পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপের কারণে বরিশাল সহ সমগ্র উপকূলীয় এলাকায় মওসুমের ভয়াবহ লাগাতর বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। বরিশাল মহানগরীর প্রায় ৮০ ভাগ এলাকা পানির তলায়। পটুয়াখালী ও বরগুনা সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকার গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বরিশাল সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের নদীবন্দরগুলোতে টানা দ্বিতীয় দিনের মত ২ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে অনধীক ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে সব নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বরিশাল-ভোলা, ভোলা-ল²ীপুর ছাড়াও মনপুরা, চরফ্যাশন, হাতিয়া রুটেও সব যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে। বরিশালের পায়রা সহ সবগুলো সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টার পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টয় বরিশালে ১৮৬ মিলিমটার, পটুয়াখালীতে ১৬৪, কলাপাড়ায় ১৩৯, ভোলাতে ৮৩ মিলিমিটারর বৃষ্টি। এসময় দেশের সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয়েছে গোপালগঞ্জে (২৭১ মিলিমিটার)। মাদারীপুরে ১৭১ ও ফরিদপুরে ১৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে একই সময়ে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে আজ সকাল ১১টা পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা সহ সমগ্র উপক‚লীয় এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কার কথা জানান হয়েছে। লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও মাওযঅ সেক্টরের কাঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌপথেও।
এ নিম্নচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব মেঘমালা উপক‚লভাগ সহ দক্ষিণাঞ্চলে ধেয়ে এসে সাম্প্রতিকালের ভয়াবহ বৃষ্টি ঝড়াচ্ছে দক্ষিণাঞ্চল সহ সমগ্র উপক‚লভাগে। আবহাওয়া বিভাগ উপক‚লীয় দ্বীপসমুহের চরাঞ্চল ১-২ ফুট বায়ুতারিত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হবার আশঙ্কার কথাও জানিয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে সব মাছ ধরা ট্রলার ও জেলে নৌকাসমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ভারতের উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপের কারণে বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলসহ উপক‚লীয় এলাকায় গত বৃহস্পতিবার থেকে এ দুর্যোগপূর্ণ আাবহাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে গতকাল সকালের পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বরিশালে প্রায় ২৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মাথায় করে দক্ষিণ-পশ্চিম মওসুমী বায়ু বিদায়ের ক্ষনে কার্তিকের অমাবশ্যার ভরা কোটালে ভর করে লঘুচাপ থেকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ উড়িষ্যা উপক‚ল অতিক্রম করে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেরেশর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থানকালে সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ প্রবল বর্ষণে জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। এর ফলে সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গ্রীষ্মকালীন সবজির পরে আগাম শীতকালীন সবজিরও পুরোটাই বিনষ্ট হয়েছে। এমনকি এবারের অতিবর্ষণে আউশের কিছু ক্ষতির পরে দক্ষিণাঞ্চলে প্রধান খাদ্য ফসল আমন নিয়েও এখন শঙ্কা বাড়ছে। এবার দক্ষিণাঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রা ছুয়ে প্রায় ১৬ লাখ টন আমন চাল উৎপাদন লক্ষ অর্জনের আশা ছিল কৃষকদের। কিন্তু গত তিন দিনের প্রবল বর্ষণের পাশাপাশি স্বভাবিক জোয়ারের চেয়ে কিছু বাড়তি জলোচ্ছাসের কারণে আমন নিয়ে কৃষকের শঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা বেশকিছু গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় বিপুল পরিমাণ আমনের জমিও এখন পানির তলায়। তবে দ্রুত এ পানি সরে গেলে তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগণ। আবহাওয়া বিভাগ থেকে আজ সকারের পরবর্র্তি ৪৮ঘণ্টয় বৃষ্টিপাতের প্রবনতা হৃাস পাবার কথা বলা হয়েছে। গতকাল দপুরের পরে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কিছুটা হ্রস পেলেও বঙ্গোপসাগর থেকে কালো মেঘমালা ধেয়ে আসছিল।
গত তিন দিনের প্রবল বর্ষণে বরিশাল মহানগরীর সবগুলো বস্তির বেশীরভাগ এলাকাও পানিতে সয়লাব হয়েছে। রাতভর প্রবল বর্ষণে বরিশাল মহানগরীর প্রানকেন্দ্র সদর রোড সহ প্রতিটি রাস্তাই গতকাল সকালে ছিল দেড় থেকে ২ ফুট পানির তলায়। নবগ্রাম রোডের কোন কোন এলাকার বাড়ী-ঘরেও পানি প্রবেস করে। ঐ সড়কটির কতিপয় বিবেকহীন বাড়ীওয়ালা প্রধান ড্রেনটির পাশে বালু সহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ফেলে ভড়াট করে ফেলায় জলাবদ্ধতা নিত্যকার বিষয় হলেও নগর ভবন কতৃপক্ষের কোন হেলদোল নেই। এরসাথে গত তিন দিনের টানা প্রবল বর্ষনে ঐ সড়কটির পাশের বাসিন্দাদের দূর্ভোগ এখন বর্ণনার বাইরে। এছাড়াও নগরীর প্রধান খালগুলো বিগত দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর সংস্কারের কোন পদক্ষেপ না থাকায় এককালের বাংলার ভেনিস খ্যাত বরিশাল মহানগরী এখন দুর্ভোগের অপর নাম। গতকাল সকাল থেকে নগীরর অনেক রাস্তায় জাল ফেলে মাছ শিকার করতেও দেখা গেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।