২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
গত ২৯ শে অক্টোবর ছিল বিশ^ স্ট্রোক দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘‘স্ট্রোক কেন প্রতিরোধ করবেন ?” স্ট্রোক এখন সারাবিশে^ একটি আতঙ্কের নাম কারন একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রতি তিন সেকেন্ডে একজন মানুষ স্ট্রোক আক্রান্ত হয়, যার বেশীরভাগই মৃত্যুবরন করে, এর কারন এই ষ্ট্রোক। তাছাড়া নন কমিউনিকেশন ডিজিজ হিসাবে স্ট্রোককে এখন মৃত্যর তৃতীয় কারন বলা হয়।
আমরা জানি স্ট্রোক দুই প্রকারের হয়ে থাকে,
ব্রেনের অভ্যান্তরীন রক্ষানালী গুলির মধ্যেকার রক্ষ সঞ্চালন কমে গেলে, অর্থাৎ রক্তনালীগুলির মধ্যেকার জমা হয়ে থাকা চর্বি যা মেডিকেল ভাষায় থ্রম্বো এম্বোলিজমের কারনে হয়ে থাকে যাকে ইস্কেমিক স্ট্রোক বলে।
হেসোরিজিক স্ট্রোকÑ যা ব্রেইনের অভ্যান্তরীন রক্তনালী ছিড়ে গিয়ে ব্রেইনের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরন হয়ে থাকে যা আক্রান্ত স্থানের টিস্যুগুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে যার ফলে রোগীর বিভিন্ন শারিরীক সমস্যা দেখা যায়।
যেমন- শরীরের একপাশ ঝিম ঝিম বা অবশ অবশ মনে হওয়া অথবা শক্তি কমে যাওয়া, মুখ বেকে যাওয়া অথবা আক্রান্ত পাশের হাত পা, নাড়াতে না পাড়া ইত্যাদি। কিন্তু দু:খের ব্যাপার হল। ইস্কেমিক স্ট্রোক বা হেমোরেজিক স্ট্রোক উভয়েরই উপসর্গ প্রায় একই। তাই রোগ নির্নয়ের জন্য ব্রেনের সিটি স্ক্যান বা এম আর আই খুবই জরুরী। কারন দুই ধরনের স্ট্রোক এর চিকিৎসা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
আমরা জানি যে কোন রোগের ক্ষেত্রে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। অতএব কিভাবে আমরা স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে পারি।
(১) ধুমপান বন্ধ করা (২) ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখা (৩) চর্বি জাতীয় খাবার না খাওয়া অর্থাৎ যাদের শরীরে রক্তে চর্বির পরিমান বেশী তাদের চর্বি কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া (৪) নিয়মিত ব্যায়াম করা (৫) স্ট্রেস বা দুঃচিন্তা না করা ইত্যাদি।
যখন একজন ব্যাক্তি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে শরীরে একপাশ প্যারালাইসিস বা পক্ষঘাগ্রস্থ হয়ে গেলেন তখন তার করনীয় কী ?
অনেকেরই ধারনা এ ধরনের প্যারাইসিসের কোন চিকিৎসা নেই। এখন বিশে^ খুবই উন্নতমানের চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে যা বাংলাদেশে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে আশা করি শুরু হবে। সেটি হলো একজন রোগী স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ৪১/২ ঘন্টার মধ্যে যদি নির্নয় করা যায় যে ইস্কেমিক স্ট্রোক এর কারনে প্যারালাইসিস হয়েছে, তাহলে থ্রোম্বো এম্বোলিক এজেন্ট ইনজেকশন আকারে দিলে রোগী খুবই দ্রæত সুুস্থ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বেশীরভাগ মানুষই সচেতনার অভাবে দেরীতে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন । ফলে এই সুযোগ টি থেকে রোগী বঞ্চিত হচ্ছেন।
এখন বলতে পারেন যে রোগীটি স্ট্রোক পরবর্তী প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হলেন তার আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ আছে কি?
হ্যা সুযোগ আছে। কিন্তু যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যাক্তিকে যত দ্রæত সম্ভব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে আনতে হবে এবং নির্নয় করতে হবে কি ধরনের স্ট্রোকে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করতে হবে দ্রুত। এক্ষেত্রে চিকিৎসা দুই ধরনের
১. মেডিসিন বা সার্জারী যা আক্রান্ত ব্যাক্তির ব্রেনের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে (ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে)। অন্য দিকে হোমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রক্ত সরানোর জন্য কিছু কিছু রোগীর অপারেশন প্রয়োজন পড়ে
২. পূর্নবাসন চিকিৎসা -এটি একটি সমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতি। যেমন ফিজিক্যাল বিহ্যাবিলিটেশন, অকুপেশনাল বিহ্যাবিলিটেশন, আবার কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে কথা বলতে অসুবিধা দেখা দেয় যা মেডিকেল পরিভাষার এফাশিয়া বলা হয়ে থাকে তার ক্ষেত্রে প্রয়োজন স্পিচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ পূনর্বাসন। তাই পূনর্বাসন চিকিৎসাটি হওয়া উচিত একটি মাল্টিডিসিলিনারী টিম এপ্রোচ। যার মাধ্যমে একটি রোগী তার সবগুলি অসুবিধা থেকে মুক্তি পেতে পারে।
ষ ডাঃ এম. ইয়াছিন আলী
বাত, ব্যাথা, প্যারালাইসিস রোগে ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ
চেয়ারম্যান ও চীফ কনসালটেন্ট,
ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল,ধানমন্ডি, ঢাকা।
কনসালটেন্ড ও বিভাগীয় প্রধান - ফিজিওথেরাপি বিভাগ
প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল লিঃ
০১৭৮৭ ১০৬৭০২
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।