Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শেরপুরের গারো পাহাড়ে হাতি নিধন চলছেই

| প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শেরপুর থেকে মো: মেরাজ উদ্দিন : শেরপুরের সীামন্তাবর্তী গারো পাহাড়ে হাতি নিধন চলছেই। হাতির জন্য পাতা হচ্ছে বৈদ্যুতক মৃত্যুর ফাঁদ। আর সে ফাাঁদে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে একের পর এক হাতি। গত এক বছরে শুধুমাত্র ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলাতেই মারা পড়েছে কমপক্ষে ৮টি হাতি। নির্বকারে হাতি নিধন চললেও প্রশাসন হাতির মৃত্যুকে কখনও বিষক্রিয়ায়, কখনও ইউরিয়া খেয়ে হাতির মৃত্যু ইত্যাদি বলে এর সঙ্গে জড়িতদের রেহাই দিচ্ছেন বলে পরিবেশবাদী অনেক সচেতন মহল দাবী করছেন। অথচ জানমাল রক্ষার জন্য লাইট জালিয়ে হাতি তাড়ানোর কথা থাকলেও এখন সেই জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জিআই তার দিয়ে বেড়া বানানো হচ্ছে। আর হাতি এলেই সেখানে দেয়া হচ্ছে বিদ্যুতের সংযোগ। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বন্য হাতি।
এরই ধারাবাহিকতায় ৭অক্টোবর রাতেও শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবতী বালিজুড়ি এলাকাতে আবারও জেনারেটরের তারে জড়িয়ে ভারত থেকে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসা এক বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি নির্মমভাবে এ হাতিটিকে খুন করে। ৮ অক্টোবর রোববার সকালে বালিজুড়ি অফিস পাড়া এলাকার ২০০৪ সালের সামাজিক উডলট বাগান সংলগ্ন নেপালি টিলা নামক স্থান থেকে স্থানীয় বন বিভাগ মৃত হাতিটি উদ্ধার করে।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের বালিজুড়ি সদর বিটের বিট কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, স্থানীয় জনসাধারণ তাদের জানমাল রক্ষা ও ফসল রক্ষার্থে তাদের জমির আশেপাশে জেনারেটরের মাধ্যমে জিআইতার দিয়ে বৈত্যুতিক আর্থিংয়ের সৃষ্টি করেছে। ধারণা করা হচ্ছে জেনারেটরের তারে জড়িয়েই হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত আনুমানিক ১০টার সময় এ ঘটনা ঘটে। মার্দি প্রকৃতির লম্বা ৭ ফুট ও প্রস্থ্য ৭ ফুট। তিনি আরও বলেন, গত ৪ মাসে এনিয়ে অত্র বিট এলাকায় তিনটি হাতির মৃত্যু হয়েছে। এব্যাপারে তিনি শ্রীবরদী থানায় মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন। বালিজুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে ময়মনসিংহ অফিসে রয়েছি। একের পর এক হাতির মৃত্যুর ঘটনা অনেকটাই দুঃখ্যজনক। এ বিষয়ে স্থানীয় বিট কর্মকর্তাকে থানায় মামলা দায়ের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার রাঙ্গাজান এলাকা থেকেও উদ্ধার করা হয় একটি হাতির মরদেহ। সেই হাতিটির একই ওপায়ে মারা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এদিকে স্থানীয় গ্রামাসী হাতির মৃত্যুর ভিন্ন কারনের কথা বলে বিভ্রান্ত করে তারা রেহাই পাচ্ছে। বালিজুড়ি এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা নুর হক বলেন, মৃত্যু হাতিটির কানে আঘাতের চিহ্ননো রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে আঘাতের কারণেই হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হাতিটির পিঠেও গুলি চিহ্ননো রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। শ্রীবরদী থানার ওসি রেজাউল হক বলেন, বিষয়টি শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বন বিভাগ কর্তৃক এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল বারেক বলেন, মত্যু হাতিটির ময়না তদন্তের পর বোঝা যাবে হাতিটি কি ভাবে মারা গেছে।
উল্লেখ্য গত ৫ অক্টোবর বালিজুড়ি রাঙ্গাজান এলাকার শালবাগান সংলগ্ন বন বিভাগের পতিত জমি থেকে একটি বন্য হাতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ১৩ আগস্ট শ্রীবরদী উপজেলার রানী শিমূল ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষা পাহাড়ি হলুয়াহাটি গ্রামে ইউরিয়া সার খেয়ে বিষক্রিয়ায় আরও এক বন্যহাতির মৃত্যু হয়। এদিকে বন্য হাতির একের পর এক হামলা ও বাড়ি ঘরে ভাংচুরের ঘটনায় আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছে সীমান্ত জনপদের মানুষ। স্থানীয়রা জানায়, এ মৌসুমে প্রতি বছরই খাদ্যের সন্ধানে ভারত থেকে লোকালয়ে নেমে আসে বন্য হাতির দল। দিনে বন্য হাতির দল পাহাড়ে অবস্থান করলেও সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথেই লোকালয়ে নেমে এসে তান্ডব চালায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাতি

১২ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ