Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যশোরের গ্রামে গ্রামে মধু বৃক্ষ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি

রেবা রহমান, যশোর থেকে : | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্ততি শুরু হয়েছে যশোরের গ্রামে গ্রামে। খেজুর গাছকে বলা হয় মধু বৃক্ষ। খেজুরের রস হচ্ছে যশোরের যশ। গাছের ডালপালা কেটে পরিস্কার করার পরই দফায় দফায় চাচ দেয়া হবে। বসানো হবে কঞ্চির নলি। যা দিয়ে খেজুর গাছ থেকে বেয়ে আসবে সুমিষ্ট রস। মাটির ভাড় বসিয়ে খেজুরের গাছ থেকে সংগ্রহ হবে রস। পুরো শীতকাল চলবে মধুবৃক্ষকে ঘিরে চলবে গ্রামীণ উৎসব। গ্রামে গ্রামে তৈরী হবে খেজুরের গুড় ও পাটালি। রস জ্বালিয়ে ভিজানো পিঠা ও পায়েস খাওয়ার ধুম পড়বে প্রায় প্রতিটি বাড়ীতে। দানা, ঝোলা ও নলেন গুড়ের স্বাদ ও ঘ্রাণই আলাদা। রসনা তৃপ্তিতে এর জুড়ি নেই। খেজুরের রস, গুড় ও পাটালির কদর প্রতিবছরই বাড়ছে। রীতিমতো কাড়াকাড়ি পড়ে যায় গুড় ও পাটালি নিয়ে। বিশেষত্ব হচ্ছে যত শীত তত মিষ্টি ও সুস্বাদু হয় খেজুরের রস। ঠকঠকে শীতের গুড় ও পাটালির চাহিদা সবচেয়ে বেশী। অসময়ে হাজারো চেষ্টা করেও শীত মৌসুমের আসল গুড় পাওয়া যাবে না। পাওয়া গেলেও তা হবে ভেজাল কিংবা চিনি মিশানো। তাই শীত মৌসুমে সবাই খেজুরের রস, গুড় ও পাটালি সংগ্রহের অপক্ষো কওে থাকে। আর ক’দিন পরই শহর থেকে গ্রামে ঢুকলেই শীতের ঝিরঝিরে বাতাসে ভেসে আসবে রস-গুড়ের মিষ্টি গন্ধ। গ্রামীণ পরিবেশকে একরকম মাতিয়ে তুলবে রস-গুড়।
বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা খুবই কম। রস গুড়ের সেই জমজমাট ব্যবসাও নেই। তবুও আগের মতো বিরাট লাভজনক না হলেও মৌসুমী আনন্দ গাছীদের নতুন এক গতি সৃষ্টি করে থাকে। এবারও তার ব্যতয় ঘটছে না। তবে আগে প্রতিটি গ্রামে প্রায় বাড়ী বাড়ী রসও গুড় তৈরীর রমরমা অবস্থা ছিল। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। কোন কোন গ্রামে খেজুর গাছ খুঁজে পাওয়া কঠিন। গাছ থাকলেও গাছি নেই। অথচ খেজুরের গুড় শিল্প হিসেবে গড়ে তোলার যথেষ্ট সুযোগ ছিল। যা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে সরকারী কোন পৃষ্টপোষকতা নেই।
গ্রামাঞ্চলে বাড়ীর আঙ্গিনায় ও মাঠে জমির আইলে কিংবা বাগানে অযত্ম অবহেলায় ও সম্পুর্ন বিনা খরচে বেড়ে ওঠা ‘মধুবৃক্ষ’ খেজুর গাছ। প্রতিবছর শীত মৌসুমে মানুষের রসনা তৃপ্তির যোগান দিয়ে আসছে। পুরো শীতে গ্রামীণ জীবনের প্রাত্যহিক এই উৎসব চলে আসছে আবহমান কাল ধরে। এর পেছনে লুকিয়ে আছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক বিরাট সম্ভাবনা। কিন্তু সরকারীভাবে কখনোই কাজে লাগানো হচ্ছে না। সরকারী পৃষ্টপোষকতা ও উদ্যোগ নেয়া হলে দেশের চাহিদা পুরণ ছাড়াও প্রতিবছর বিদেশে গুড় ও পাটালি রফতানী করে কাড়ি কাড়ি টাকা আয় করা সম্ভব বলে কৃষি বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রস


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ