Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জিহাদীদের বিরুদ্ধে সিরিয়ায় তুরস্কের সামরিক অভিযান শুরু

ভয়েস অব আমেরিকা : | প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তায়েব এরদোগান সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে তুরস্কের সামরিক অভিযান শুরুর কথা ঘোষণা করেছেন। শনিবার দলের সদস্যদের উদ্দেশে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, এ মুহূর্র্তে ইদলিবে জরুরি অভিযান চলছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
ইদলিব এলাকায় জিহাদিদের নিয়ন্ত্রণের অবসান ঘটানোই তুরস্কের সামরিক অভিযানের লক্ষ্য। ইদলিবের বেশিরভাগ এলাকাই জিহাদি তাহরি আল শাম জোটের নিয়ন্ত্রণে। সাবেক আল কায়েদার বেশিরভাগ সদস্য নিয়ে এ জোট গঠিত । গত বছর আল নুসরা ফ্রন্ট নাম পরিবর্তন করে তারা তাহরির আল শাম নাম ধারণ করে।
এরদোগান বলেন, আলেপ্পো থেকে পালিয়ে ইদলিবে আসা আমাদের ভাইদের সাহায্য করতে হবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং তা চলবে। এফএসএ (ফ্রি সিরিয়ান আর্মি) বর্তমানে এ অভিযান চালাচ্ছে। সেখানে আমাদের সৈন্যরা নেই। কিছু স্থানীয় খবর অনুযায়ী, এফএসএ বাহিনী ইদলিবে প্রবেশ করতে শুরু করেছে এবং জিহাদিদের সাথে যুদ্ধ লিপ্ত হয়েছে।
বাব আল-হাওয়া সীমান্ত অতিক্রম পথের উত্তরে কাফর লুসিয়েন নামে সিরিয়ার এক গ্রামে ৭ অক্টোবর তোলা ছবিতে দেখা যায়, সিরিয়ার সাথে সীমান্তে তুরস্ক সরকারের নির্মিত তিন মিটার উঁচু দেয়াল ঘেরা সুরক্ষিত স্থানের পাশে একটি ক্রেন রাখা আছে। ব্রিটেন ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস মনিটর বলে, তুরস্কের সামরিক বাহিনীর ক্রেনগুলো অভিযান চালানোর প্রস্তুতিতে সীমান্তে তুরস্কের নির্মিত নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙ্গে ফেলতে শুরু করেছে।
শক্তিবৃদ্ধি
তুরস্কের সামরিক বাহিনী কয়েক সপ্তাহ ধরে ইদলিব সীমান্তে সৈন্যশক্তি বৃদ্ধি করেছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের জন্য তুরস্ক সিরিয়া সীমান্তে তাদের নির্মিত দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেছে। শনিবার থেকে তাদের এ অভিযান শুরু হয়েছে।
এরদোগান বলেন, বর্তমান অভিযানে রাশিয়া বিমান সমর্থন দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়া ও ইরানের সমর্থনে আস্তানা বৈঠকে ইদলিবে একটি অসামরিকীকৃত এলাকা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়। তাহরির আল শাম এ পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছে ও সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার শপথ নিয়েছে।
আংকারা যদিও সিরীয় বিরোধী দলের সমর্থক , কিন্তু সিরিয়ার ব্যাপারে দেশটি তেহরান ও মস্কোর সাথে ক্রমবর্ধমান ভাবে সহযোগিতা করছে। এরদোগান সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ অবসানে গত দশদিনে তার ইরানি ও রুশ প্রতিপক্ষের সাথে বৈঠক করেন।
বর্তমানে আংকারা পলিসি সেন্টারের প্রধান সাবেক তুর্কি রাষ্ট্রদূত উনাল সেভিকজ বলেন, আস্তানাইদলিবে অসামরিকীকৃত অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় ঐকমত্য তুরস্কের প্রতি বড় ধরনের হুমকি পরিহারে সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেন, আংকারা সরকারের আশংকা যে সিরিয়া সরকার ইদলিবে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালালে তুরস্ক মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে যেমনটি হয়েছিল আলেপ্পোর ক্ষেত্রে। কারণ, সিরীয়দের তখন তুরস্কে প্রবেশ ছাড়া আর পথ থাকবে না। ৭ অক্টোবর তুর্কি ট্যাংকগুলোকে তুরস্কের হাতে প্রদেশের ইসকেন্দারান জেলায় দেখা যায়।
মানবিক বিপর্যয়
বর্তমানে তুরস্কে ইরাক ও সিরিয়ার ৩০ লাখ উদ্বাস্তু রয়েছে। বহু জিহাদি ইদলিব ভিত্তিক হওয়ায় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে তুরস্ক শুধু মানবিক সংকট নয়, নিরাপত্তা হুমকিরও সম্মুখীন হতে পারে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তুরস্কের সামরিক বাহিনী ও সিরিয়ার বিরোধীরা ইদলিবের নিরাপত্তার দিকে নজর দেবে, অন্যদিকে ইরান ও রাশিয়া পশ্চাদভাগ নিয়ন্ত্রণ করবে।
গত বছর তুর্কি সামরিক বাহিনী এফএসএ-র সমর্থনে ইসলামিক স্টেট ও কুর্দিদের সীমান্ত থেকে বিতাড়িত করতে সিরিয়ায় প্রবেশ করে। এতে রাশিয়ার মৌওন সমর্থন ছিল। তারপর থেকে সিরিয়ায় তুরস্কের বড় ধরনের সামরিক উপস্থিতি রয়েছে।
এরদোগান শনিবার বলেন, আমাদের সিরিয়া সীমান্তে সন্ত্রাসীদের কোনো করিডোর তৈরি করতে দেব না। পর্যবেক্ষকরা বলেন, তার এ হুঁশিয়ারি লক্ষ্য জিহাদ ও সিরীয় কুর্দি মিলিশিয়া সংগঠন ওয়াইপিজি উভয়েই।



 

Show all comments
  • ৯ অক্টোবর, ২০১৭, ৯:৪০ এএম says : 0
    জিহাদ দ্বারা কি বোজিয়েছেন?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ