Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং সংসদ বরখাস্ত : ডিসেম্বরে নির্বাচন

কাতালান : একদিকে স্বাধীনতা, অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৭, ৯:২৭ পিএম | আপডেট : ৯:৪২ পিএম, ২৮ অক্টোবর, ২০১৭

কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং সংসদকে বরখাস্ত করেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজোয়। স্পেন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়। টেলিভিশনের দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, কাতালোনিয়ায় আঞ্চলিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২১ ডিসেম্বর। এর আগে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্তের পাশাপাশি কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক পুলিশ প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া, কাতালানের প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণের জন্য স্পেনের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাজোয় তার ভাষণে বলেন, স্পেন একটি দুঃখজনক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কাতালানের নাগরিকদের কথা জরুরিভিত্তিতে শোনা উচিত বলেও জানান তিনি। এতে কাতালোনিয়ার অধিবাসীরা আইনের মধ্যে থেকেই তাদের ভবিষ্যতে নির্ধারণ করতে পারবেন এবং তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যেন আইন বহির্ভূত পদক্ষেপ নিতে না পারে। গতকাল কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক স্পেন থেকে স্বাধীন হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ ঘোষণার ৪০ মিনিটের মধ্যেই মাদ্রিদ ওই অঞ্চলের ওপর সরাসরি শাসন কায়েম করার ঘোষণা দেয়। কাতালোনিয়ার ১৩৫ আসনের সংসদে ৭০টি ভোট স্বাধীনতার পক্ষে এবং ১০টি বিপক্ষে পড়েছে। দুটো খালি ব্যালট পেপার জমা দেয়া হয়েছে। বিরোধীদল সোশালিস্ট পার্টি এবং পিপলস পার্টি বা পিপি এবং সিউদাদনোস ভোটাভুটি বর্জন করেছিল। অপর এক খবরে বলা হয়, একদিকে স্বাধীনতা। অন্যদিকে স্পেনের নিয়ন্ত্রণ। এরই মাঝে গতকাল শনিবার ঘুম থেকে জেগে উঠলো কাতালোনিয়া। ততক্ষণে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিয়েছেন সেখানকার প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজদেমন। সে আনন্দে উত্তাল আনন্দের বন্যা রাস্তায় রাস্তায়। অন্যদিকে কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্টসহ পুরো শাসকগোষ্ঠীকে বরখাস্ত করেছে স্পেন। এর মধ্য দিয়ে কাতালোনিয়ার স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে সেখানে স্পেনের কেন্দ্রীয় শাসন জারি করা হয়েছে। কার্লেস পুজদেমন স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও বড় কোনো দেশের তরফ থেকে স্বীকৃতি মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্র বলেই দিয়েছে কাতালোনিয়া হলো স্পেনের অংশ। এমনই এক জটিল পরিস্থিতিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে কাতালানে। সৃষ্টি হয়েছে এক রাজনৈতিক সঙ্কট। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাতালানের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা কার্লেস পুজদেমন বা তার সহযোগীদের স্পেন সরকার গ্রেপ্তার করতে পেরেছে কিনা তা জানা যায়নি। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, ১লা অক্টোবর গণভোটের পর শুক্রবার কাতালানের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয় । এর পরেই স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজোয় কাতালানের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করেন। বাতিল করেন সেখানকার আঞ্চলিক পার্লামেন্ট, শাসকগোষ্ঠীদের। জারি করেন স্পেনের সরাসরি শাসন। পাশাপাশি কাতালানে আগাম নির্বাচন ঘোষণা করেছেন তিনি। বলেছেন, কাতালানে উত্তাল পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ওই নির্বাচন হবে ২১ শে ডিসেম্বর। এর মধ্য দিয়ে স্পেনে রাজনৈতিক সঙ্কট আরো গভীর হলো। ইউরোপ উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতি দেখছে। হতাশা বয়ে যাচ্ছে স্পেনের মেরুদণ্ড দিয়ে। কাতালানের স্বাধীনতাকামী নির্বাহী নেতারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন কিনা এবং তাদের উল্লাসরত সমর্থকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাতালানকে মাদ্রিদের অধীনে নেয়া সমর্থন করেন কিনা তার জন্য উদ্বেগের সঙ্গে বিশ্ব তাকিয়ে আছে রোববারের দিকে। স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার পর স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের রাস্তায় শনিবার দেখা গেছে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রতিবাদ। এর আগের দিন শুক্রবার বার্সেলোনা ও কাতালানের অনেক শহরে আঞ্চলিক পার্লামেন্ট স্বাধীনতা ঘোষণা দেবে বলে আনন্দ উদযাপন করেছে হাজার হাজার মানুষ। কাতালানের পার্লামেন্টে স্বাধীনতার পক্ষে ভোটাভুটি হয়। তাতে পক্ষে পড়ে ৭০ ভোট। বিপক্ষে পড়ে ১০ ভোট। দুজন সদস্য ভোটদানে বিরত ছিলেন। ১৩৫ সদস্যের পার্লামেন্টের বাকিরা প্রতিবাদে পার্লামেন্টেই যান নি। তবে পার্লামেন্টের বাইরে পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠেছে ততক্ষণ। পার্লামেন্টের ভোটের ফল ঘোষণা হতেই বার্সেলোনার রাস্তা স্বাধীনতা ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। স্বাধীনতা ঘোষণা দিতেই পক্ষের এমপিরা উল্লাস করতে থাকেন। হাত তালি দেন। একে অন্যকে আলিঙ্গন করেন। কাতালানের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। এএফপি, রয়টার্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ