Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জমি দিয়ে সিঙ্গাপুর বেড়াতে যাছেন অন্ধ্রের চাষিরা

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের সরকার সে রাজ্যের মোট ১২৩টি কৃষক পরিবারকে সিঙ্গাপুর দেখে আসার জন্য সেখানে পাঠাছে। এই কৃষকদের প্রায় কেউই এর আগে কোনওদিন তাদের রাজ্যের বাইরে পা রাখেননি। মোট চারটি দলে ভাগ হয়ে এই কৃষকরা সিঙ্গাপুরে যাছেন, তার প্রথম ব্যাচটিকে সোমবার রওনা করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। না, এই কৃষকরা কোনও লটারি জিতে বা সরকারি প্রকল্পের পুরস্কার পেয়ে সিঙ্গাপুরে যাছেন না। তারা অন্ধ্রের নতুন রাজধানী গড়ে তোলার জন্য তাদের উর্বর কৃষিজমি সরকারের হাতে তুলে দিয়েছেন, তার প্রতিদানেই তাদের সিঙ্গাপুর বেড়াতে পাঠাছে রাজ্য সরকার। এই নতুন রাজধানী শহরের নাম রাখা হয়েছে অমরাবতী।
অন্ধ্র সরকার বলছে, অত্যাধুনিক এই নতুন শহরটি গড়ে তোলা হবে একেবারে সিঙ্গাপুরের আদলে, আর সে জন্যই রাজধানীর জন্য জমি দিয়েছেন যে কৃষকরা তাদের সিঙ্গাপুর দেখিয়ে আনা হছে। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু জানিয়েছেন, কৃষকরা যে জমি দিয়েছেন তাতে আমরা কী ধরনের শহর তৈরি করব, কী ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সেখানে থাকবে সেগুলো নিজের চোখে যাতে তারা দেখে আসতে পারেন তার জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।
২০১৩ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য ভাগ করে তেলেঙ্গানা আর অন্ধ্র - এই দুটো আলাদা রাজ্য গঠন করা হয়। পুরনো রাজধানী হায়দ্রাবাদ যেহেতু আগামীতে পুরোপুরি তেলেঙ্গানার ভাগে পড়ছে, তাই অন্ধ্রের জন্য নতুন রাজধানী তৈরির প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
অন্ধ্রের গুন্টুর এলাকার প্রায় পঁচিশ হাজার কৃষক নতুন রাজধানী গড়ার জন্য তাদের মোট প্রায় পঁয়ত্রিশ হাজার একর জমি রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দিয়েছেন। এই জমির জন্য এককালীন মূল্য ছাড়াও সরকার তাদের প্রতি বছর ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাবে।
এই পঁচিশ হাজার কৃষকের মধ্যে থেকেই অনেক যাচাই-বাছাই করে মাত্র সোয়াশোর মতো লোককে সিঙ্গাপুর ভ্রমণের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরের বিমানভাড়া অবশ্য এই কৃষকরাই দিছেন, কিন্তু তাদের চারতারা হোটেলে থাকা-খাওয়া সহ চারদিন শহরে বেড়ানোর যাবতীয় খরচ-খরচা অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারই বহন করছে। আজ প্রথম ব্যাচে যারা রওনা হলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন ভেলাগাপুডি গ্রামের ইদুপালাপতি সীতারামাইয়া। অমরাবতীর জন্য নিজের ১০ একর জমি দিয়েছেন তিনি, বিনিময়ে প্রতি বছর ৫ লক্ষ রুপি করে ক্ষতিপূরণ পাবেন। ৬৫ বছর বয়সী সীতারামাইয়া বলছিলেন, আমাদের দেওয়া জমিতে কী ধরনের শহর হবে সেটা তো একবার গিয়ে দেখে আসা দরকার। আমরা সেখানে থাকতে পারি বা না-পারি, আমাদের ছেলেপুলেরা হয়তো একদিন সেখানে থাকতে পারবে!
তবে সিঙ্গাপুরের পথে রওনা হওয়ার আগে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অনেকেই জানতে চেয়েছেন, তারা কত লক্ষ রুপি নগদ সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন? ভারতীয় রুপিতে সিঙ্গাপুরে কেনাকাটা করা যাবে কি না ইত্যাদি
বি নরসিমহার মতো কেউ কেউ আবার প্রশ্ন করেছেন, সিঙ্গাপুর থেকে তারা কতটা স্বর্ণ কিনে ভারতে আনতে পারবেন?
কৃষকদের কারও কারও আবার দুশ্চিন্তা ছিল, সিঙ্গাপুরে গিয়ে সেখানকার স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে তারা কোন ভাষায় কথাবার্তা বলবেন। অন্ধ্র সরকার তাদের আশ্বস্ত করে বলেছে অনুবাদের ব্যবস্থা থাকবে।
চারদিন চাররাতের সফরে তাদের সিঙ্গাপুর শহরের প্রায় সব দর্শনীয় স্থান এবং সিঙ্গাপুর আর্ট মিউজিয়াম ঘুরিয়ে দেখানো হবে। সিঙ্গাপুর সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এই অতিথিদের জন্য কয়েকটি ওয়ার্কশপেরও আয়োজন করছে। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাষি

১৯ ডিসেম্বর, ২০২১
১৭ ডিসেম্বর, ২০২১
১৮ অক্টোবর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ