পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জিজ্ঞাসাবাদের নামে বলতে বাধ্য করা হয় যে, আমি বিনোদনের জন্য বেরিয়েছি। সাদা পোশাকের কিছু লোক র্যাবের কাছ থেকে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। অপহরণকারীরা তাঁকে খুলনা-যশোর সীমান্তের দিক দিয়ে সীমান্তের ওপারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। গতকাল শনিবার রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার।
গুম করার উদ্দেশ্যে তাকে ধরে নেয়া হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেছেন, সেখান থেকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জোরাল ভূমিকা রেখেছে, তবে পরে চাপ দিয়ে ও মারধর করে তার কাছ থেকে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। ওষুধ কেনার জন্য নিচে নেমে অপহরণের স্বীকার হন দাবি করে তিনি বলেন, তিনজন লোক আমাকে ঘিরে একটি সাদা মাইক্রোবাসে জোর করে তুলেই আমার চোখ বন্ধ করে ফেলে। সে সময় আমি আমার স্ত্রীকে ফোন করতে পারি। এরপর বাঁচার জন্য টেলিফোন করা, টাকা পাঠানোসহ যা কিছু অপহরণকারীরা করতে বলে-তাই আমি করি। যেখানে তারা ছেড়ে দেয় তা আমি চিনি না। আমি বুঝতে পারি তারা আমার ওপর নজরদারি করছে। তাদের নির্দেশমতো সন্ধ্যায় হানিফ পরিবহনের গাড়িতে উঠলে গাড়িতে তাঁরা আমাকে বাসের পেছনে বসিয়ে দেয়। আমি মৃত্যুভয়ে ভীত হয়ে পড়ি। শোরগোল শুনে জেগে উঠি। এর পর কিছু সাদা পোশাকের লোক জোর করে আমাকে আবার নামিয়ে আনার েেচষ্টা করে। ফরহাদ মজহার দাবি করেন, হত্যা করার জন্য বাস থেকে নামানো হচ্ছে েেভবে তিনি এ সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সাদা পোশাকের কিছু লোক র্যাবের দিকে বন্দুক তুলে শাসিয়ে আমাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রচন্ড তর্কাতর্কি হয়। তবে র্যাব রীতিমতো ছোটখাট যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে আমাকে তাঁদের গাড়িতে ওঠায়। কিন্তু সাদা পোশাকের লোকগুলো র্যাবের গাড়ি থেকে আমাকে নামানোর চেষ্টা করে। তিনি আরো বলেন যে, অপহরণকারীরা তখনো এলাকায় থাকতে পারে ভেবে র্যাব তাঁকে খুলনায় নিয়ে চিকিৎসা-বিশ্রামের পাশাপাশি তদন্ত করতে চেয়েছিল। কিন্তুকে বা কারা র্যাবের গাড়ির দুই দিকের রাস্তায় ট্রাক থামিয়ে পথরোধ করে রেখেছিল। পরে র্যাবের গাড়িসহ তাঁকে এক জায়গায় নিয়ে বলা হয় সেটি অভয়নগর থানা। পুলিশের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করে ফরহাদ মজহার বলেছেন, আমি ভিকটিম হওয়া সত্তে¡ও আমাকে জোর করে র্যাবের গাড়ি থেকে নামানো হয়। আমার সঙ্গে প্রচন্ড দুর্ব্যবহার করে। জিজ্ঞাসাবাদের নামে বলতে বাধ্য করা হয় যে, আমি বিনোদনের জন্য বেরিয়েছি। একটি গাড়িতে আমাকে নিয়ে উচ্চস্বরে গান গাইতে গাইতে পুলিশ ঢাকার দিকে রওনা হয়। তিনি বলেন, আমি জীবিত ফিরে আসায় আমাকে সামাজিকভাবে হেনস্তা করে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমি সারা জীবন মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেছি। বাংলাদেশে গুমের এ সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে, সকল মান-অপমান সহ্য করে হলেও বাংলাদেশে এ যাবৎ গুম হয়ে যাওয়া মানুষ যেন তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসতে পারে সে ক্ষেত্রে আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে। গত ৩ জুলাই ভোরে বাসার কাছ থেকে অপহরণের হওয়ার অভিযোগ ও এর ১৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার হওয়া, এরপর অপহরণ মামলায় পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার পরও গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি ফরহাদ মজহার। পুলিশ বলছে, ফরহাদ মজহার অপহরণ হননি, তিনি স্বেচ্ছায় খুলনা গিয়েছিলেন। ফরহাদ মজহারের পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, গত ৩ জুলাই ভোর পাঁচটার দিকে শ্যামলীর হক গার্ডেনের বাসা থেকে বের হন ফরহাদ মজহার। ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ভোর ৫টা ৫ মিনিটে ফরহাদ মজহার খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামেন। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফরহাদ মজহার স্ত্রী ফরিদা আখতারকে ফোন করে বলেন, ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। এ ঘটনায় রাজধানীর আদাবর থানায় ফরহাদ মজহারের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন। সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের অভয়নগর এলাকায় খুলনা থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর প্রথমে ফরহাদ মজহারকে খুলনায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে সেখান থেকে সকাল পৌনে নয়টার দিকে তাঁকে ঢাকার আদাবর থানায় আনা হয়। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে, সেখান থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভিকটিম হিসেবে সেদিন তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাঁকে নিজের জিম্মায় দেন আদালত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।