Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্মানের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বাড়িতে পাঠাতে হবে

রাখাইন সঙ্কট সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায় ঐকমত্য : কফি আনান

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও আনান কমিশনের প্রধান কফি আনান আবারও নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠানোর তাগিদ দিয়েছেন। পৃথিবীর সবচেয়ে বিপন্ন জনগোষ্ঠীর ওই শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে গত শুক্রবার রাতে নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কফি আনান নিজের এই অবস্থান তুলে ধরেন। খবরে বলা হয়,আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদে ফিরিয়ে নেয়া এবং সেনা অভিযান বন্ধ করে রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। কফি আনান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে চাপ দিতে শুরু করেছে। গত শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সভা শেষে কফি আনান সাংবাদিকদের এই কথা বলেন। কফি আনান আরো বলেন, আশ্রিত রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে দেশে ফিরিয়ে আনার পর কোনো শরণার্থী শিবিরে নয়, নিরাপদ ও সম্মানের সঙ্গে তাদের বাড়িতে পাঠাতে হবে। ভেটো প্রদানে সক্ষম জাতিসংঘের দুই সদস্য দেশ ফ্রান্স ও ব্রিটেন রোহিঙ্গা সঙ্কটে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ও ফ্রান্সের স্থায়ী প্রতিনিধি ফ্রাঁসোয়া ডিলাটরা বলেন, জাতিগত নিধনের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পাঁচ লাখ ২০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে উদ্বাস্তু করেছে। আমরা এমন ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা সঙ্কটের জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করেছে ব্রিটেন। দেশটির নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী প্রতিনিধি ম্যাথিউ রেক্রফট বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্য একমত হয়েছে যে, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাদের চলানো সামরিক অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। অভিযানের ফলে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদেরও ফিরিয়ে আনতে হবে। গত আগস্টে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে কফি আনান কমিশন সুপারিশমালা মিয়ানমার সরকারের কাছে পেশ করা হয়। কফি আনানের নেতৃত্বে পরিচালিত সেই সুপারিশমালায় উল্লেখ করা হয়, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নেই, তাদের অবশ্যই নাগরিকত্ব প্রদান করতে হবে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিক সুরক্ষা দিতে হবে, স্বাধীনভাবে চলাচল, অর্থনীতি ও শিক্ষার সুযোগ-সুবিধাও রোহিঙ্গা জনগোীকে দেওয়ার সুপারিশ করা হয় ওই সুপারিশমালায়। কফি আনান বলেন, সুপারিশমালায় আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণগুলো তুলে ধরেছি এবং এর ভিত্তিতে সঙ্কট সমাধানের চেষ্টা করছি। কফি আনানের এই সুপারিশমালা প্রদানের পরই গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সঙ্কট তৈরি হয়। আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) মিয়ানমারের কয়েকটি সামরিক ক্যাম্পে হামলা করলে পাল্টা অভিযান হিসেবে সামরিক সেনারা শুদ্ধ অভিযান শুরু করে। সেনা অভিযানে হত্যা, ধর্ষণ ও উচ্ছেদের মুখে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নাগরিক অধিকার বঞ্চিত রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিার মাধ্যমে সঙ্কট সমাধানই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সুপারিশালায় এর কোনো বিকল্প কিছু নেই। রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে মিয়ানমার জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন জাতিসংঘের সাবেক এই মহাসচিব। রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি।



 

Show all comments
  • Muhammad Kawsar ১৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:২৬ পিএম says : 0
    Shame UN ,no resolution for genocide. Declare independet Arakan.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ