Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গ্রাহক পর্যায়ে প্রভাব পড়বে বলছে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো

ইউএসএসডি চার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব বিটিআরসির

| প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) মোবাইল ফোন অপারেটরদের ইউএসএসডি (আনস্ট্রাকচার্ড সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস ডাটা) চার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। ইউএসএসডি চ্যানেল ব্যবহারের মূল্য সেশন ভিত্তিক ৮৫ পয়সা প্রস্তাব করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে কমিশন। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে এমএফএস সেবার মূল্য কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করছে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। যার ভার গ্রাহকদের উপরই পরবে বলে মনে করছে এসব প্রতিষ্ঠান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বিটিআরসি প্রতি সেশন ৯০ সেকেন্ড হিসেবে সেশনপ্রতি ৮৫ পয়সা মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাব মোবাইল ব্যাংকিং সেবার নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাবনার চার গুণ বেশি বলেও দাবি করছে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক সেশনপ্রতি চার্জ নির্ধারণের ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে প্রতি সেশনের মূল্য ২০ পয়সা নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু বিটিআরসি ৮৫ পয়সা মূল্য নির্ধারণ করে ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবটি পাঠিয়েছে। বিটিআরসির প্রস্তাব মন্ত্রণালয় অনুমোদন করলে এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব গাহক পর্যায়ে বর্তাবে এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিশাল একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনার চলমান কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হবে বলে মনে করছে এমএফএস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আয়ের ৭ ভাগ মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে তাদের ইউএসএসডি চ্যানেল ব্যবহার করে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রদানের জন্য। এছাড়া আয়ের ৭৭ ভাগই পায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী এজেন্ট ও পরিবেশকরা। আর সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটি পায় ১৬ ভাগ। মোবাইল ফোন অপারেটররা বর্তমানে যে ৭ ভাগ টাকা পায়, তারা সেই পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে নিতে এই প্রস্তাব করা হয়েছে বলে বলে জানা গেছে। মোবাইলফোন অপারেটরগুলোর অভিযোগ তারা মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নাম মাত্র মূল্যে সেবা দেয়। মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে মোবাইল অপারেটরদের দাবি সঠিক নয় বরং প্রতিবছরই রেভনিউ শেয়ারিং এর মাধ্যমে ইউএসএসডি ব্যাবহার বাবদ তারা বিশাল অংকের টাকা মোবাইল অপেরেটদের প্রদান করে থাকে এবং এর পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। তাদের তথ্য অনুযায়ি, বিকাশ ২০১৬ সালে ইউএসএসডি চার্জ বাবদ মোবাইল অপারেটরদের ৯৪ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে, ২০১৫, ২০১৪ এবং ২০১৩ সালে এর পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬৭ কোটি, ৪৬ কোটি এবং ২৬ কোটি। রকেটও গতবছর প্রায় ১৫ কোটি টাকা অপারেটরদের দিয়েছে বলে জানানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিটিআরসির এই নতুন প্রস্তাবনার ফলে এই প্রক্রিয়ায় গ্রাহক টাকা পাঠাতে চাইলে তাদের খরচ এখনকার চেয়ে অনেক বেড়ে যাবে। এতে লাখ লাখ মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহক যাদের বেশীরভাগই নিম্ন-আয়ের তারা এই সেবা ব্যবহার করতে আগ্রহ হারাবে। ফলে বাধাগ্রস্ত হবে সরকারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচী।
এ বিষয়ে বিকাশের হেড অব কর্পোরেট কমিশন শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, আমরা আশা করব ইউএসএসডি মূল্য নির্ধারনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা স্বল্প আয়ের মানুষের স্বার্থকেও গুরুত্ব দিতে হবে যাতে নিম্ন আয়ের গ্রাহকদের উপর কোন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে এবং সরকারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রম ব্যাহত না হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রাহক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ