Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বার্মিজ সেনাদের বিচার ভিকটিমদের গভীর ক্ষতকে কিছুটা নিরাময় করবে

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাখাইনে যারা পরিবারের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন; তাদের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য বার্মিজ সেনাদের বিচার অপরিহার্য। ন্যায়বিচারের অনুভূতি কিছুটা হলেও ভিকটিমদের গভীর ক্ষতকে কিছুটা হলেও নিরাময় করবে। এমনি ঘটনার শিকার আব্দুল আজিজের বয়স মাত্রই নয় বছর। কিন্তু তার দুর্দশাগ্রস্ত দৃষ্টিভঙ্গি এবং কঠোর বাহ্যিক আচরণ তাকে অনেক বেশি বয়স্ক বানিয়ে দিয়েছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে-তিন সপ্তাহ আগে বার্মিজ সৈন্যদের হাতে সে তার বাবা-মা, ভাইবোনদের খুন হতে দেখেছে এবং এখন তাকে তার ছয় বছর বয়সী ভাই জাহিদকে দেখাশোনা করতে হচ্ছে। সাত সদস্যের পরিবার এই দুই ভাই কেবল জীবিত আছে। গত ৩০ আগস্ট বার্মিজ সৈন্যরা তাদের তুলারতুলি গ্রামে শত শত রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর হামলা করলে আব্দুল আজিজ তার ভাই জাহিদকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এসময় সৈন্যরা তাদের উপর গুলি ছুড়লে তাদের সঙ্গে সাঁতাররত কয়েকজন নিহত হয়। নদী পার হওয়ার আগে পাশের জঙ্গল থেকে তারা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করে তাদের বাবা-মা ভাই-বোন হত্যার দৃশ্য। তাদের ঘরের পাশেই সৈন্যরা প্রথম তাদের পিতা মুফিজকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করে এবং তারপর একে একে তাদের মা রাবু (৩০), তাদের ভাই জানাতুল্লাহ (১০) এবং শাবুল্লাহ (৫) ও তাদের বোন মমতাজ (৩)। তাদের সবাইকে হত্যার পর বাড়িটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল প্রায় ১০ বছর বয়সী আলী। আলীর বাবা ও তিন ভাইবোন বার্মিজ সামরিক বাহিনীর গণহত্যার শিকার হয়েছে। এই হত্যার দৃশ্য দেখার পর থেকে আলী আর কোনো কথা বলেনি বলে তার আত্মীয়রা জানান। পৈশাচিক নিষ্ঠুরতা তাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। ইউনিফর্ম পরিহিত এসব সৈন্যরা অগণিত শিশুকে নির্মমভাবে বিভিন্ন কায়দায় হত্যা করেছে। ইউনিসেফের তথ্যানুযায়ী, প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে পালিয়ে গেছে এবং তাদের অধিকাংশই শিশু। এই শিশুরা মানসিকভাবে গভীর আঘাতপ্রাপ্ত এবং তাদের এসব ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তাদের জীবনকে বিষাদগ্রস্ত করে তুলেছে। এই অপরাধের জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। যারা তাদের পরিবারের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন; তাদের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য এই বিচার অপরিহার্য। ন্যায়বিচারের অনুভূতি কিছুটা হলেও তাদের গভীর ক্ষতকে নিরাময় করবে। হিউম্যান রাইট ওয়াচ।



 

Show all comments
  • ১ অক্টোবর, ২০১৭, ৪:৫৮ পিএম says : 0
    yes
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ