Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বুড়িচংয়ে গ্রামীণ সড়কে খানাখন্দ, চলাচল অযোগ্য

| প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আলমগীর হোসেন, বুড়িচং (কুমিল্লা) থেকে : কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সড়কগুলোর কার্পেটিং-পলেস্তরা উঠে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন ও সাধারণ মানুষ চলাচলের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জনসাধারণ যানবাহনে চলাচল করতে গিয়ে বিভিন্ন দূর্ঘটনায় শিকার হচ্ছে।
সরেজমিন এলাকা ঘুরে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনসাধারণের চলাচলের প্রায় সকল গ্রামের পাকা সড়কগুলোর কার্পেটিং, পিচ এবং কংক্রিট উঠে গিয়ে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর যে সমস্ত রাস্তা কাঁচা সেগুলোর অবস্থা আরো নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
রাস্তা গুলো হলো- চড়ানল-লড়িবাগ-বারেশ্বর মাদ্রাসা রাস্তা, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নগড়পাড়-বারেশ্বর- সাহেবাবাদ বাজার সংযোগ রাস্তা। ওই সমস্ত গ্রামীণ রাস্তা গুলো দিয়ে প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী গ্রাম বারেশ্বর, লড়িবাগ, চড়ানল, পূর্ণমতি, টাকই, জিরুইন, ভরভাঙ্গাইন্না ও সাহেবাবাদ গ্রামের ছাত্র/ছাত্রীরা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মোশারফ হোসেন খান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ব্রাহ্মণপাড়া ভগবান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, সাহেবাবাদ ডিগ্রী কলেজ, সাহেবাবাদ লতিফা ইসলাইল উচ্চ বিদ্যালয়, সাহেবাবাদ ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসা, বারেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়, বারেশ্বর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারেশ্বর সাইয়্যেদ লোদীশাহ একাডেমী, বারেশ্বর মাদ্রাসা, লড়িবাগ উচ্চ বিদ্যালয় ও লড়িবাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়, চড়ানল মাদ্রাসা ও চড়ানল প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাচোঁড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে রাস্তার মাটি ক্ষয়ে যাওয়ায় জনগণকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অথচ উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে জানা যায় সরকার রাস্তা ঘাট নির্মাণে প্রাইয়োরিটি বেসিস কাজ করছে।
জানা যায়- এক শ্রেণির অসাধু বালু ও মাটি ব্যবসায়ীরা গোমতি নদীর চর থেকে মাটি এনে বিভিন্ন সড়ক দিয়ে দৈনিক ২-৩ শত ট্রাক্টরে মাটি-বালি ভরাট করে সড়কের উপর দিয়ে আসা যাওয়ার ফলে সড়কগুলো আরও বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এতে করে ওই সড়ক গুলো দিয়ে যানবাহন নিয়ে এলাকার জনসাধারণ চলাচল করতে পারছেনা। প্রায় সময় যাত্রী বাহী যানবাহন গুলো চলাচলের সময় সড়ক থেকে ছিটকে কিংবা উল্টিয়ে সড়কের পাশে পড়ে গিয়ে দূর্ঘটনার শিকার হয়। এতে করে প্রায় সময় জনসাধারন মারাত্মকভাবে আহত ও প্রাণহানির মত ঘটনাও অহরহ ঘটে চলেছে।
এর মধ্যে বুড়িচং উপজেলার উল্লেখযোগ্য ক্ষতিগ্রস্ত আরো সড়ক ও রাস্তাগুলো হলো-বুড়িচং- গোবিন্দপুর-রামপুর পোস্ট অফিস সড়ক- গোবিন্দপুর বাজার গোমতী প্রতিরক্ষা বাধ- কোমাল্লা সড়ক, বুড়িচং-আরাগ আনন্দ পুর- সাদকপুর, সাদকপুর- পীরযাত্রাপুর-গোবিন্দপুর সড়ক, সাদকপুর-মালাপাড়া-কংশনগর, বুড়িচং- জগতপুর ঈদগা- পূর্ণমতি সড়ক। এছাড়া ষোলনল ইউনিয়নের প্রায় সড়কে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা চলে আসছে বলে জানান ওই এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মো. মো. সিরাজুল ইসলাম জানান ওই ইউনিয়নের ভরাসার বাজার-ষোলনল-বাবুর বাজার, শিমাইলখাড়া-সোনাইসার-পূর্বহুরা, কাহেতরা-পূর্বহুরা সড়কের নাজুক অবস্থা। বাকশীমূল ইউনিয়নের সীমান্ত অঞ্চলের প্রায় ১০-১২টি সড়কের অবস্থাও একেবারে করুণ। এর মধ্যে কালিকাপুর-শ্রীমন্তপুর, কালিকাপুর-আনন্দপুর, ফকিরবাজার পাহাড়পুর এলাকার কয়েটি সড়কের অবস্থা বেহাল দশা। বাকশীমূল ইউনিয়নের ফকিরবাজার-আনন্দপুর- শ্রীপুর সড়ক ও ধর্মনগর- জামতলা- আজ্ঞাপুর এবং ছিনাইয়া ও কোঁদালিয়া সড়কের বেহাল দশা। মোকাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুন্সী জানান- ওই ইউনিয়নের সড়কগুলোর বেশির ভাগই একেবারে ভগ্ন দশায় পরিণত হয়ে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কগুলো হলো- নিমসার -কেদারপুর-বরুড়া সড়ক, নিমসার- ভারেল্লা-কংশনগর সড়ক, কোরপাই- আবিদপুর -ভারেল্লা সড়ক, কোরপাই-পিওর -চান্দিনা-বড়কুট-পরিহলপাড়া সড়ক, পরিহল পাড়া- রোপদ্দি- পাঁচকিত্তা সড়ক, কাবিলা বাজার-বাড়াইর সড়ক, মোকাম গ্রামের দক্ষিনাংশের দেড় কি:মি: সড়ক, মাধবপুর-নিমসার-শ্যামপুর বড় বাড়ী পর্যন্ত, কোরপাই-মিথলমা-আবিদপুর সড়ক পর্যন্ত। ময়নামতি ইউপির চেয়ারম্যান মো. লালন হায়দার জানান- ওই ইউনিয়নের কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের দেবপুর-জিয়াপুর- চান্দসার, দেবপুর-কাছারীতলা-চান্দসার হাই স্কুল সড়ক, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার সড়ক- সিন্দুরীয়াপাড়া, নাজিরাবাজার-নারায়নসার-করিমাবাদ, কালাচকুয়া-করিমাবাদ সড়ক, হরিণধরা-দেবপুর সড়ক, চান্দসার-কাবিলা সড়ক, ময়নামতি সাহেব বাজার-সমেষপুর-সিন্দুরিয়াপাড়া সড়ক, ফরিজপুর-মিরপুর সড়কের বেহাল দশায় জনগণ ও যান বাহন চলাচলে ব্যাপক অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। বুড়িচং সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাবেদ কাউছার সবুজ জানান, ওই ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের বিভিন্ন সড়ক, বিজয়পাড়া-জরইন সড়ক, পূর্ণমতি গ্রামের বিভিন্ন সড়ক সহ অন্যান্য রাস্তা ও সড়কগুলোর কাজ অচিরেই সম্পন্ন করা দরকার। ভারেল্লা ইউনিয়নের পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ সড়ক-কুসুমপুর-রামচন্দ্রপুর সড়ক-হাসনাবাদ সড়ক, রামপুর বিচারপতি মমতাজ উদ্দীন আহম্মেদ সড়ক-শোভারামপুর-ভারেল্লা সড়ক, রামপুর পোস্ট অফিস-ভারেল্লা সড়ক, ভারেল্লা-নারাচুর সড়কসহ গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন সড়ক জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী জিহান আল তুহিন জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গ্রামীণ সড়কগুলোর অধিকাংশ সংস্কার এবং অনেক নতুন সড়কের নির্মাণ কাজ আমরা সম্পন্ন করেছি। পর্যায়ক্রমে বাকী যে সড়কগুলো বেহাল অবস্থা রয়েছে সেগুলোর কাজ ও আমরা সম্পন্ন করবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রামীণ

২৯ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ