Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফ্লাইওভার এলিভেটেড এক্সপ্রেস না করেও সড়কে যাতায়াত চাহিদা পূরণ করা সম্ভব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে না করেও রাজধানী ঢাকার বর্তমান সড়কে যাতায়াত চাহিদা পূরণ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ আয়োজিত ‘গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক এক সভায় বিশেষজ্ঞরা এ অভিমত প্রকাশ করেন। বক্তারা বলছেন, রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহন ও হাঁটার পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে। গণপরিবহন, হাঁটা ও রিকশার মাধ্যমে ৯৩ শতাংশ চলাচল হলেও পরিকল্পনায় এই মাধ্যমগুলোর প্রাধান্য নিশ্চিত করা হয়নি। এ অবস্থায় সরকার শুধু ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সেপ্রেসওয়ের দিকে নজর দিচ্ছে। অথচ এই মাধ্যমগুলো ছাড়াও রাজধানী ঢাকার বর্তমান সড়কে যাতায়াত চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রয়োজন দ্বিতল বাস ও তার জন্য পৃথক লেন চালু করা।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল হক। এ সময় তিনি বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে বিকল্প ব্যবস্থা নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু গণপরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করলেই হবে না। রেল, নৌ, সাইকেল, রিকশা এবং হাঁটার সঙ্গে এর সমন্বয় করতে হবে। পরিকল্পিত ভূমি ব্যবহারের মাধ্যমে যাতায়াতজনিত সমস্যার সমাধান করতে হবে। এজন্য বিচ্ছিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ না করে সমন্বিত প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। নগর পরিকল্পনায় ব্যক্তিগত গাড়িকে প্রাধান্য দেওয়া হলে দূষণ, জ্বালানি ব্যয়, যানজট বৃদ্ধি পাবে। এজন্য প্রয়োজন একজন দূরদর্শী অভিভাবক।
সভায় বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবলু মকসুদ বলেন, ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবসের প্রচারণা আরও বাড়াতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষায় এ দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিবসটি মাসে এবং সপ্তাহে একদিন পালন করা যেতে পারে।
নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ভালো না হওয়ায় যানজট আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণ মানুষ, বাস ড্রাইভার সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। পরিবহন পরিকল্পনায় যাতায়াত ব্যয় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেলায়েত হোসেন বলেন, আমাদের পরিকল্পনা শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক। কিছু উন্নয়ন অন্যান্য শহরেও করা উচিত। যা বিকেন্দ্রীকরণে ভূমিকা রাখবে। প্রত্যেক এলাকায় মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করলে যাতায়াত চাহিদা কমে আসবে। পাশাপাশি যানজটও কমবে।
সভার সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমরা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করার চেষ্টা করছি। ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবসের সঙ্গে সরকার ২০১৬ সাল থেকে সম্পর্কিত হয়েছে। দূষণমুক্ত, যানজটমুক্ত নগরের জন্য প্রয়োজন আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা। নগর উন্নয়নে পরিকল্পনাবিদদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ সব অংশীদারকে নিয়ে স্কুলবাস ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করলে যানজট কমবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রফেসর আদিল মুহাম্মাদ খান প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্লাইওভার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ