আদায়ে সরব হবেন। তিনি চট্টগ্রামের মাটিতে ঠিকই ফিরলেন। তবে চট্টগ্রামবাসীর কাঁধে লাশ হয়ে। মাঠে-ময়দানে আওয়াজ আর শোনা যাবে নাÑ ‘আমি মহিউদ্দিন চৌধুরীর জীবন থাকতে অন্যায় মেনে নেব না! মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলবো!’
আমাদের কাছে মজা করে মহিউদ্দিন চৌধুরী মাঝেমধ্যে বলতেন তার প্রিয় গানের কথাগুলোÑ “তারে বলে দিও, সে যেন আসে না আমার দ্বারে, তারে বলে দিও”! আর কখনও আসবেন না বিরল গুণের অধিকারী কিংবদন্তীতূল্য জনতার নেতা জনতার দ্বারে।



 

Show all comments
  • তাজরিয়া ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১:২৬ এএম says : 0
    এমন নেতা হয়ত আমরা আর পাবো না
    Total Reply(0) Reply
  • Jasimuddin Khan ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১:৩৬ এএম says : 1
    মহিউদ্দিন চৌধুরী একেবারে মাটি থেকে উঠে আসা নেতা। তিনি ছিলেন জনতার নেতা। চট্টগ্রাম এর প্রতি তার অনেক ভালবাসা ছিল। তাঁর মতো নেতার অভাব বলেই আজ রাজনীতি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Wasim Haque ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৩:০৯ এএম says : 1
    মহিউদ্দীন চৌধুরীর মতো এমন জননেতা বিরল। আল্লাহ তাঁকে বেহেশত নসীব করুন। আমীন।
    Total Reply(0) Reply
  • সোহেল আজম খান ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৩:২২ এএম says : 1
    সারাজীবন তিনি জনতার কাতারে ছিলেন। লাখ লাখ মানুষের জানাজার পর তিনি চিরবিদায় নিলেন।
    Total Reply(0) Reply
  • তাজুল ইসলাম ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১০:১০ এএম says : 2
    গণমানুষের দরদী নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী সম্পর্কে অনেক কিছুই জানলাম। ইনকিলাব কে ধন্যবাদ। আমাদের দেশের নেতাদের তার কাছে অনেক কিছু শিখার আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shahzaman ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:১২ পিএম says : 1
    Khan A good leader.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ