নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী, কোলকাতা থেকে : ৫০ ওভার এবং টি-২০ ফরমেটের ম্যাচ মিলিয়ে সর্বশেষ ৫ ম্যাচের পাঁচটিতে জয় যাদের বিপক্ষে, তাদের সঙ্গে ৬ মোকাবেলায় অনেকে বাংলাদেশকেই রেখেছিল ফেভারিট লিস্টে। তবে টি-২০ ম্যাচ,আর আনপ্রেডিক্টেবল দলের স্টিকার লেগে আছে যাদের নামের সঙ্গে, সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে সুপার টেন এর প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে বড়ই অচেনা মনে হয়েছে। ধর্মশালা থেকে টনিক নিয়েও কাজ হয়নি বাংলাদেশ দলের। বরং ৫৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে। ম্যাচে দু’দলের ব্যবধান নির্নিত করেছে ফিল্ড রেস্টিকশনের প্রথম ৬ ওভার। পাকিস্তানের স্কোর এই পর্বে ৫৫/১, সেখানে বাংলাদেশ ৪৫/২। শুরুর এই ব্যবধানটাই ধীরে ধীরে বড় হয়েছে। ম্যাচ হারের কারণ হিসেবে ওই ৬ ওভারের পার্থক্যকেই সামনে আনছেন মাশরাফিÑ ‘পাকিস্তানের যে বোলিং অ্যাটাক, তাতে প্রথম ৬ ওভারকে টার্গেট করাটা কঠিন ছিল। চেষ্টা করেছিলাম একটা স্টেজে গিয়ে যেন রান রেটটা একটু বাড়ে। রান রেট যেন সমান সমান অবস্থায় থেকে যেন পরবর্তীতে চেজ করতে পারি। প্রথম ছয় ওভার থেকে খেলাটা ধরতে পারিনি। ওরা যে অ্যাটাকগুলো করেছে তাতে ওরা সাফল্য পেয়েছে। ওরা যখন প্রথম ছয় ওভারে যে শটগুলো খেলছিল, আমরা সে সোরটা নিতে পারিনি। তখন থেকেই আমরা পিছিয়ে গিয়েছি। ওরা যখন অ্যাটাক করেছে তখন আমরা পিছিয়ে যাই।’
প্রথমে ব্যাট করে ২০১/৫, এতো বড় স্কোর চেজ করাটা দুরূহ, তা মানছেন মাশরাফি। প্রতিপক্ষের এতো বড় স্কোরে ২ টপ অর্ডার আহমেদ শেহজাদ এবং মোহাম্মদ হাফিজ এবং দীর্ঘদিন পর মিডল অর্ডারে নেমে আফ্রিদির ব্যাটিংকে কৃতিত্ব দিয়েছেনÑ ‘আহমেদ শেহজাদ ও হাফিজ যখন ব্যাটিং করছিল তখন তারা ক্যালকুলেটিভভাবে রিক্স নিয়েছিল। তারা যে কাজটা করতে চেয়েছে, সে কাজটাতেই সফল হয়েছে। ছয় ওভার পর তাদের হাতে ম্যাচটি চলে যায়। ১৬০ কিংবা ১৭০ হলে আমরা ভিন্ন ফল হতে পারতো, কিন্তু ২০০ চেজ করা সব সময়ই কঠিন। ওরা যেই স্কোরটা করেছে সেটা হিউজ প্রেসার আমাদের জন্যে। শহীদ আফ্রিদি আগে ব্যাটিংয়ে এসেছেন। যে কাজটা করেছে, তাতে সে সফল। সে জন্য তাকে কৃতিত্ব দেয়া উচিত। এখনও আমি বলবো আমরা ভিন্ন কিছু করতে পারতাম।’
উইকেট রিডিংয়েও ভুল করেছেন, তা অবলীলায় স্বীকার করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি- ‘থেম যখন উইকেট দেখছিলাম তখন একটু ঘাস ছিল। মনে হচ্ছিল উইকেটে বল একুট ধরবে। আমাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ছিল।’ ২০২ চেজ করতে এসে ১৪৬ এ থেমেছে বাংলাদেশ। তবে এ নিয়ে ব্যাটসম্যানদের কাউকে অভিযুক্ত করছেন না মাশরাফিÑ ‘বোলিং কিংবা ব্যাটিংয়ে আমরা আপ টু মার্ক ছিলাম না। তবে আমি ব্যাটসম্যানদের বিষয়ে কিছু বলবো না। কারণ ২০০ রান চেজ করতে গেলে অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। আমির ও ইরফানকে চেজ করা যেকোনো উইকেট খুব কঠিন। থেম চার ওভারে আমরা খুব ভালো পজিশনে ছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে সাব্বির আউট হয়ে গেলে আমরা খুব খারাপ পজিশনে চলে আসি।’
শ্রীলংকার বিপক্ষে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী পাঁজরের পেশিতে টান পড়ার পর ম্যাচে ফিরতে পারেননি মুস্তাফিজ। দলের সঙ্গে আছেন, অথচ খেলানো হচ্ছে না দলের সেরা বোলারকে। এ নিয়ে পরিচ্ছন্ন কিছুই টীম ম্যানেজমেন্ট জানাচ্ছে না মিডিয়াকে। তবে খেলার মতো পরিস্থিতিতে থাকার পরও সুপার টেন এর প্রথম ম্যাচে মুস্তাফিজুরকে খেলানো হয়নি, তার বিস্তারিত বলতে চাননি মাশরাফি। পরবর্তী ম্যাচে দেখা যাবে তাকে, তা জানিয়েছেন মাশরাফিÑ ‘এ মুহূর্তে ও দলের সেরা বোলার। আমরা চাইছি ও যখন সুস্থ হবে তখন খেলবে। আজকের ম্যাচে ও বেশ ক্লোজ ছিল। খুব করে চাচ্ছিলাম আজকের ম্যাচটি ও খেলুক। কারণ থেম ম্যাচ সব সময়ই কঠিন। বিস্তারিত বলা আমার জন্যে কঠিন। আমি আসা করব। সামনের ম্যাচে আশা করব ও খেলবে।’
ইডেনে ২৫ বছর ১০৬ দিন পর খেলেছে বাংলাদেশ, অথচ একই ভাষাভাষী পশ্চিম বাংলার প্রধান ক্রিকেট ভেন্যুতে এসে দর্শকের অধিকাংশের সমর্থন ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। তাতে বিস্মিত হননি মাশরাফিÑ ‘সারপ্রাইজ হওয়ার কিছু নেই। আমরা যে একেবারে সাপোর্ট পাইনি সেটাও না।’
সুপার টেন এর প্রথম ম্যাচে ৫৫ রানে হার, সেমিফাইনালের পথটা কঠিন করে দিয়েছে বাংলাদেশের। তবে এই গ্রুপে ফেভারটি ভারত নিউজিল্যান্ডের কাছে বড় হার দিয়ে শুরু করেছে সুপার টেন। সে কারনেই এই গ্রুপটিকে গ্রুপ অব ডেথ বলছেন মাশরাফিÑ ‘এতোদূর টার্গেট করে খেলতে আসিনি আমরা। চাই ম্যাচে ফোকাস করতে চাই। আজ (গতকাল) আমরা ৫৫ রানে হেরেছি, অনেক বড় ব্যবধান। পরের ম্যাচে আমাদেরকে অবশ্যেই ভালো করতে হবে। এর চেয়েও ব্যাঙ্গালুরুতে আরো ফ্ল্যাট উইকেট হবে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন আপ আরও বেশি শক্তিশালী হবে। আমাদের জন্যে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে অপেক্ষা করছে। তাই ঠিকঠাকভাবে মনস্থির করতে হবে। এ গ্রুপের প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য কঠিন হবে। এ গ্রুপে চারটি দলই এসেছে যারা সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনাল খেলবে। আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো আমরা সেটাই আশা করছি। ভারত ও নিউজিল্যান্ড খুব ভালো ফর্মে আছে। ভারত সর্বশেষ ১২ ম্যাচের ১০টিই জিতেছে। অস্ট্রেলিয়া তো সব সময়ই কঠিন দল। আমাদের জন্য তিন ধরনের পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।’
টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচ
তারিখ প্রতিপক্ষ ভেন্যু সময়
২১ মার্চ অস্ট্রেলিয়া বেঙ্গালুরু রাত ৮টা
২৩ মার্চ ভারত বেঙ্গালুরু রাত ৮টা
২৬ মার্চ নিউজিল্যান্ড কোলকাতা বেলা সাড়ে ৩টা
*প্রতিটি ম্যাচই দেখা যাবে বিটিভি/জিটিভি/মাছরাঙা/স্টার স্পোর্টস-১/২/৩
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।