পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সউদী আরবের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে লেবানন প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে সে দেশ থেকে স্বেেদশে ফিরে আসার আহবান জানিয়েছে। গত ৪ নভেম্বর রিয়াদে বসে তার আকস্মিক পদত্যাগ সউদী আরব ও তার আঞ্চলিক প্রতিদ্ব›দ্বী ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধের আংশিক কারণ হতে পারে আশংকার প্রেক্ষিতে লেবানন এ আহবান জানায়।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন শুক্রবার বৈরুতের বাইরে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে সউদী আরবের দূতকে বলেন, যে পন্থায় হারিরি পদত্যাগ করেছেন তা অগ্রহণযোগ্য। আউন সংযুক্ত আরব আমিরাত,মিসর ও জর্দানের দূতের সাথেও সাক্ষাত করেন।
প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের মিত্র হেজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ শুক্রবার এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, সউদী আরব ও সউদী কর্মকর্তারা লেবাননে বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তারা লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হারিরিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেআটকে রেখেছে। তাকে দেশে ফিরতে দেয়া হচ্ছে না।
রাশিয়া, সউদী আরব ,ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য দেেেশর সমন্বয়ে গঠিত লেবানন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সমর্থন গ্রæপ হারিরির ফিরে আসার আহবানকে স্বাগত জানিয়েছে।
লেবানন দীর্ঘদিন ধরে সউদী আরব ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্র। তাই সউদীপন্থী রাজনীতিক হারিরি যখন হেজবুল্লাহর মাধ্যমে লেবাননে ইরানের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপকে তার পদত্যাগের জন্য দায়ী করেন তখন তা জল্পনার সৃষ্টি করে যে সউদী নেতারা চেয়েছেন তিনি এটাই করুন এবং তাকে দেশে যেতে দেয়া হবে না। সউদী টেলিভিশনে হারিরি তার পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার কিছুক্ষণ পর ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়া হুতি বিদ্রোহীরা রিয়াদ আর্ন্ত্জাতিক বিমান বন্দর লক্ষ্য করে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। সউদী কর্মকর্তারা এটাকে ইরানের যুদ্ধের কাজ বলে আখ্যায়িত করা হতে পারে বলেছেন।
তারপর থেকে উত্তেজনা বাড়ছে। সউদী আরব বৃহস্পতিবার তার নাগরিকদের লেবানন ত্যাগের আহবান জানিয়েছে ও লেবানন ভ্রমণে না যেতে আহবান জানিয়েছে। রিযাদ তার আগে লেবানন সরকারকে তাদের শরিক হেজবুল্লাহর ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বেইজিং থেকে ভিয়েতনামে যেতে বিমানে এক সাক্ষাতকারে বলেন, সউদী পররাষ্ট্র মন্ত্রী আদেল আল জুবেইর তাকে আশ^স্ত করেছেন যে হারিরি নিজ থেকেই পদত্যাগ করেছেন। এ কথার ভিত্তিতে টিলারসন বলেন, তিনি বুঝতে পারছেন যে আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের জন্য লেবানন ও সউদী দ্বৈত নাগরিক সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরা দরকার।
হারিরি তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটক আছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে টিলারসন বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো খবর নেই।
হারিরি এমন এক সময় পদত্যাগ করলেন যখন ইরান ও তার মিত্রদের সিরিয়ার সুন্নী শক্তিদের বিরুদ্ধে ছায়া যুদ্ধে বিজয়ী হতে দেখা যাচ্ছে। লেবানন সে দেশে গোষ্ঠিগত গণহত্যা ব্যাপকভাবে পরিহার করে আসছে। কিন্তু প্রতিবেশী দেশে সংঘাত সে দেশের অর্থনীতিতে আঘাত হেনেছে , গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ বিচ্ছিন্ন করেছে এবং ১০ লাখেরও বেশি উদ্বাস্তুর ভার চাপিয়েছে।
বৈরুত ভিত্তিক লেভান্ট ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক এফেয়ার্স-এর প্রধান সামি নাদের বলেন, লেবাননের জন্য পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে উঠতে পারে। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, লেবাননের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক নেই। তিনি বলেন, লেবানন কাতারের মতই অবরোধের শিকার হতে পারে। সউদী আরব লেবাননের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে ধারণা করতে পারি।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুয়েতেরেস শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেছেন যে তিনি সউদী আরব ও লেবাননের মধ্যকার উত্তেজনায় উদ্বিগ্ন। তিনি দু’দেশের নেতাদের সাথেই যোগাযোগ রাখছেন। তিনি বলেন, সংঘাত বিস্তারের পরিণতি হবে মর্মান্তিক। লেবাননের ঐক্য,স্থিতিশীলতা ও এর প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে বলেছে , লেবাননের স্থিতিশীলতার যে কোনো হুমকির তারা বিরোধী। প্রধানমন্ত্রী হারিরি যুক্তরষ্ট্রের একজন শক্তিশালী অংশীদার। বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র লেবাননকে ছায়াযুদ্ধের স্থান হিসেবে ব্যবহার অথবা সে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির বিরুদ্ধে লেবাননের অভ্যন্তর বা বাইরের যে কোনো পক্ষকেই সতর্ক করে দিচ্ছে।
সউদী আরবে হুতি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলো সউদী আরবের পাশে দাঁড়াচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আনোয়ার গারগাশ এ হামলার প্রেক্ষিতে জরুরি অগ্রাধিকার হিসেবে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে মোকাবেলা করার আহবান জানিয়েছেন। বাহরাইন বলেছে, ইরানের পদক্ষেপ বন্ধ ও বিপদকে নির্মূল করতে হবে।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রসঙ্গে টিলারসন বলেন, ফরেনসিক বিশ্লেষণ যদি ক্ষেপণাস্ত্রের উৎস হিসেবে ইরানকে সনাক্ত করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে নিরাপত্তা পরিষদের সামনে হাজির করবে। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালিও বলেছেন, এ ক্ষেপণাস্ত্র ইরানি হতে পারে।
ইরান হুতি যোদ্ধাদের ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেছে,সউদী আরব উত্তেজনা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।
মার্কিন বিমান বাহিনীর লেঃ জেঃ ফেরি হ্যারিগিয়ান শুক্রবার দুবাইতে বলেন, সউদী আরব বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্রের গায়ে ইরানি চিহ্ন রয়েছে। তারপরও এর উৎস জানার জন্য চেষ্টা চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।