পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও পবিত্র কাবা শরিফকে অবমাননা করে ফেসবুকে স্টেটাস প্রদানকারী শ্রী টিটু রায় নামে এক যুবকের ফাঁসির দাবিতে রংপুর সদর উপজেলার সলেশাহ বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে পুলিশ বিক্ষোভকারী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ লুটপাট পুলিশের টিয়ার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় ১ জন নিহত ও পুলিশসহ আহত হয়েছে অন্তত ৫০ জন। গতকাল শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় এ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ এম পি, রংপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউর রহমান, হরিদেবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন ও রংপুর সদর উপজেলার আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক এ কে এম হালিমুল হক। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাগলাপীর, হরকলি ঠাকুরপাড়া ও সলেয়াশাহ্ বাজারে ৩ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পুলিশ ব্যাপক মোতায়েন রয়েছে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি গার্মেন্টসে কর্মরত রংপুরের পাগলাপীর ঠাকুরবাড়ি গ্রামের টিটু রায় বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও পবিত্র মক্কা শরিফকে অবমাননা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্টেটাস দেয়। এ ঘটনা গত ৩ নভেম্বর প্রকাশ পায়। এ নিয়ে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত ৫ নভেম্বর শ্রী টিটু রায়কে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন খলেয়া ইউনিয়নে লালচাদপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের পুত্র আলমগীর। এ ঘটনার প্রতিবাদে ৬ ও ৭ নভেম্বর পাগলাপীরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম মাস্টারের নেতৃত্বে শত শত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিসহ অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ টিটু রায়ের ফাঁসির দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন এবং রংপুর পুলিশ সুপারের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। একই দাবিতে গতকাল শুক্রবার শলেয়াশাহ্ বাজারে রংপুর দিনাজপুর ঢাকা হাইওয়ের উপর শলেয়াশাহ্ বাজরে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা প্রদান করেন। এ নিয়ে পুলিশ ও এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ১৫ মিনিটের মানববন্ধন পালনের অনুমতি প্রদান করলে বিক্ষিপ্ত ধর্মপ্রাণ মুসল্লি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করলেও পূর্ব নির্ধারিত মানববন্ধন পালনের জন্য হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নামে। তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে পুলিশি বাধার মুখে বিক্ষোভকারীরা হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামে এসে বাড়িঘর ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করলে পুলিশ টিআর গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। বিক্ষুব্ধ জনতা সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে কোতয়ালী থানা জানিয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান জানান, এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু রাফা মোহাম্মদ আরিফকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এ কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, বিভাগীয় কমিশনার হাসান আহাম্মেদ, জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া তাদের জন্য গতরাতে খিচুড়ি ও থাকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। মহাসড়কে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছেও বলে জানান তিনি। তবে কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটকের খবরের সত্যতা নিশ্চিত কিংবা অস্বীকার করেননি পুলিশের কোনও কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।