Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন ও জাতিগত হত্যাযজ্ঞের শিকার’

বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ৬:৫৩ পিএম | আপডেট : ১০:৩৫ পিএম, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া আরাকান (রাখাইন) রাজ্যের লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের দেখতে গতকাল কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ৩ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশ জাপান, জার্মান ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গতকাল কক্সবাজার সফর করে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান। এসময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ফ্রেডরিকা মোঘেরিনিও তাদের সাথে ছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহামুদ আলীর নেতৃত্বে গতকাল রবিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় ৩ বিদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহ আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
সফরকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা হলেন, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগট ওয়ালস্টার।
বিদেশী পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে পৌঁছে প্রথমে ক্যাম্প ইনচার্জ কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে বৈঠক শেষে কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএমওর) পরিচালনাধীন চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এর পরে তাঁরা বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখেন ও মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে তাদের বক্তব্য ধৈর্য সহকারে শুনেন। এসময় পিতা-মাতাহীন এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের সাথেও কথা বলেন তারা।
পরিদর্শন শেষে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো সাংবাদিকদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের করুন চিত্র আমরা দেখেছি। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন, জুলুম ও জাতিগত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছে। তাদের বাড়ী ঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। বসত বাড়ী থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। আমরা রোহিঙ্গাদের সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাব। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠিয়ে নাগরিকত্বসহ তাদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আগামী ২০-২১ নভেম্বর মিয়ানমারের অনুষ্ঠিতব্য আসেম সম্মেলনে জোরালো ভাবে তুলে ধরা হবে। আমরাও চাই শান্তিপূর্ণ ভাবে রোহিঙ্গাদেরকে স্বীকৃতি দিয়ে মিয়ানমার ফেরত নেবে। বিশেষ করে বিপন্ন রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিও পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক বরিস মিশেল। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) বাংলাদেশের ডাইরেক্টর পেপি ছিদ্দিকীসহ ৩ দেশের রাষ্ট্রদূত, বিদেশী কূটনৈতিক, কক্সবাজার পুলিশ সুপার ড: একে.এম ইকবাল হোছাইন, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান ও উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাউলাউ মারমা প্রমুখ।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১.৫২ মিনিটে ৩ বিদেশী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে ৩টি বিশেষ হেলিকপ্টার যোগে উখিয়ার ইনানীতে অবতরণ করেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বিকেল ৩টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে উখিয়া ত্যাগ করেন বিদেশী পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা ক্যাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ