পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে গ্যাস সঙ্কট অব্যাহত রয়েছে। গ্যাসের ঘাটতি ওঠানামা করছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহে প্রায় অর্ধেকই ঘাটতি থাকছে। গ্যাস সঙ্কটে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আবাসন খাত ও গার্মেন্টসহ রফতানিমুখী বিভিন্ন ধরনের গ্যাসভিত্তিক প্ল্যান্ট, শিল্প-বাণিজ্য খাত উপখাত স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই কোটি কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি বা লোকসান গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তাদের। গ্যাসের অভাবে বাসাবাড়ি, হোটেল-রেস্তোঁরায় রান্নাবান্নায় পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। নতুন গ্যাসক্ষেত্র থেকে খুব শিগগির গ্যাস উত্তোলনের সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। আগামী বছর কক্সবাজারের মহেশখালী মাতারবাড়ীতে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনাল ও চট্টগ্রাম পর্যন্ত পাইপ লাইন নির্মিত হলে সেখান থেকে আমদানিকৃত গ্যাস জাতীয় গ্রিড লাইনে সরবরাহ করা যাবে। এলএনজিতেই সমাধানের আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আপাতত গ্যাস সঙ্কট নিরসনের বিকল্প নেই। বৃহত্তর চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা ন্যুনতম সাড়ে ৪শ’ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে গ্যাসের জোগান মিলছে গড়ে মাত্র ২শ’ থেকে ২৭০ মিলিয়ন ঘনফুট।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস সঙ্কট পুরনো ক্রনিক সমস্যা। এ কারণে হাজার হাজার পরিবারে নিত্যদিনের ভোগান্তি যেন গা-সওয়া হয়ে গেছে। কখন গ্যাস আসে আর যায় তা নিয়ম মেনে চলেনা। অনেক সময়ই গ্যাস থাকলেও চাপ থাকে কম। মিটমিট করে চুলা জ্বলে আর নিভে। এ অবস্থায় রান্না করা যায়না। মধ্যরাতে, শেষ রাতে গ্যাসের চাপ কিছুটা যখন বৃদ্ধি পায় তখন তড়িঘড়ি করে রান্নার কাজ সেরে নেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। গ্যাসের অপ্রতুলতা কিংবা স্বল্পচাপে বেকারি ও খাদ্যপণ্য তৈরির ছোট ছোট কারখানায় উৎপাদন বিঘিœত হচ্ছে। আর গ্যাস সঙ্কটকে পুঁড়ি করে অতিলোভী গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা শতকরা ৫০ ভাগ থেকে দ্বিগুণ মূল্য হাতিয়ে নিচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে। গ্যাস সঙ্কটের মুখে সিএনজি স্টেশনগুলো অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকছে।
দেশের শিল্প-প্রধান অঞ্চল শিল্পের আদিস্থান চট্টগ্রাম। গ্যাসের অনিশ্চয়তার কারণে রফতানমিুখী ও স্থানীয় শিল্প, কল-কারখানায় উৎপাদনের চাকা থমকে যাচ্ছে বারবার। ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরাজ করছে মন্দাদশা। শিল্প ও বাণিজ্যে বিনিয়োগে পড়ছে মন্দার প্রভাব। দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। চট্টগ্রামের বনেদী ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তারা হতাশ ও বিরক্ত। গ্যাস সঙ্কটের সাথে চুরিও থেমে নেই। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) নিয়মিত স্কোয়াড টিম দিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও গ্যাস সংযোগ না পেয়ে সঙ্কটে পড়েছে অর্ধশতাধিক শিল্প-কারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ফার্নেস অয়েল, ডিজেল কিংবা বিকল্প জ্বালানি দিয়ে কারখানা পরিচালন ব্যয় বেড়ে গেছে। আগের শিল্প-কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। মহানগরী, শহরতলীসহ চট্টগ্রামের ১০টি প্রধান শিল্পাঞ্চলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কোন কোন কারখানা বন্ধ রয়েছে গ্যাস সঙ্কটের কারণে। এতে ব্যাংক ঋণের দায়-দেনা বাড়ছে। গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় গ্যাস চালিত ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্ট থাকলেও সচল রাখা যাচ্ছে না। গ্যাসের অভাবে বিদ্যুতের লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামে গ্যাস সঙ্কট ও ঘাটতি প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চাহিদার বিপরীতে গ্যাসের সরবরাহে ব্যাপক ঘাটতি ও নতুন সংযোগের অভাবে রফতানিমুখী গার্মেন্টস, কম্পোজিট টেক্সটাইল শিল্পখাত, আবাসন, সিএনজি ফিলিং স্টেশন, স্টীল ও রি-রোলিং মিলসহ বিভিন্ন খাতে সমস্যা-সঙ্কট বিরাজ করছে। উদ্যোক্তারা বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ করেও বিপাকে পড়েছেন। চট্টগ্রামে বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের ধারা বজায় রাখতে হলে অবিলম্বে গ্যাস সঙ্কট নিরসনে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় দেশের অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।