পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মালয়েশিয়ায় রি-হিয়ারিং প্রক্রিয়ায় অবৈধ কর্মীদের বৈধকরণের সুযোগ আগামী ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাচ্ছে। মালয়েমিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে লাখ লাখ বাংলাদেশী কর্মী এখনো অবৈধভাবে কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিটেন্স আয় করছে।
সচেতনতার অভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবৈধ বাংলাদেশী কর্মীরা বৈধতা লাভের সুযোগের বাইরে থেকে যাচ্ছে। ডিসেম্বরের পরে দেশটিতে অবৈধ অভিবাসী কর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হবে বলে জানা গেছে। দেশটিতে ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়েকটি ক্রাইটেরিয়ার মাধ্যমে বৈধকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথমে রি-হিয়ারিং এবং পরবর্তীতে এর সঙ্গে (যাদের কোনো কাগজপত্র নেই) যুক্ত হয় ই-কার্ড প্রোগ্রাম। ই-কার্ড এর প্রক্রিয়া শেষ হয় গত ৩০ জুন।
অবৈধ কর্মীদের যারা ই-কার্ডের আওতায় নিবন্ধিত হয়েছে তাদেরকে রি-হিয়ারিং এর মাধ্যমে বৈধ হতে হবে । রি-হিয়ারিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যারা নিবন্ধিত হয়েছেন এবং যারা এখনও নিবন্ধন করেননি তাদের দ্রæত মাই-ইজি, বুক্তিমেঘা ও ইমান এ তিন কোম্পানির মাধ্যমে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈধতার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দেশটির অভিবাসন বিভাগের পাশাপাশি কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন কর্তৃপক্ষ বারবার তাগিদ দিয়ে আসছে।
গতকাল বৃহস্পতিবারও মালয়েশিয়ার পুত্রাজয়ায় ইমিগ্রেশন বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অবৈধ অভিবাসী কর্মীদের সমস্যা সংক্রান্ত দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ হাই কমিশনের কর্মকর্তাদের রি-হিয়ারিং প্রক্রিয়ায় কর্মীদের দ্রুত বৈধকরণের সুযোগ গ্রহণের উপরগুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন হাই কমিশনের শ্রম সচিব সায়েদুল ইসলাম।
কুয়ালালামপুর থেকে একাধিক সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ায় প্রচুর বিদেশি কর্মী বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় কাজ করছে। দেশটিতে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ ইন্দোনেশিয়ার, ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ নেপালের, ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ বাংলাদেশের, ৬ দশমিক ৯ শতাংশ মিয়ানমারের, ভারতের ৫ দশমিক ১ শতাংশ, ফিলিপাইনের ৩ দশমিক ১ শতাংশ, ২ দশমিক ৫ শতাংশ পাকিস্তানের এবং থাইল্যান্ডের রয়েছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যান্য দেশের ৪ শতাংশ কর্মী কাজ করছে। কুয়ালালামপুর থেকে মালয়েশিয়া বিএনপি একাংশের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: কাজী সালাহ উদ্দিন গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, দালালদের খপ্পরে পড়ে কয়েক লাখ বাংলাদেশী মাই ইজি’র মাধ্যমে জনপ্রতি ৬ হাজার রিংগিট পরিশোধ করে প্রতারণার শিকার হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। তিনি এসব অবৈধ বাংলাদেশীদের আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈধকরণের সুযোগ গ্রহণের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলমান রি-হিয়ারিং ও ই-কার্ডের আওতায় প্রায় পাঁচ লাখ অবৈধ বাংলাদেশি কর্মী নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩০% নিবন্ধিত কর্মী ভিসা পেলেও ১০% কর্মী নাম ও বয়স জটিলতার কারণে ভিসা পাননি। আর ৬০% নিবন্ধিত কর্মীর ভিসা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। শ্রম কাউন্সেলর সায়েদুল ইসলাম ইতিপূর্বে বলেছিন, আমরা চেষ্টা করছি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা দিতে। বৈধ হতে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশি কর্মী নিবন্ধিত হয়েছেন। কিন্তু বৈধ হওয়ার জন্য অনেকে দূতাবাসের পরামর্শ না নিয়ে দালালদের কাছে যাচ্ছে ফলে বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে। বাঙালিদের অনেকে হাইকমিশন পর্যন্ত আসতে চায় না। তিনি হাইকমিশনার বাঙালিদের সরাসরি হাইকমিশনে এসে বৈধ হওয়ার আহ্বান জানান। যারা ইতিপূর্বে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনে ফিংগার প্রিন্ট দিয়ে মালয়েশিয়া প্রবেশ করেছেন বা সিক্স-পি’র অধীনে বৈধ হয়েছেন তাদের সব তথ্য ইমিগ্রেশনে রয়েছে। সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশি কর্মীরা পাসপোর্ট করার সময় অনুরূপ তথ্য দিয়েই পাসপোর্ট করতে হবে। জন্ম তারিখ বা নামের বানান পরিবর্তন করলে ইমিগ্রেশন বিভ্রান্ত হয় এবং তথ্যাদির মিল না পেলে ভিসা ইস্যু করতে পারবে না। এছাড়া পাসপোর্টে বয়স কমানো যাবে না বলে সাফ জানিয়েছে ইমিগ্রেশন বিভাগ। রিহায়ারিং কাজ দ্রæত করার জন্য ইমিগ্রেশন বিভাগ স্পেশাল টাস্কফোর্স করে দিয়েছে এবং তারা কাজ করছে। যে সব কোম্পানি মাই ইজি, ইমান বা বুক্তি মেঘার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে তাদের দ্রæত ইমিগ্রেশনে কর্মীদের হাজির করতে বলেছে।
মাই-ইজি জানিয়েছে, কিছু কর্মী তাদের কাছে রেজিস্ট্রেশন করার পর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় তাদের দ্রুত মাই-ইজি বা হাইকমিশনে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। যাতে তারা ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে বৈধ হতে পারেন। বৈঠকে কর্মীদের কিছু প্রবণতা এড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যেমন- মাই-ইজিতে রেজিস্ট্রেশন করার পর কোম্পানি পরিবর্তন করে অন্যত্র চলে গেছে; আর কোনো যোগাযোগ করেনি। ফলে কোম্পানি তাদের পাচ্ছে না, মাই-ইজিকেই অনেকে থাকার বৈধ কাগজ মনে করছে এবং ভুয়া কোম্পানির দারস্থ হচ্ছে শুধু রেজিস্ট্রেশন কাগজ পাবার জন্য। এ ধরনের কাজ করলে কখনই বৈধ হতে পারবে না। অন্য কোনো সময়ের জন্য অপেক্ষা না করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। যারা এখনও রেজিস্ট্রেশন করেনি তাদের মাই-ইজি, ইমান বা বুক্তি মেঘাতে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যারা রেজিস্ট্রেশন করে নীরব আছেন বা কোম্পানি পরিবর্তন করেছেন তারা যেন দ্রুত কোম্পানির মাধ্যমে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেন। যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন কিন্তু কোম্পানি ভুয়া বা কোটা নাই তাদের মাই-ইজি বা হাইকমিশনে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।