পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীরদের ‘আজ ফুল খেলবার দিন নয়’ বলে লড়াই-সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষা শেষে মহাসচিবের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব থেকে পদোন্নতির পরদিন গতকাল সকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গেলে নেতা-কর্মীরা তাকে অভিনন্দন জানান।
এ সময় ফখরুল ইসলাম বলেন, অনেকে আমাদের শুভেচ্ছা জানাতে ফুল নিয়ে এসেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের আজ ফুল খেলবার দিন নয়। আমরা গণতন্ত্রের জন্য যে সংগ্রাম-লড়াই করছি, সেই সংগ্রামের আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। সারা বাংলাদেশে এখন একটা ত্রাসের রাজত্ব চলছে।
কাউন্সিলের ১১ দিন পর বুধবার সকালে বিএনপির মহাসচিব ঘোষণার পর পরই নাশকতার দুটি মামলায় ফখরুল ইসলামকে কারাগারে পাঠায় ঢাকার আদালত। তবে আইনজীবীদের পুনর্বিবেচনার আবেদনে চার ঘণ্টা পর জামিনে ছাড়া পান তিনি।
একই দিন ঢাকার আদালত অবরোধের মধ্যে যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে মানুষ হত্যার ঘটনায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এই প্রেক্ষাপটে বামপন্থী কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘মে-দিনের কবিতা’র দুটি ‘প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য/ধ্বংসের মুখোমুখী আমরা’ অবলম্বনে ওই মন্তব্য করেন এককালের ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম।
গতকাল ইউনিয়ন পরিষদের ভোটের দিন ঢাকার কেরাণীগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হওয়ার কথা তুলে ধরে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, সারা দেশে একটা ত্রাস, এরকম একটা সন্ত্রাস ও এরকম নৈরাজ্য চলছে। সেই প্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবে আমাদের নেতা-কর্মীদের আবেগ-উচ্ছ্বাসের প্রতি সম্পূর্ণ সহমর্মিতা জানিয়েও আমরা আনন্দ-উচ্ছ্বাস করতে পারছি না।
সকাল সাড়ে ১১টায় নয়া পল্টনের কার্যালয়ে আসার পর দলের নেতাকর্মীরা নতুন মহাসচিবকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।
পরে সংবাদ সম্মেলন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সমস্ত প্রতিহিংসা, নির্যাতন-নিপীড়ন বাদ দিয়ে আপনারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে অতি দ্রুত একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন, যেটা অবাধ ও সুষ্ঠু হবে, সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে হবে, সকলের কাছে যেটা গ্রহণযোগ্য হবে। ওই ধরনের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে যে রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে, তার অবসান করে বাংলাদেশকে আমরা আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
নাশকতার মামলায় খালেদা জিয়াসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। এই মামলাটি মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওই সময়ে দেশনেত্রী অবরুদ্ধ ছিলেন। সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছিল। এমনকি খাবার পর্যন্ত প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। উদ্দেশ্য একটাই- হেয় করা, হয়রানি করা। পুলিশ যে চার্জশিটটা দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে দেশনেত্রী পলাতক। উনি কখনোই পলাতক ছিলেন না। সর্বসমক্ষে প্রতিদিন আপনাদের মিডিয়াতে আসছেন, তিনি বাসাতে থাকেন, অফিসে যান, কর্মসূচিতে যান।
অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এভাবে দমন-পীড়ন করে বেগম খালেদা জিয়াকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। অতীতেও কোনো নির্যাতনের কাছে তিনি নতি স্বীকার করেননি। বিএনপির নেতা-কর্মীরা নতি স্বীকার করবে না। কারণ আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছি না।
সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এজন্যই তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে, খুন করে, গুম করে, নির্যাতন করে জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে চায়, দমন করতে চায়।
অন্যদের মধ্যে দলের নতুন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সিনিয়র নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আব্দুস সালাম, কাজী আসাদুজ্জামান, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, হাবিবুর রহমান হাবিব, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন, এবিএম মোশাররফ হোসেন ও কাজী আবুল বাশার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন সংগঠনের অভিনন্দন:
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির মহাসচিব ও রুহুল কবির আহম্মেদ রিজভীকে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মনোনীত হওয়ায় বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠ এবয় জোটের শরিক দল ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন অভিনন্দন জানিয়েছে।
গতকাল পৃথক বিবৃতিতে তারা দুই মহাসচিবকে অভিনন্দনের পাশাপাশি নব নির্বাচিতদের কাছে তাদের প্রত্যাশা কথা জানিয়েছেন। বিচক্ষণ এই নেতৃত্বের মাধ্যমেই আগামীর আন্দোলন সংগ্রামে সফলতা মিলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা। অভিনন্দন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ বিএমএল, ছাত্র দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মুফতি ওয়াক্কাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।