পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো সুষ্পষ্ট কোন নির্দেশনা আসেনি। দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের দাবি করা হচ্ছে। একই সাথে দলের প্রধান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কয়দিন আগেই লন্ডনে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সুষ্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। তবে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সকল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জনগণকে এর সাথে সম্পৃক্ত করতে চায় বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে গত ১৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনে সংলাপে অংশ নিয়ে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার, সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ ২০ দফা দাবি জানানো হয়। আগামী মাসেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবেন বেগম খালেদা জিয়া। তবে নির্বাচন নিয়ে এখনো কোন সুষ্পষ্ট নির্দেশনা না আসলেও ভোটের মাঠ তৈরি রাখছেন নেতাকর্মীরা। তাদের ধারণা যে কোন সময় রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। সে সময় যেন ভোটের মাঠে বিএনপির কোন ধরণের সঙ্কট তৈরি না হয়, সেজন্য আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিজ নিজ এলাকায় সময় দিতে দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জনগণের পাশে দাঁড়ানো ছাড়াও স্থানীয় সব কাজেই নিজেদের সম্পৃক্ত করতে বলা হয়েছে। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিয়মিত নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন। সাধারণ ভোটারদের সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়াচ্ছেন। অংশ নিচ্ছেন ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে। আগামী নির্বাচনে দলের রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি বেশ কিছু পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও আমলারাও ধানের শীষের প্রতীক পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল থেকেও যেন তাদের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দাবি তোলা হয় এজন্য নিয়মিত গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকেই জানান, পেশাজীবী অনেক নেতাকে কেন্দ্র থেকে ইতিমধ্যে সবুজ সঙ্কেত দেয়া হয়েছে যাতে তারা এলাকায় পরিচিত হওয়ার সুযোগ পান। মনোনয়ন প্রত্যাশী পেশাজীবী, ব্যবসায়ী এবং আমলার মধ্যে অনেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। এর বাইরেও তারা পেশাজীবী হিসেবেই নিজেদেরকে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। পেশাজীবীদের অনেকের সাথে আলাপকালে এসব জানা গেছে। তবে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
আগামী নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও আমলাদের মধ্যে রয়েছেন- সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বরগুনা-২, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বরিশাল-৩, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নোয়াখালী-১, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ কুমিল্লা-৫, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী চট্টগ্রাম-২, প্রেসক্লাবের বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বরিশাল-২ আসনে মনোনয়ন চাইবেন। চিকিৎসকদের মধ্যে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান (সিলেট-১, সদর) থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে গুঞ্জন আছে। দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও ড্যাব মহাসচিব ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন দিনাজপুর-৬, ডা. এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু গাজীপুর-৩, প্রফেসর ডা. রফিকুল ইসলাম লাবু পিরোজপুর-২, প্রফেসর ডা. মাইনুল হাসান সাদিক গাইবান্ধা-৩, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু দিনাজপুর-৩, প্রকৌশলী আফজালুর রহমান সবুজ শরীয়তপুর-৩, ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম-৯, নেত্রকোণা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. আনোয়ারুল হক নেত্রকোণা-২, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আখতার হোসেন খান চট্টগ্রাম-৭, বিশিষ্ট লিভার বিশেষজ্ঞ ও তরুণ চিকিৎসক ডা. ফাওয়াজ হোসেন শুভ চট্টগ্রাম-৫, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া ঢাকা-৫, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বাগেরহাট-৪, শিল্পপতি আবুল কালাম (চৈতি কালাম) কুমিল্লা-৯, দৈনিক আমার দেশের পরিচালক শাকিল ওয়াহেদ সুমন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪, সুনামগঞ্জ-৫ থেকে প্রকৌশলী সৈয়দ মুনসিফ আলী, কন্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন নীলফামারী-৪, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির পঞ্চগড়-২, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া নরসিংদী-৩, সাবেক আইজিপি আব্দুল কাইয়ুম জামালপুর-১, ব্যারিস্টার হায়দার আলী শেরপুর-২ এবং কুমিল্লা-১১ থেকে ডা. একেএম মহিউদ্দিন ভুইয়া মাসুম, সাংবাদিক মামুন চৌধুরী (স্ট্যালিন) নওগাঁ-৬ আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
বিএনপির মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিক মামুন চৌধুরী (মামুন স্ট্যালিন) বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সাথে যুক্ত আছি। ছাত্রদল করেছি। আমার পারিবারিক ঐতিহ্যও রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। আমার বাবা চৌধুরী মোতাহার হোসেন সংসদ সদস্য ছিলেন। আমি ও আমার পরিবার সবসময় এলাকার জনগণের সুখে-দুঃখে তাদের সাথে আছি। আমি আশা করি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমান আমাকে যদি মূল্যায়ন করেন এবং মনোনয়ন দেন তাহলে আমি সেই দায়িত্ব ও মর্যাদা রাখাবো। তিনি আরও জানান এলাকার জনগণ আওয়ামী লীগের দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়, তরুণ নেতৃত্ব চায়। এই সুযোগকে কাজে লাগালে নওগাঁ-৬ আসনে ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় (বাগেরহাট-৪) বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রতীকে কেউ নির্বাচন করেনি। সেজন্য জাতীয়তাবাদী আদর্শের ভোটাররা হতাশ হয়ে পড়েছে। মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলায় বিএনপির ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা কোণঠাসা বলে স্থানীয়রা মনে করছে। দলীয় প্রার্থী না থাকায় সাংগঠনিক অবস্থায়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এজন্য এলাকার নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আমাকে ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে।
সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম-২ আসনে বিএনপিকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহে এলাকায় গিয়ে স্থানীয় মানুষের সাথে সময় কাটাচ্ছেন, গণসংযোগ করছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান।
ডা. আনোয়ারুল হক বলেন, ছাত্র জীবন থেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত আছি। সে সময় থেকে যত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা অংশ নিয়েছে সবগুলোতেই সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রেখেছি। এজন্য স্থানীয় সব নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের সাথে পরিচয় আছেই। এছাড়া ডাক্তার হওয়ার কারণে স্থানীয় মানুষের মাঝে সাধ্যমতো সকলকেই চিকিৎসাসেবা ও সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। একারণের মানুষের মাঝে গ্রহণযোগ্যতাও বেশ আছে। তিনি আরও বলেন, এর আগে নেত্রকোণা সদর আসনে যে কয়বার বিএনপি নির্বাচিত হয়েছে তাতে ভোটের ব্যবধান খুব কম ছিল। এবারও যদি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ও মাঠ পর্যায়ে পরিচিত প্রার্থী দেয়া না যায় তাহলে কঠিন হয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।