Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেনা উপস্থিতি ছাড়াই সিরিয়ার ইদলিবে অভিযান চালাবে তুরস্ক এরদোগান

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রুশ বিমান হামলায় নিহত অন্তত ১২০
কোনও ধরনের সেনা উপস্থিতি ছাড়াই সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। তিনি বলেছেন, সিরিয়া সীমান্তকে সন্ত্রাসীদের জন্য করিডোর হতে দেওয়া হবে না। ইদলিবে একটি অভিযান শুরু হয়েছে। তবে এর সঙ্গে তুর্কি সেনারা যুক্ত নেই। তুরস্ক সমর্থিত ফ্রি সিরিয়ান আর্মি এ অভিযান পরিচালনা করছে। গতকাল এজিয়ান প্রদেশে নিজ দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি’র পরামর্শ এবং মূল্যায়ন সভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইদলিবের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। কারণ ইদলিবের ভাইদের প্রতি আমাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। তাদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে তুরস্কের প্রতি রাশিয়ার সমর্থন রয়েছে। এই অভিযানে তারা আকাশপথে আমাদের সহযোগিতা করবে। তুর্কি সেনারা আমাদের সীমান্ত থেকেই পুরো অভিযানের তত্ত¡াবধান করবেন।’ গতকাল সিরিয়া সীমান্তে সেনা উপস্থিতি বৃদ্ধি করে তুরস্ক।
এর আগে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সামরিক অভিযান চালায় আঙ্কারা। ওই সময় তুরস্কের ট্যাংক ও সাঁজোয়া বহর প্রবেশের পর তুর্কি সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হারায় আইএস। কুর্দিপন্থী বিদ্রোহী ও আইএস দমনের লক্ষ্যে ওই অভিযান শুরু করে আঙ্কারা। এর অংশ হিসেবে ৩ সেপ্টেম্বর তুরস্কের কিলিস প্রদেশ থেকে সিরিয়ায় প্রবেশ করে তুরস্কের সামরিক বহর। তুর্কি সেনারা প্রবেশের পরই সেখান থেকে পালাতে শুরু করে আইএস সদস্যরা। এরপর ৪ সেপ্টেম্বর রোববার সীমান্ত থেকে আইএসের মূলোৎপাটনের ঘোষণা দেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম।
১৯৮০ সাল থেকে তুরস্কের ভূখন্ডে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে লড়াই চালিয়ে আসছে কুর্দিপন্থী বিদ্রোহীরা। যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত এ কুর্দি বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করে আঙ্কারা। তাদেরকে তুরস্কের অখন্ডতার প্রতি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। স¤প্রতি ইরাকি কুর্দিস্তানে স্বাধীনতা ইস্যুতে গণভোট আয়োজনের তীব্র সমালোচনা করে আঙ্কারা। ওই গণভোটকে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের তৎপরতার ফলাফল বলে মন্তব্য করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। মধ্যপ্রাচ্যের আরেক প্রভাবশালী দেশ ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ইরাকি কুর্দিস্তানের স্বাধীনতার দাবির পেছনে মূলত দায়ী ‘বিদেশি বিচ্ছিন্নতাবাদী পরিকল্পনা’।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কুর্দি বিদ্রোহী ও আইএসের মতো গোষ্ঠীগুলোকে নিবৃত্ত করা এবং সিরিয়ায় নিজেদের অবস্থান সংহত করতেই আঙ্কারা এ অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাশিয়ার বিমান হামলায় নিহত ১২০
এদিকে রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চল দেইর আজ জোর প্রদেশে রুশ বিমান হামলায় বিদেশি যোদ্ধা ও ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর অন্তত ১২০ জন সদস্য নিহত হয়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় পৃথক হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
রুশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেইর আজ-জোর প্রদেশের আল-মায়াদিন এলাকায় একটি কমান্ড পোস্টে রাশিয়ার বিমান হামলায় অন্তত ৮০ জন আইএস সদস্য নিহত হয়েছে। আর একই প্রদেশের সীমান্ত শহর আল বুকামালে আরও ৪০ যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
প্রতিবেশী দেশ ইরাক থেকে পালিয়ে আল বুকামাল শহরে আশ্রয় নেওয়া অনেক বিদেশি ভাড়াটে যোদ্ধা রুশ অভিযানে নিহত হয় বলে জানিয়েছে রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাশিয়ার মতে, এসব বিদেশি যোদ্ধাদের অনেকেই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশ, তিউনিশিয়া এবং মিসরের নাগরিক।
সিরিয়ায় অভিযানে বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে আসছে রাশিয়া। তবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে রাশিয়ার বিমান হামলায় ১৪ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিনটি শিশুও ছিল। সূত্র: রয়টার্স ও আল জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ