Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রহ্মপুত্রের পানির গতি পাল্টাতে হাজার কিলো সুড়ঙ্গ খননের পরিকল্পনা চীনের

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:১৪ এএম

প্রভাবিত হবে ভারত ও বাংলাদেশ

ব্রহ্মপুত্র নদীর পানির গতিপথ পরিবর্তনে এক উচ্চাকাক্সক্ষী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছে চীন। এ পরিকল্পনার আওতায় চীন ১ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খনন করা হবে। যদি চীন পরিকল্পনা মতো এই সুড়ঙ্গ খনন করতে পারে তাহলে এটি হবে বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গ।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের (এসসিএমপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনা প্রকৌশলীরা এই দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খননের কারিগরি বিষয় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। এই সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে তিব্বত থেকে পানি চীনের শিনজিয়াং প্রদেশে নিয়ে আসা হবে। চীনা পরিকল্পনা অনুসারে, তিব্বতের দক্ষিণ তিব্বতের ইয়ারলুং সাংপো নদীর পানির শিনজিয়াংয়ের টাকলামাকান মরুভূমিতে নিয়ে আসে। ইয়ারলুং সাংপো নদী ভারতে প্রবেশের পর ব্রহ্মপুত্র নামধারণ করেছে।
নাম উল্লেখ না করে এক ভূ-কারিগরি প্রকৌশলীর বরাত দিয়ে এসসিএমপি’র খবরে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত সুড়ঙ্গ দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতম স্থান থেকে পানি নিচে পড়বে। বেশ কয়েকটি ঝর্ণা তৈরি হবে- যা শিনজিয়াংকে ক্যালিফোর্নিয়াতে রূপান্তর করবে।
তিব্বত-শিনজিয়াং প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে ইয়ুনান অঞ্চলের ৬০০ কিলোমিটার সুড়ঙ্গে। চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স-এর গবেষক ঝ্যাং চুয়ানকিং বলেন, ‘ইয়ুনানে পানির গতিপথ পরিবর্তনের প্রকল্পটি পরীক্ষামূলক।’ এই প্রকল্পে সরাসরি জড়িত রয়েছেন এই গবেষক। তার মতে, আমাদের মেধা রয়েছে, সামর্থ্য রয়েছে এবং দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খননের মতো সরঞ্জাম রয়েছে তা পরীক্ষা করতেই এই ইয়ুনানের প্রকল্প।
এই গবেষক জানান, ইয়ুনান প্রকল্পে ৬০টি শাখা রয়েছে। এসব শাখার মধ্যে দ্রæত গতির দুটি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। প্রধান সমস্যা হচ্ছে ফল্ট জোন। যদি এটি সমাধান করা যায় তাহলে তিব্বত থেকে শিনজিয়াংয়ে পানি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে প্রধান প্রকৌশল বাধা দূর হয়ে যাবে।
অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল তিব্বত নেটওয়ার্কের গবেষণা সহযোগী লবসাং ইয়াংসু জানান, তিব্বত মালভূমি জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হচ্ছে। হিমালয় অঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় পানি সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। পুরো অঞ্চলটি ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। ব্রহ্মপূত্রের পানি যদি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয় তাহলে এতে প্রভাবিত হবে ভারত ও বাংলাদেশ। ভারত ও বাংলাদেশে ব্রহ্মপূত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অতীতে ভারত ব্রহ্মপুত্রে চীনের বাধ নির্মাণের বিরোধিতা করেছে।
লবসাং বলেন, ভারত, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে এখন কোনও পানি চুক্তি নেই। চীন যদি এই সুড়ঙ্গ নির্মাণ শুরু করে তাহলে ভারত হয়ত কঠোর অবস্থান নিতে পারে। কারণ বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য তা হবে বড় ধরনের ক্ষতি।
উল্লেখ্য, ব্রহ্মপুত্র হিমালয় পর্বতের কৈলাস শৃঙ্গের নিকটে মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে তিব্বত ও আসামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ময়মনসিংহের দেওয়ানগঞ্জের কাছে ব্রহ্মপুত্র দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরববাজারের দক্ষিণে মেঘনায় পড়েছে। সূত্র : কোয়ার্তজ।

 



 

Show all comments
  • Binay Sarkar ৩১ অক্টোবর, ২০১৭, ৬:৫৭ এএম says : 0
    kisu bolar nai
    Total Reply(0) Reply
  • M. Maniruzzaman ৩১ অক্টোবর, ২০১৭, ১:২২ পিএম says : 0
    Time has come for Bangladesh and India to take common stand on water sharing. All three countries of the region must cooperate.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ