পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সউদী আরবে দুর্নীতি দমনের সাম্প্রতিক অভিযান মিডিয়া ও জনসমাজে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এ নিয়ে সউদী আরব ও বিশ্বব্যাপী মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ এ পদক্ষেপকে নতুন ভোরের শুরু বলে মনে করছেন। অন্যদিকে অন্যরা একে ক্ষমতার উপর নিয়ন্ত্রণ সংহত করার জন্য শাহজাদা মোহাম্মদ বিন সালমানের হিসেব করা পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
সউদী সরকার বলেছে যে, দমন অভিযানে ১১ জন শাহজাদা এবং কয়েক ডজন বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, ব্যবসায়ী ও অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সউদী আরবে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন।
গ্রেফারকৃতদের মধ্যে সাবেক বাদশাহ আবদুল্লাহর তিন ছেলে শাহজাদা মিতেব বিন আবদুল্লাহ, শাহজাদা তুর্কি বিন আবদুল্লাহ ও শাহজাদা ফাহাদ বিন আবদুল্লাহসহ বাদশাহ আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা রয়েছেন। শাহজাদা মিতেব ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান ছিলেন। শাহজাদা তুর্কি রিয়াদের সাবেক গভর্নর ও শাহজাদা ফাহাদ সাবেক উপ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন।
ব্যাংকার ও বিনিয়োগকারী সালেহ কামেল তার দু’ প্রত্র মহিউদ্দিন ও আবদুল্লাহ সহ দমন অভিযানের শিকার হয়েছেন। কামেলকে প্রায়ই সরাসরি বাদশাহর ডানদিকে উপবিষ্ট দেখা যেত যার অর্থ তিনি প্রকৃতপক্ষে বাদশাহর ডান হাত। এটা সউদী আরবে সর্বোচ্চ সম্মান বলে বিবেচিত।
মরহুম বাদশাহ আবদুল্লাহর সাথে যাদের সংযোগ ছিল, বকর বিন লাদেন তাদের অন্যতম। তাকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি সউদী বিন লাদেন গ্রæপের প্রধান। তিনি আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের বড় ভাই।
ধারণা করা হয় যে, ২০১৫ সালে মক্কায় ক্রেন দুর্ঘটনায় তার কোম্পানির দায়িত্ব তদন্ত চাপা দেয়ার জন্য তিনি তার ক্ষমতাকে ব্যবহার করেছিলেন। ঐ দুর্ঘটনায় ১শ’রও বেশি লোক নিহত হয়। তিনি সউদী আরবে প্রভাব ও মর্যাদা কিনতে তার সম্পদ ব্যবহার করেছিলেন, তদন্তে সে ব্যাপারে ্এখন গুরুত্ব দেয়া হতে পারে।
বাদশাহ আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ আরেক ব্যক্তি দমন অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি হচ্ছেন জেদ্দার সাবেক মেয়র আদেল ফাকিহ। তাকে জলপথ রুদ্ধ করে প্রকল্প নির্মাণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে যার পরিণতিতে ২০০৯ সালে জেদ্দায় ভয়াবহ বন্যা সংঘটিত হয়। তাতে বহ লোক মারা যায়।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হচ্ছেন বিলিওনেয়ার শাহজাদা আলওয়ালিদ বিন তালাল বিশে^ বহু বিখ্যাত কোম্পানিতে যার শেয়ার আছে। তিনি ও দেশে ও বিদেশে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচন প্রচারণাকালে সামাজিক মাধ্যমে তিনি ট্রাম্পের সাথে ঝগড়ায় জড়ান।
সর্বশেষ গ্রেফতারকে গত জুনে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফের গ্রেফতারের পটভূমিতে দেখতে হবে। প্রতিদ্ব›দ্বী শাহজাদা নায়েফের গ্রেফতার দেশের উপর তার নিয়ন্ত্রণকে সংহত করার ক্ষেত্রে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের এক বড় পদক্ষেপ। তারপর ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান মিতেবের অপসারণকে যুবরাজের কর্তৃত্বের প্রতি ভবিষ্যত কোনো চ্যালেঞ্জ রোধে অনুরূপ পূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শাহী পরিবারগুলোর মধ্যে ক্ষমতার রাজনীতি প্রায়ই নিষ্ঠুর ও প্রাণঘাতী হয়ে থাকে। সউদী শাহী পরিবারের বিস্তৃতি নতুন দ্ব›দ্ব ও উত্তেজনা তৈরি করছে। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশকে আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নেয়ার পর অভ্যন্তরীণ বিরোধ প্রকাশ্য হয়ে পড়া অনিবার্য ছিল। এটা তো মানতেই হবে যে রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে সামান্য কোনো ভ‚মিকা পালন করুক বা না করুক, শাহী পরিবারের হাজারো সদস্যকে মোটা পরিমাণ ভাতা দিয়ে কেউ একা দেশ চালাতে পারে না।
তবে এখনো এটা স্পষ্ট নয় যে এই দমন অভিযান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিশন ২০৩০ ও সংশ্লিষ্ট সামাজিক সংস্কার সমাপ্ত করতে জাতীয় উন্নয়নের কাজে লাগবে কিনা। তরুণ সউদীরা বতর্মান অবস্থার সংস্কার চেষ্টার জন্য বাদশাহ ও তার পুত্রকে পছন্দ করে। কিন্তু দেশ যে সঠিকপথে চলছে তা প্রদর্শন করতে নিয়মিতভাবে সংস্কারের ডোজ দিয়ে তরুণ সমাজকে তাদের সন্তুষ্ট রাখতে হবে।
এই কঠোর হাতের কৌশল গ্রহণীয় হয় তখন যখন তা সকলের জন্য কল্যাণকর হয়। অন্যথায় তাকে ব্যক্তিগত সুবিধা হাসিল ও রাজনৈতিক প্রতিদ্ব›দ্বীদের কুপোকাত করার ছুতো হিসেবেই দেখা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।