পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এলাকায় শোকের ছায়া
কুয়েতে এয়ার কন্ডিশনারের (এসি) কম্পেসার বিস্ফোরণে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কান্দিগাঁওয়ে একই পরিবারের ৫জন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার এ খবর এলাকায় পৌছালে নেমে এসে শোকের ছায়া। গত সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫ ঘটিকায় কুয়েত সিটির সালমিয়াত নামের এলাকার একটি ৫ তলা ভবনের ৩য় তলায় কম্পেসার বিস্ফোরণে জুনেদ আহমদের স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৩৩), পুত্র ফাহাদ (৫) ও ইমাদ (১২), কন্যা জামিলা (১৫) ও নাবিলা (৯) মারা গেছেন। এ সময় জুনেদ আহমদ বাহিরে ছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। বর্তমানে চিকিৎসা নেয়ার পর তিনি সুস্থ আছেন। নিহতদের লাশ মোবারক আল কবির হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
জুনেদ আহমদ স্ত্রী ও ৪ সন্তানকে নিয়ে প্রায় ১৫ বছর থেকে কুয়েতে বসবাস করে আসছেন। কমলগঞ্জের বাড়িতে শুধু বৃদ্ধা মা ছাড়া আর কেউ থাকেননা। জুনেদের অপর দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই জুবের আহমদ সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্র ও অপর ভাই সোয়েব আহমদ সপরিবারে ইংলেন্ডে বসবাস করেন। গত সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টায় কুয়েত শহরের সালমিয়াত একটি আবাসিক ৫ম তলা ভবনের তিন তলায় বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায়। এ সময় ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে সন্তানদের নিয়ে নিচে নামতে গিয়ে ৫ম তলার বাসিন্দা বাংলাদেশী জুনেদ আহমদের স্ত্রী রোকেয়া বেগমসহ দুই ছেলে ও দুই মেয়ে শ^াসরুদ্ধ হয়ে মারা যান। ঘটনার সময় গৃহকর্তা জুনেদ আহমদ বাসার বাইরে থাকায় বেঁচে গেছেন। গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় খবরটি গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের কান্দিগাঁওয়ে পৌছলে নেমে পরে শোকের ছায়া।
জানা যায়, গত সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টা তিনতলার এসির কমপ্রেসার বিষ্ফোরণে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় ভয়ে জুনাইদ আহমেদর স্ত্রী রোকেয়া বেগম সন্তানদের নিয়ে ৫ তলা থেকে নিচে নামতে গিয়ে ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ভবনের ৩য় তলার কাছে সিঁড়িতেই মারা যান।
অগ্নিকান্ডের সময় জুনাইদ আহমেদ অফিসে থাকায় ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। ঘটনার খবর পেয়ে জুনাইদ আহমদ ভবনে ফিরে একসাথে স্ত্রী সন্তানদের মৃতদেহ দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরে তিনি আবার বাসায় ফিরে আসেন। অগ্নিকান্ডে নিহতদের মৃতদেহ কুয়েতের মোবারক আল কবির হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় কুয়েত জুড়ে শোকের ছায়া বিরাজ করছে। প্রবাসী বাংলাদেশীরা গভীরভাবে শোকাহত। কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্টদূত ও কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ও শোকাহত জুনাইদ আহমেদকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। গতকাল ১৭ অক্টোবর সকালে সরেজমিন কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামে গেলে কুয়েত প্রবাসী মোহাম্মদ জুনাইদের প্রতিবেশি মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বাড়িতে জুনাইদের বৃদ্ধ মা ছাড়া আর কেউ নেই। ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার রাতেই বড় বোন মুসলিমা বেগম মায়ের পাশে এসে অবস্থান করছেন। নিহত গৃহবধূ রোকেয়া বেগমের ভাতিজা ইহাইয়া সিদ্দিকি জানান, দুর্ঘটনার ৩০ মিনিট আগেও তিনি ফোন করে বাড়ি ঘরের খোঁজ খবর নেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার সকালে শোকার্ত জুনাইদ মিয়ার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে কান্দিগাঁও গ্রামের বাড়িতে যান।
মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার ভোর থেকে কান্দিগাঁও গ্রামে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। শুরু হয় শোকের মাতম। ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহামম্মদ মাহমুদুল হকসহ জনপ্রতিনিধিসহ সামাজিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ বাড়িতে এসে সমবেদনা জানান। স্বজনরা লাশ দ্রæত দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। পাশাপাশি তারা অপেক্ষায়ও রয়েছেন কখন তাদের প্রিয় স্বজনের লাশ বাড়িতে পৌছায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।