পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবশেষে স্বামীহারা চলৎ শক্তিহীন ছয় সন্তানের জননী মনোয়ারা বেগম-এর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বরিশাল-৩ আসনের এমপি শেখ টিপু সুলতান। ইতোমধ্যে মনোয়ারাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, মনোয়ারার হীপ জয়েন্ট ভাঙ্গা। পাশাপাশি সে অর্ধাহার ও অনাহারে অপুষ্টিতে ভুগছে।
তিন পুলিশ ও এক স্কুল শিক্ষিকার মা মনোয়ারা জীবন সায়হ্নে এসে ভিক্ষাবৃত্তি করেও পেট চালাতে পারছিলেন না । ভিক্ষা করতে গিয়ে পা ফসকে পড়ে গিয়ে মাস ছয়েক আগে তার কোমরের হীপ জয়েন্টও ভেঙে যায়। ফলে তিনি প্রায় চলাচল করতেন শক্তিহীনভাবে। কিন্তু তার কোন চিকিৎসা হয়নি।
তবে বরিশালের বাবুগঞ্জের ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের সহায় সম্বলহীন মনোয়ারার ভাগ্যের নির্মম পরিহাস হচ্ছে তার তিন পুত্র পুলিশ কর্তা এবং এক মাত্র কন্যাও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। অপর দুই পুত্রের মধ্যে একজন ব্যবসা করছেন। অপরজন নিজের কেনা ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। শুধুমাত্র ইজিবাইক চালক পুত্রই মাঝে মধ্যে মায়ের কিছুটা খোঁজখবর রাখছেন বলে দাবি করলেও অনাহার-অর্ধাহারই ছিল এ বিধবার নিয়তি। তার ভাগ্যে আজ পর্যন্ত জোটেনি কোন বিধবা ভাতা কিংবা বয়স্ক ভাতাও।
এমনকি দৈনিক যেখানে একবেলা পেট ভরে আহারই যেখানে দুস্কর, সেখানে চিকিৎসার প্রশ্ন অনেকটাই অবান্তর। ফলে হীপ জয়েন্ট ভাঙ্গা মনোয়ারা বিছানা থেকেই উঠতে পারছিলেন না। গত ছয় মাসের অধিক তার ভাগ্যে ভিক্ষাও জুটছিল না। সোনার ছেলে মেয়েরা গর্ভধারিনী মায়ের কোন খোঁজ খবর না নেয়ায় দুমুঠো আহারের সন্ধানে এতদিন সে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করত। গত কয়েকমাস তিনি এতটাই মানবেতর জীবন যাপন করেছে যে, দিনে এক বেলা ভাতও জুটত না। এমন হৃদয় বিদারক বাস্তবতা নিয়েই এখনো বেঁচে আছেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের মৃত আইয়ুব আলী সরদার এর সত্তরোর্ধ স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। তবে শেষ পর্যন্ত স্থানীয় এমপি তার চিকিৎসা ও ভরন পোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। সরকারী চাকুরীরত মনোয়ারার পুত্র-কন্যাদের খোঁজ খবর করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে বিষয়টি অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যও ইউএনওকে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় এমপি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনোয়ারা বেগমের স্বামী মৃত আইয়ুব আলী সরদার সাধারণ কৃষক হলেও নানা প্রতিকুলতা অতিক্রম করে ৬ সন্তান নিয়ে মোটামুটি ভালোভাবেই দিন কেটেছে । ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর আইয়ুব আলী সরদার মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছয় সন্তানের সকলকেই কম বেশি লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন। যার মধ্যে জসিম উদ্দিন ও নেছার উদ্দিন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে এসআই পদে চাকুরীরত আছেন। ফারুক হোসেন ইতোমধ্যে অবসর নিয়েছেন পুলিশ বাহিনী থেকে। একমাত্র কন্যা মরিয়ম সুলতানা স্থানীয় একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক। অন্য দুই পুত্র শাহাবউদ্দিন ব্যবসা এবং গিয়াস উদ্দিন নিজস্ব ইজি বাইক ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
সন্তানেরা প্রায় প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠিত হলেও তাদের গর্ভধারিনী মা’র এতদিন দু-মুঠো ভাত জুটছিল না। চিকিৎসার অভাবে সে ছিল মৃত্যু পথযাত্রী। এমনকি শারিরিক বিকলাঙ্গতার কারনে সত্তরোর্ধ মনোয়ারা বেগম ভিক্ষাও করতে পারছিল না। এতদিন সে বাবুগঞ্জের স্টীল ব্রীজ’র পশ্বিম প্রান্তের একটি খুঁপরী ঘরে বিনা চিকিৎসায় অর্ধাহারে বেঁচে ছিল না বাঁচার মত করেই। সারা শরীরে শুধু চামড়া আর হাড়ের অস্তিত্বই চোখে পড়েছে। মৃত্যুর পথযাত্রী মনোয়ারা বেগমের পুত্র ইজি বাইক চালক গিয়াস উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ‘আমি সামান্য আয়ের মানুষ কোন রকম খেয়ে পরে বেঁচে আছি, আমার সাধ্য মত মাকে চিকিৎসা করার চেষ্টা করছি। এখন আমিও অনেকটা সহায় সম্বলহীন, তাই বৃদ্ধ মা’র প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারিনি। আমার তিন ভাই পুলিশ অফিসার, তারা তাদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যত্র থাকে মায়ের কোন খোঁজ খবর নেয়নি দীর্ঘদিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।