পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরো দুটি মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আগামীকাল প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর বিএনপি রাজধানীতে এই কর্মসূচি পালন করবে। অন্যদিকে সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ মিছিল করবে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লায় একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর আজ (গতকাল) ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে মিথ্যা মানহানি মামলায় ও বিশেষ জজ আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ওয়ারেন্ট ইস্যু হওয়ার সাথে সাথেই যুবলীগ-ছাত্রলীগের মিছিল প্রমান করে যে, সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশেই বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে। কারসাজির নির্বাচনসহ একের পর এক সরকারের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কর্মসূচি সফল করতে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে নিয়ে সরকারের নানামুখী সু² কুটকৌশলপূর্ণ কর্মকান্ড দেশবাসীর বুঝতে বাকী নেই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হয়রানী করে কোন পাতানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে দেয়া হবে না। দলনিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনেই কেবলমাত্র দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট ও গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলসমূহ অংশগ্রহণ করবে।
বিএনপি নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন-‘বিএনপির সঙ্গে আর কোন সংলাপ বা সমঝোতা হবে না।’ এ কথার মধ্য দিয়ে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ হয় দেশের বৃহৎ ও প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিকে বাদ দিয়ে একতরফাভাবে নির্বাচন করার জন্য আবারও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পূনরাবৃত্তি করার নীলনকশা আঁটছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর খায়েশ পূরণ হবে না, স্বপ্নবিলাস ঘুমের ঘোরেই কেটে যাবে। জনগণের শক্তি প্রবল বেগে আওয়ামী লীগের নির্বাচন নিয়ে কারসাজি প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, সরকার নিজেই তাল-বেতালের বানোয়াট কথাবার্তার ডামাডোলে একটি অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত ও আশঙ্কাজনক করে তুলেছে। এদের অত্যাচার-নিপীড়ণ-লুন্ঠন, ভোগ-লালসায় অস্থির থাকায় মানবিক বিবেচনাগুলো পদদলিত করার জন্য জনগণের সাথে সরকারের আকাশ-পাতাল দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এই ব্যবধান ঘোচাতে না পেরে তারা নির্বাচনের নামে বিভ্রান্তি, ধোঁয়াশা ও জনগণের চোখকে অন্যদিকে ফেরানোর জন্য কুটচালের আশ্রয় নিয়েছে। জনগণও কোটি কন্ঠের হুংকারে বজ্রের কানে তালা লাগিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সকল চক্রান্তজাল ছিঁড়তে রাজপথে জলোচ্ছাসের ঢেউ সৃষ্টি করে সরকারের চিরদিন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নবিলাসকে ধুলিস্যাৎ করে দেবে, সরকারকে ঘুমন্ত অবস্থাতেই হাঁটতে হবে।
বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি সরকারের কুটিল ছক বাস্তবায়নের অংশ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন লন্ডনে চোখের অপারেশন হয়েছে। সেখানে তিনি নিয়মিত চেকআপে আছেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি দেশে ফিরবেন। তাঁর দেশে ফিরতে আর বেশী বিলম্ব হবে না। ঠিক এ মুহুর্তে জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি সরকারের ক্রমাগত এক কুটিল ছক বাস্তবায়নের অংশ। যেখানে সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন, সন্ত্রাসী কায়দায় স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে আবেদন করে তাঁকে যেভাবে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, এখন জোর জবরদস্তি করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে, বিশ্বের ইতিহাসে এমন নজিরবিহীন ঘটনা কোথাও ঘটেনি। প্রধান বিচারপতির নাজেহালের দৃশ্য দেখে গোটা বিচার বিভাগ এখন শঙ্কিত হয়ে পড়ছে, এজন্য তাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। এই সুযোগে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে তাঁর বিরুদ্ধে যে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু, তা ভোটারবিহীন সরকারের সর্বোচ্চ স্থান থেকেই হুকুম হয়েছে বলে দেশবাসী বিশ্বাস করে। সন্ত্রাসী কায়দায় বিচারবিভাগকে তিনি একক কর্তৃত্বে নিয়ে আসার কাজ বাস্তবায়নের পথে অনেক দুর এগিয়ে এসেছেন। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সর্বোচ্চ আদালতকে নতজানু রাখার নীতি চলমান রাখতে বাতিকগ্রস্তদের মতো উদ্ভট উল্লাসে এখন সরকারপ্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে দমন করার অপচেষ্টায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। তিনি বিএনপি’র পক্ষ থেকে মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও জারিকৃত গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহারের জোর দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও অভিযোগ করে বলেন, কিছু অসাধু মানুষ বিএনপি মহাসচিবের নামে ভুয়া ফেইসবুক একাউন্ট খুলে বিভিন্ন ধরণের বক্তব্য পোস্ট করছে, যার সাথে বিএনপি মহাসচিবের কোন সম্পর্ক নেই। বেশ কয়েক মাস আগেও বিএনপি মহাসচিবের নামে এধরণের ভুয়া ফেসবুক আইডি খোলা হয়েছিল। তিনি পরিস্কার ভাষায় প্রতিবাদ করেছিলেন যে, তাঁর নামে কোন ফেসবুক আইডি নেই। যারা বিএনপি মহাসচিবের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি চালাচ্ছে তারা অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এধরণের অপকর্মে জড়িত আছে। তিনি দলের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব এর নাম ব্যবহার করে যারা ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে তাদের এধরণের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট দাবি জানান।
এ সময় সংবাদ সম্মেলেনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালি, দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানা উল্লাহ মিয়া, বিএনপি নেতা এম এম মালেক, কাজী আবুল বাশার, আব্দুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
যুবদল স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আগামীকাল দেশের সকল জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুইটি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এসব সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, শেষ বেলায় এসে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার একেবারে পাগল হয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের উপর জোর জুলুম তো চলছেই, তার উপর মামলা-হামলা আর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে দেশনেত্রীকে অবরুদ্ধ করার পায়তারা করছে সরকার। বিচার বিভাগের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ আর করায়ত্ত করার মাধ্যমে দেশে এক দলীয় শাসন ব্যাবস্থা কায়েম করতে চায় সরকার। নেতৃবৃন্দ হুশিয়ারি উচ্চারন করে বলেন, কোন কিছুতেই শেষ রক্ষা হবেনা জনগণকে নিষ্পেষণকারী এই অবৈধ সরকারের। সব বাধা বিঘœ পেরিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ অবশ্যই তাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।