Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতি : পুলিশ ভেরিফিকেসন তুলে দেয়ার সুপারিশ

টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন

প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৫ পিএম, ১ ডিসেম্বর, ২০১৭

বরিশাল ব্যুরো : বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে সেবা গ্রহীতাদের ৭১ ভাগই সেবা পেতে দুর্নীতি ও অনিয়মের শিকার হচ্ছেন বলে টিআইবির সহযোগী সংগঠন ‘সচেতন নাগরিক কমিটি’র এক গবেষণায় বলা হয়েছে। সরকারী এই অফিসটির সেবায় বিদ্যমান অনিয়ম, হয়রানি ও দুর্নীতি চিহ্নিত করে ঐ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত ফি’র বাইরে ঘুষ বা নিয়ম-বহিভর্‚ত অর্থ দেওয়ার গড় পরিমান জনপ্রতি ১ হাজার ৮৫৪ টাকা। নতুন পাসপোর্ট আবেদনে সেবা গ্রহীতাদের ৮৯ দশমিক ৪ ভাগ পুলিশী তদন্তে অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার এবং তাদের সকলকে ঘুষ বা নিয়ম বহিভর্‚ত অর্থ হিসাবে গড়ে ৮৯৬ টাকা দিতে হয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ প্রতিবেদন প্রণয়নে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চÑএসবি কর্তৃক আবেদনপত্রে অযথা ত্রæটি খুঁজে বের করার চেষ্টা, জঙ্গী কার্যক্রম বা ভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্তার ভয় দেখানো, বাড়িতে না গিয়ে চায়ের দোকানে বা থানায় ডেকে পাঠানো সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। বিতরণে শতকরা ৩২ দশমিক ৩ ভাগ সেবা গ্রহীতার নির্ধারিত দিনে পাসপোর্ট পেতে বিলম্ব হবারও অভিযোগ রয়েছে।
টিআইবি’র সহযোগীতায় সচেতন নাগরিক কমিটিÑসনাক সাংবাদিক সম্মেলন করে এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে। বরিশাল পাসপোর্ট অফিসের মোট ৩৫০ জন সেবা গ্রহীতার ওপর ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বরিশাল পাসপোর্ট অফিসে ওই সময়ে ৫৬ দশমিক ৩ ভাগ সেবা গ্রহীতা দালাল কিংবা অন্যের সহযোগীতা নিয়েছে। এদের মধ্যে ৮০ দশমিক ৭ ভাগ দালাল, ১৪ দশমিক ৭ ভাগ পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারী, ৩ ভাগ আনসার, ১ দশমিক ৫ ভাগ ফটোকপি-কম্পিউটার দোকানদার এবং একভাগ ব্যাংক কর্মচারী। গ্রাম থেকে আসা সেবা গ্রহীতাদের ৬০ দশমিক ৮ ভাগ দালালের খপ্পরে পড়ে তাদের সহযোগীতা নিয়েছেন। বরিশাল পাসপোর্ট অফিসে ১৫ থেকে ২০ জন দালাল কাজ করে। এদের মধ্যে ৬ জন অত্যন্ত প্রভাবশালী। দালালরা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। দালালরা বিশেষ শাখার পুলিশ এবং পাসপোর্ট অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সখ্যতা বজায় রাখে বলেও ঐ গবেষণা প্রতিদবেদনে উল্লেখ করা হয়। পাসপোর্ট প্রার্থীর কাছ থেকে তারা যে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করে তার একটি অংশ পাসপোর্ট অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এসবি পুলিশের একাংশকে দেয় বলেও ঐসব দালরা জানিয়েছে।
নতুন পাসপোর্ট আবেদনে পুলিশ প্রতিবেদনÑব্যবস্থা সাধারন আবেদনকারীদের হয়রানি ও দুর্নীতির শিকার হওয়ার অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন পাসপোর্ট আবেদনকারীদের মধ্যে ৮৯ দশমিক ৪ ভাগ সেবা গ্রহীতাকে নিয়ম বহিভর্‚ত অর্থ প্রদান করতে হয়েছে। এমনকি পুলিশী তদন্তে নিয়োজিতদের হয়রানীর পাশাপাশি নানা ধরনের দুর্ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের সেবার মান উন্নত ও টেকসই করণ এবং দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে ১৩ দফা সুপারিশমালা উপস্থাপন করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, পাসপোর্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফেকশন বিধান বাতিল করা, অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালালদের আইনের আওতায় নেয়া, ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অভিযোগ গ্রহণ ও নিস্পত্তি প্রক্রিয়া চালু করা।
এদিকে সনাকের উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদন সম্পর্কে সাংবাদিকদের পশ্নের জবাবে বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপÑপরিচালক খন্দকার কামাল হাসান বলেন, যখন ওই জরিপ কার্যক্রম পরিচালিত হয়, তখন তিনি বরিশালে কর্মরত ছিলেন না। উপস্থাপিত অনিয়মগুলো এখন আর বরিশাল পার্সপোর্ট অফিসে নেই বলে দাবি করে যথাযথ এবং উপযুক্ত সময় সেবা নিশ্চিত করতে তিনি নিজেই সবকিছু তদারকি করেন বলেও জানান উপ-পরিচালক।
নগরীর বিডিএস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের সহকারী প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. আলী হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সনাক সভাপতি প্রিন্সিপাল গাজী জাহিদ হোসেন, সদস্য প্রফেসর এম মোয়াজ্জেম হোসেন, অ্যাডভোকেট মানবেন্দ্র বটব্যাল, শুভংকর চক্রবর্তী, সাইফুর রহমান মিরন এবং টিআইবি’র গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. শাহনুর রহমান।



 

Show all comments
  • Md HOSSAN ২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৭:৫১ এএম says : 0
    STOP ALL OVER BANGLADESH PASSPORT PURPOSE.POLICE VERIFICATION.STOP POLICE VERIFICATION.PLEASE.I REQUEST TO HONORIOUM PRIEMESTAR.AND PRESIDENT.GOD BLESS U .FOR HARASHMENT POLICE VERIFICATION.AMIR KHAN USA
    Total Reply(0) Reply
  • MD AMIR HOSSAN ২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৭:৫৭ এএম says : 0
    PlOLICY MAKER OR PARLIAMENT MEMBER PLEASE DISCAUSE AT PARLAMENT ABOUT NO POLICE VERIFICATION.USA PASSPORT PURPOSE NO NEED POLICE VERIFICATION.ONLY POST OFFICE TAKE INFORMATION AND PICTURES AND FEES THAN SENT TO HOUSE PASSPORT.NO HASSAL.A
    Total Reply(0) Reply
  • MD AMIR HOSSAN ২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৮:০০ এএম says : 0
    I WENT TO POST OFFICE SUBMIT MY NATURALIZATION CERTIFICATE AND PHOTO .THAN. SCHDULE DATE SENT PASSPORT TO MY HOUSE.THANKS AND GOD BLESS USA POLICY MAKER
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ