পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সবুজের মাঝে সাদা রজনীগন্ধা আর লাল গোলাপ হলুদ গাঁদার চাদর পাতা মনমাতানো, সে এক অভূতপূর্ব নয়নাভিরাম দৃশ্য। বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠে মাঠে রং বেরং এর বাহার। যতদূর চোখ যায় শুধু ফুল আর ফুল। সারাদেশের মধ্যে ফুল উৎপাদনে বিপ্লব ঘটানো যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী এখন ফুলের রাজ্য হিসেবে পরিচিত। উৎকর্ষতার প্রতীক ফুল সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের জীবনে মিশে আছে। ফুল শুধু সৌন্দর্য কিংবা মিষ্টি সুবাতাস ছড়ায় না। বিশাল বাণিজ্যও হয়। ফুলের রাজ্যে গেলে সবারই মন জুড়িয়ে যায়। কিন্তু উৎপাদক চাষিদের নানা সমস্যার কথা শুনলে মন ভেঙে যায়।
বিশাল সম্ভাবনাময় খাতটি দিনে দিনে পিছিয়ে পড়ছে। উৎপাদনে সফলতা আনলেও চাষিরা দারুণ মনোকষ্টে ভুগছেন দীর্ঘদিন। মূল সমস্যাটা হচ্ছে ফুল রফতানী। ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিদেশে। কিন্তু রফতানীর নীতিমালার অভাবে নামকাওয়াস্তে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে সবজি হিসেবে। এসব তথ্য জানিয়েছেন সারাদেশের মধ্যে ফুল উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টির যশোরের ফুলচাষি, রফতানীকারকসহ সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, চলতি মৌসুমেও আমরা শুধুমাত্র যশোর থেকে ৩টি বড় দিবসে ১শ’ কোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট নিয়ে কাজ করছি। শুধু দেশে ফুল বিক্রি করে তো খাতটি এগিয়ে নেয়া যাবে না, দরকার বেশী করে বিদেশে রফতানী করা। কিন্তু আমরা পিছিয়ে পড়ছি রফতানীর নীতিমালার অভাবে। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, মানসম্পন্ন বীজ, চারা ও কলম ফুলচাষীদের মাঝে সরবরাহ এবং উৎপাদিত ফুল বিদেশে রফতানীর প্রতিবন্ধতা দুর করার সরকারী উদ্যোগ নেয়া হলে ফুল উৎপাদনের পাশাপাশি রফতানীতেও রেকর্ড সৃষ্টি হবে। বহুবারই আবেদন নিবেদন করা হয়েছে, হচ্ছে, হবে এমন আশ্বাসে আটকে রয়েছে। সরকার নজর দিলে ফুল শিল্পটির এগিয়ে যাবে। রাখতে পারবে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভ‚মিকা। সমৃদ্ধ হবে বৈদেশিক মুদ্রা ভান্ডার। জানা যায়, দেশের মোট চাহিদার সিংহভাগ অর্থাৎ প্রায় ৭০ শতাংশ ফুল সরবরাহ হয় যশোর থেকে। বিদেশে রফতানী বৃদ্ধির ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে চেষ্টা করে এখনো কোন ফল পাওয়া যায়নি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে প্রতিবছর গড়ে প্রায় আড়াইশ’ কোটি টাকার ফুল রফতানী হচ্ছে। এই অঙ্ক অনায়াসেই হাজার কোটিতে উন্নীত করা সম্ভব। তবে বর্তমানে সবচেয়ে ফুলে বাজার নষ্ট করছে প্লাষ্টিকের ফুল। চীন ও থাইল্যান্ড থেকে প্লাষ্টিক ফুল ব্যাপকভাবে আমদানী হচ্ছে।
অপূর্ব সৌন্দর্য্য ও রঙ্গিন ইতিহাস সৃষ্টিকারী ফুলরাজ্য যশোরের গদখালিতে সরেজমিন দেখা গেছে, সেখানে চলছে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। যশোর-বেনাপোল আন্তর্জাতিক সড়কের গা ঘেষে ঝিকরগাছা উপজেলাধীন গদখালী। গদখালী বাজার পয়েন্ট থেকে সোজা দক্ষিণে পটুয়াপাড়া, হাড়িয়া, নীলকন্ঠনগর, পানিসারা, কাউরা, নারাঙ্গালী, কৃঞ্চচন্দ্রপুর, কুলিয়া. চাদপুর, কানাইরালি, আশশিংড়ীসহ গ্রামের পর গ্রামের মাঠে মাঠে শুধু ফুল আর ফুল চাষ হচ্ছে। রজনীগন্ধার পাশাপাশি ঝাউ কলম ফুল, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, লিলিয়াম, লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, কালো গোলাপ, হলুদ গোলাপ, গাঁদা, জবা ও জুইসহ মানসন্মত বিভিন্ন ফুল উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু চাষিদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। তাদের কথা, শুধু দেশে নয়, বিদেশেও ফুলের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। কিন্তু চাহিদানুযায়ী সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ফুলকে ঘিরে চাষ, পরিচর্যা, ফুল তোলা, বান্ডিল করা, সংরক্ষণ, পরিবহন, ক্রয় ও বিক্রয়সহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রয়েছে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করে দিয়েছে এই খাতটি।
ফুল ব্যবসায়ীরা জানালেন, বর্তমানে কাতার, দুবাই, সউদী আরব সহ বিভিন্ন দেশে চাহিদার তুলনায় একেবারেই কম যশোরের ফুল রফতানী হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় একচেটিয়া ফুল ব্যবসা করে লাভবান হওয়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বেঙ্গালোর, পুনা ও তামিলনাড়–র চেয়ে যশোরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে উৎপাদিত রজনীগন্ধাসহ প্রায় সব ফুলের মান খুবই উন্নত এবং রং উজ্বল ও হৃষ্টপুষ্ট। রজনীগন্ধা ও গ্লাডিওলাস উৎপাদনে বিরাট সাফল্য আসার পর রেকর্ড সৃষ্টির এলাকা যশোরে এখন পুরোদমে চাষ হচ্ছে জারবেরা ফুল। বিদেশ থেকে বীজ ও চারা আমদানী করে শাপলা ফুলের মতো দেখতে লিলিয়াম ফুল, চন্দ্রমলিকার মতো কার্ণিশন ও কাটাবিহীন স্টিক গোলাপ চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ফুলরাজ্যে।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশের ২১টি জেলায় ৭ সহস্রাধিক হেক্টর জমিতে রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ফুল চাষ হচ্ছে। যার সিংহভাগই যশোরের গদখালী এলাকায়। এখানকার মাঠে মাঠে বারোমাসই থাকে নানা জাতের ফুল আর ফুল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।