Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আগামী নির্বাচন অনিশ্চিত -গয়েশ^র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ক্ষমতাসীন সরকারকে অতি দুর্বল আখ্যা দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ^র চন্দ্র রায় বলেছেন, ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করার ক্ষমতা শেখ হাসিনার নেই। তবে আগামী নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নির্বাচন সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। একটি নির্বাচনী ধোঁয়া তুলে বিএনপি এবং জনগণকে অন্ধকারে রাখার চক্রান্ত হচ্ছে। গতকাল (সোমবার) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ মিশনের গুরুত্ব’ শীর্ষক এই এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সুইডেন শাখা।
আলোচনা সভায় গয়েশ^র চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়না। আন্দোলনের শিরোপা যাদের মাথায় উঠবে বিজয়ী তারাই হবে। কারণ হাসিনাকে কেউ আশ্বস্ত করতে পারেনি যে ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে গেলে ধরা খেয়ে ফেরত আসতে পারবে। সরকারের আয়ু আর বেশিদিন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরকে ক্ষমতা থেকে যেতে হবে। অবিলম্বে নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে সব দলের অংশগ্রহণ এবং ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন অবশ্যই জরুরি।
ক্ষমতাসীন সরকার ক‚টনৈতিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সাথে বেশি চালাকি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে ধরা খেলেও প্রধানমন্ত্রীর কোনো কিছু আসে যায়না। তবে এর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলেছেন যাচ্ছেন। বিশ্বের কোন পরাশক্তিই এখন বাংলাদেশের পক্ষে নেই। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন, আজকে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা আসছে। এ নিয়ে আমাদের মাঝে ইমোশন কাজ করছে। কিছুদিন পরে ইমোশন থাকবেনা। কারণ ইমোশন অলওয়েজ স্ট্রংগার দ্যান রিয়েলিটি (আবেগের চেয়ে বাস্তবতা শক্তিশালী)। বাস্তবতা বুঝতে পারলে আমরা আজকের মতো সেদিন কথা বলবোনা। কারণ রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য স্থায়ী সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। যে পরিমাণ রোহিঙ্গা এসেছে তাদেরকে ফেরত পাঠাতে যদি মিয়ানমারকে চাপে না রাখা যায়, আন্তর্জাতিক বিশ্বকে যদি চাপে না রাখা যায় তবে তা সঙ্কট হয়ে দাঁড়াবে। আজকে বৃহত্তম শক্তিগুলো মিয়ানমারের কুকীর্তিকে সমর্থন করছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতও মিয়ানমারের কাছে আত্মসমর্পন করছে। কারণ মিয়ানমার থেকে একজন রোহিঙ্গাও যেন তার দেশে যেতে না পারে তারা সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে।
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, মানিবকভাবে আমরা বিষয়টি অবশ্যই দেখবো। সে হিন্দু না মুসলিম না অন্য কেউ? বিষয়টি হলো মানুষের ওপর নিষ্ঠুর আচরণ। তাদেরকে স্বদেশে বসবাস করতে দেবেনা এটাকে অবশ্যই আমরা ঘৃণা করবো এবং প্রতিবাদ করবো। আমরা যুদ্ধ করবোনা! কিন্তু বিদেশে আমরা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিবো। বিদেশের মাটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবো। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবোনা। তবে এই যে এতোবড় সেনাবাহিনী এটা কি শোভা বর্ধনের জন্য? নাকি শান্তি রক্ষার জন্য?
গয়েশ্বর বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় আমরাও প্রতিবেশি দেশ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আমরা সেখানে প্রশিক্ষণ নিছি। নিজ দেশে ফেরত এসে দেশের জন্য যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু ভারত সরকার যদি শুধু আমাদেরকে খাওয়াইত, পড়াইত আর রেশন দিত তাহলে তো আমরা এটা করতে পারতামনা। আজকে রোহিঙ্গারাও এসেছে। মানবিক কারণে তাদেরকে আমাদের আশ্রয় দিতেই হবে। তবে এই মানবিকতা যেন কারো নোবেলের উপলক্ষ্য না হয়। হাজারো মানুষের কান্না আর নির্যাতনকে সম্বল করে তিনি নিজের নোবেলের জন্য পাগল। নীলক্ষেত আর বাংলাবাজারে তো অনেক নোবেল পাওয়া যায়, সেখান থেকে কিনে নিলেই হয়। শান্তির জন্য কেউ নোবেল পাইলে তো আগে সন্তু লারমা পাইবো। সেও আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অনেক সন্ত্রাস করেছে।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে অশান্তি, গুম, খুন ও মিথ্যাবাদির জন্য শেখ হাসিনা নোবেল পেতে পারেন। বিএনপি নেতা গয়েশ^র চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার অতিমাত্রায় দুর্বল সরকার। এ জন্যই তাদের হাঁকডাক ও চেঁচামেচি বেশি, হুমকি বেশি। কারণ দুর্বল লোকই চিৎকার করে বেশি। আসলে বর্তমান সরকারের মতো দুর্বল সরকার পৃথিবীতে কোথাও আছে কিনা জানা নেই। কিন্তু তারা বহাল তবিয়তে আছে। তবে বেশিদিন সময় নাই।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডনে অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা বলেন বেগম খালেদা জিয়া আর আসবেননা তারা অপেক্ষা করুন। আর দেখুন প্রধানমন্ত্রী নিজেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসেন কিনা? কারণ পরিবেশ পরিস্থিতি আপাতত তার কাছে ভয়ের কারণ না হলেও তিনি যখন হাটেন নিজের ছায়া দেখে ভয় পান।
সুইডেন বিএনপির উপদেষ্টা ও সাবেক যুবদল নেতা মিজান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

১৬ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ