Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে তীব্র যানজট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজধানী ঢাকা শহরের ‘ধমনী’ হিসেবে পরিচিত এয়ারপোর্ট রোড গতকাল কার্যত থমকে দাঁড়িয়েছিল। চিকিৎসার জন্য তিন মাস বিদেশে অবস্থানের পর বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফিরে এলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিমানবন্দর পরিণত হয় জনসমুদ্রে। দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী দলীয় নেত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমান বন্দরে হাজির হন। কিন্তু দুই তৃতীয়ংশ নেতাকর্মীই বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারেননি। নেতাকর্মীরা বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে রেডিসন থেকে বিমানবন্দর মোড় পর্যন্ত দল বেঁধে সারিবদ্ধ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যান। থমকে যায় ঢাকা শহর।
বেগম জিয়া বিকেল ৫টার পর হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলেও দুপুরের পর থেকে ওই রোডে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। মূলত গাজীপুরের চৌরাস্তা থেকে মহাখালী রেলগেইট পর্যন্ত ছিল একই দৃশ্য। যেদিকে চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। সড়কের একদিকে মানুষের মাথা; পিঁপড়ার মতো ধীর গতিতে এগিয়ে চলছে বিমানবন্দরের দিকে; অন্যপার্শ্বে শত শত যানবাহন দাঁড়িয়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দূর্বিষহ যানজটে আটকে থাকায় পথচারী ও অফিস ফেরত মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বিমানবন্দর রোডের এই যানজট রাজধানীতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি করে। শহরের বড় বড় রাস্তাগুলোর বিভিন্ন ট্রাফিক পয়েন্টে যানবাহনকে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এয়ারপোট রোড থমকে থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলা থেকে যে সব বাস গাজীপুর চৌরাস্তা ও আবদুল্লাহপুর হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে সেসব বাস কয়েক ঘন্টা রাজধানীতে প্রবেশ করতে পারেনি। আবার বৃহত্তর ময়মনসিংহ মুখী গাড়িও প্রবেশ এবং বাহির হতে পারেনি। ফলে বিমানবন্দরের যানজট ঢাকার বাইরের মহাসড়কগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। উত্তরাঞ্চলের সবগাড়ী চন্দ্রা থেকে সাভার হয়ে গাবতলী মুখী হওয়ায় সে রাস্তায়ও ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।
বেগম খালেদা জিয়ারকে স্বাগত জানানোর কর্মসূচি ছিল পূর্ব ঘোষিত। নেত্রীকে স্বাগত জানাতে বিএনপির কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যাপক শো ডাউনের আয়োজন করে। কোন সংগঠন কত লোকের সমাগম করতে পারেন সে নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়। ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতারা ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দিতে হাজির হন। তারা বেগম জিয়াকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেন এবং জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার দাবি জানান। দীর্ঘদিন পর বিএনপির নেতাদের এভাবে সমাবেত হতে দেখে সাধারণ মানুষের অনেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দৃশ্য উপভোগ করেন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে যাতে যানজটের সৃষ্টি না করে সে লক্ষ্যে পুলিশ দুপুরের দিকে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে কঠোর অবস্থানে। তারা ধানের শীষ ও বেগম জিয়ার ছবি সম্বলিত ব্যানার- ফেস্টুন-প্লাকার্ড বহনকারী কাউকেই রাস্তায় দাঁড়াতে দেয়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত সড়কে যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় সে জন্যই পুলিশ এই অবস্থান গ্রহণ করে। দুপুরের পর যতই বেলা গড়াতে থাকে ততই জনতার শ্রোত বাড়তে থাকে। এক সময় জনতার শ্রোত জনসমুদ্রে পরিণত হয়। একদিকে হোটেল রেডিসন ওয়াটার গার্ডেন থেকে শুরু করে এয়ারপোর্ট মোড় অন্যদিকে এয়ারপোর্ট মোড থেকে আবদুল্লাহপুর জঙ্গি পর্যন্ত সড়ক লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এয়ারপোর্ট রোডের যানজটের ঢেউ আছড়ে পড়ে শহরের বড় সড়ক ও অলিগলির রাস্তায়। বেগম জিয়াকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানো ঘিরে দুপুরের আগেই রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এসব সড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করায় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। রাস্তা দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকায় মহাখালী বাস-টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাওয়ায় বিলম্ব ঘটে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টার্মিনালে যাত্রীদের বসে থাকতে হয়। ঘরমুখী কর্মজীবী লোকজনকে যেমন বিপাকে পড়তে হয়; তেমনি স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড, কাওলা, বনানী, মহাখালী, আমতলী, মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ির অপেক্ষায় থাকতে হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যানজট

১৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ