Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করুন

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের ওপর নিষ্পেষণ বন্ধ করতে হবে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমার সরকারকে। নিজেদের দায়িত্ব থেকে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে করুণ অবস্থায় বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্যে। এমন আহŸান জানিয়ে জাপানের অনলাইন নিক্কি এশিয়ান রিভিউয়ে প্রকাশিত হয়েছে একটি সম্পাদকীয়। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা জীবন অতিবাহিত করছেন এক মারাত্মক সঙ্কটের মুখে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মধ্যকার সংঘর্ষের জের ধরে কমপক্ষে চার লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী দেশে। আগস্টের শেষের দিকে রাখাইনে নিরাপত্তা চৌকিতে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থিদের হামলার প্রেক্ষিতে শুরু হয় বর্তমানের সঙ্কট। এর প্রেক্ষিতে সশস্ত্র বিদ্রোহকে সমূলে বিনাশ করতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তারা টার্গেট করে নিরস্ত্র সাধারণ রোহিঙ্গাদের। এ কৌশলকে মানবাধিকার বিষয়ক গ্রæপগুলো জাতি নিধন বলে আখ্যায়িত করেছে। রোহিঙ্গা জনগোীর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধে আহŸান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরাস। এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল খুঁজে বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমার হলো বৌদ্ধ সংখ্যাগরি দেশ। তাই এ দেশটিতে জনগণের মধ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম বিরোধী কট্টর একটি অবস্থান রয়েছে। এ ধারাটিই সরকারের হৃদয়ে প্রোথিত। তাই তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করে। তাদেরকে অব্যাহতভাবে নাগরিকত্ব দেয়া থেকে বিরত রয়েছে। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেয়ার যে সুস্পষ্ট রীতি রয়েছে তাতে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, মিয়ানমারের কার্যত নেত্রী অং সান সুচি সেই নীতিকে বিব্রত করছেন। তিনি সংখ্যালঘু নয়, সংখ্যাগরিরে পক্ষ নিয়েছেন। তা না হলে তিনি দেশে প্রাধান্য বিস্তার করা বৌদ্ধ সমাজের কাছ থেকে উল্টো প্রতিক্রিয়া পাবেনÑ এই ভয়ে আতঙ্কিত তিনি। ওই সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়, ২০১৬ সালের মার্চে মিয়ানমারের ক্ষমতা নেয় সুচির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি। দেশ যাতে আবার সামরিক শাসনে ফিরে না যায় সেদিকে দৃষ্টি রাখা উচিত সরকারের। কিন্তু তাই বলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এখন সবচেয়ে ভয়াবহ যে মানবিক সঙ্কট চলছে সে বিষয়ে চোখ বন্ধ করে রাখা হবে ভুল। তাই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বন্ধ করতে কাজ করা উচিত সুচি ও মিয়ানমার সরকারের। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নৃশংসতার প্রতিবাদে এরই মধ্যে মিয়ানমারে হামলা চালাতে জঙ্গিদের প্রতি আহŸান জানিয়েছে সন্ত্রাসী গোী আল কায়েদা। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের উচিত হবে এমন পদক্ষেপ নেয়া যাতে মিয়ানমার সরকার পুনরেকত্রীকরণ ও সহাবস্থানের পথ বেছে নেয়। এ বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেন নি সুচি। তার পরিবর্তে তিনি ১৯ শে সেপ্টেম্বর ন্যাপিদোতে বক্তব্য রেখেছেন। যদিও তাতে তিনি মানবাধিকার রক্ষার গুরুত্বের কথা পুনরুল্লেখ করেছেন এবং জাতির পুনরুজ্জীবনের আহŸান জানিয়েছেন, তবু তিনি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিষ্পেষণ বন্ধে দৃঢ় প্রতিশ্রæতি দিতে পারেন নি। এর আগে রাখাইনে সহিংসতা তদন্তের জন্য মিয়ানমার সরকার জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে একটি এডভাইজরি কমিশন বা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করে। আগস্টে ওই কমিশন তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ প্রকাশ করে। এর মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার সুপারিশ অন্যতম। এক্ষেত্রে সুচি সরকারের প্রথম কাজ হওয়া উচিত ওই প্যানেলের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা। নিক্কি এশিয়ান রিভিউ।



 

Show all comments
  • আঃ কাদের ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৯:২৮ এএম says : 0
    h,m
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আনান কমিশন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ