Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ প্রশাসন নির্বিকার

হাটহাজারীতে প্রকাশ্যে চলছে পাহাড় কাটা

| প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী থেকে : হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে পাহাড় কাটার ধুম পড়েছে। সরকার প্রদত্ত নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্য চলছে পাহাড় কাটার মহাৎসব। এতে করে একদিকে পরিবেশ হারাচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। অন্যদিকে পাহাড়ে বসবাসরত প্রাণীকূল হারাচ্ছে তাদের নিরাপদ আবাসস্থল। এ ব্যাপারে কোন প্রকার কার্যকারী পদক্ষেপ চোখে পড়ছেনা বলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নির্বিকার বলে দাবি করছেন স্থানীয় জনসাধারণ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন ঘুরে স্থানীয় জনসাধারণের সাথে আলাপকালে পাহাড় কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন যুবক প্রতিবেদককে জানান, বিগত কয়েকমাস যাবৎ এলাকার বেশ কিছু প্রভাবশালীদের নেতৃত্বে পাহাড় কাটার একটি সিন্ডিকেট চক্র বিভিন্ন এলাকার ছোট বড় পাহাড় ও টিলা কাঠা। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রসাশন নির্বিকার বলে চক্রটি পরিবেশ বিরোধী এমন একটি ধ্বংসাত্মক কাজ প্রকাশ্য করতে পারছে।
তারা আরো জানান, প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অন্তত ১৫-২০টি ট্রলি গাড়িতে করে কর্তনকৃত পাহাড়ের মাটি বিক্রি করছে সিন্ডিকেট চক্রটি। প্রায় ৪৫ ফুট ধারণকৃত প্রতি ট্রলি পাহাড়ি মাটি ৮০০-১০০০ টাকা হারে বিক্রি করে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে চক্রটি। এ চক্রটি এ পর্যন্ত ৪-৫টি ৬০-৭০ ফুট উঁচু পাহাড় কেটে সাবার করেছে। এতে পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় প্রবল বর্ষণে পাহাড় গুলো ধসে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
নন্দির হাট এলাকার মনির (৫৮) নামে এক বাসিন্দা বলেন, এক সময় সিটি কর্পোরেশনের ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকায় পাহাড়ের অন্যতম সৌন্দর্য ছিল হরিণ, বাঘ, বাল্লুকসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। চট্টগ্রামের শহরের লাগোয়া হওয়ার কারণে অনেকেই এ পাহাড় বেষ্টিত এলাকাটিকে বনভোজনের উপযুক্ত স্থান হিসেবে ব্যবহার করত। কিন্তু অবৈধভাবে দেদারসে পাহাড় কাটার ফলে ওই এলাকার পরিবেশ হারাচ্ছে তার প্রাকৃতিক ভারসাম্য। এছাড়া পাহাড় উজার হওয়া কারণে পাহাড়ে বসবাসরত প্রাণীকূল হারাচ্ছে তাদের নিরাপদ আবাসস্থল। এতে করে পাহাড়ের অন্যতম সৌন্দর্য বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীগুলোকে এখন আর দেখা যায় না বলে স্পটটি হারাতে বসেছে তার অতীত ঐতিহ্য।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, চৌধুরী হাটের পশ্চিমে সাধুর পাহাড় সংলগ্ন উত্তর পার্শ্বে অবৈধভাবে সুতার পাহাড় (প্রকাশ ফুতর পাহাড়) কেটে সমতল করে প্লট বিক্রি করে আরেকটি প্রভাবশালী চক্র রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছে বলে জনশ্রæতি রয়েছে এবং ফতেয়াবাদের পশ্চিমে, চবি ১নং ও ২নং এলাকার পশ্চিমে, হাটহাাজরী বাসষ্টেশন ও সদরের পশ্চিমে সন্দিপ পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায়, মীরের হাটের পশ্চিমে কয়েকটি স্থানে, চারিয়া, সরকারহাট, ধলই, মনিয়াপুকর পাড়, কাঠিরহাট, ফরহাদাবাদ, নাজিরহাট উপজেলার পৌরসভার পশ্চিমে আদর্শ গ্রাম সংলগ্নে বিশাল পাহাড় কেটে অবৈধ ভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া চট্টগ্রাম ভেটেরিনারী ও এনিম্যাল সাইন্সেস রির্সাচ এন্ড ফার্ম বেইজড় ক্যাম্পাসের রাস্তা নির্মাণ কাজ করছে ঠিকাদারী কোম্পানী এসব এলাকার পশ্চিমে পাহাড়ি এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে পাহাড় কাঠার মহাউৎসব। এসব বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, পাহাড় কর্তনের কোন অভিযোগ আমরা এখনও পায়নি। কোন অভিযোগ পেলে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অচিরেই আইননানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করবো।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাটহাজারী

১৮ ডিসেম্বর, ২০২১
২৯ মার্চ, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ