নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী, ধর্মশালা (ভারত) থেকে : ধর্মশালার উইকেট না জানি কেমন হয়, কন্ডিশনটা না জানি কতোটা ভোগায়? এটাই ছিল প্রশ্ন। তার উপর এশিয়া কাপের ফিকশ্চারটা বড্ড বেকায়দায় ফেলেছিল বাংলাদেশ দলকে। টি-২০ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ধর্মশালায় নির্ধারিত অনুশীলন ম্যাচই যে বাদ দিতে হয়েছে। এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলে মাত্র ৩৬ ঘণ্টা আগে ধর্মশালায় এসে কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোটাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। তার উপর ধর্মশালার কন্ডিশনের মতো আবহাওয়ায় খেলে অভ্যস্ত নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ডের মতো দল প্রতিপক্ষ, অতীতে যাদের কাছে আপসেটের শিকার পর্যন্ত হতে হয়েছে। তার উপর অচেনা প্রতিপক্ষ ওমান। সর্বশেষ টি-২০ বিশ্বকাপে হংকংকের কাছে হারকেও যে সামনে আনতে হয়েছে মাশরাফিদের। অথচ এই ধর্মশালাই সব কিছু উজাড় করে দিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। ফেভারিটদের মতো সুপার টেনে উঠেছে বাংলাদেশ। তবে এতোটা প্রতিকূল পরিবেশে খেলতে এসে কাজটা সহজ হবে, এতোটা স্বস্তি নিয়ে কিন্তু প্রথম পর্ব শুরু করতে পারেননি মাশরাফিরা। গতকাল ওমানের হার্ডল ভালভাবে পেরিয়ে সুপার টেন এর টিকিট নিশ্চিত করে তা জানিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফিÑ ‘আমাদের ম্যাচ ম্যাচ প্র্যাকটিস একটু বেশিই হয়েছে। এশিয়া কাপে ৫ ম্যাচ খেলে এখানে এসেছি। আজ মনে হয়েছে আমরা বুঝি ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডে খেলেছি। ভারতে এর আগে আমরা খেলিনি। উইকেট ও কন্ডিশন সম্পর্কে আমাদের ধারণা ছিল না। ম্যাচের থেকে বেশি আবহাওয়ার বিষয়গুলো নিয়ে বেশি চিন্তা হয়েছে। তাছাড়া এই স্টেজে প্রেসারও ছিল।’
২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে যেভাবে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ দল, তাতে বাংলাদেশকে নিয়ে প্রতিপক্ষরাও স্বস্তিতে নেই। সুপার টেনে বাংলাদেশের বিপক্ষে আগামী ১৬ মার্চ কোলকাতায় অবতীর্ন হবে পাকিস্তান। সেই ম্যাচ নিয়ে এখন থেকেই উদ্বিগ্ন পাকিস্তান। সর্বশেষ তিনটি ওয়ানডে এবং ২টি টি-২০ ম্যাচের সব ক’টিতে পাকিস্তানকে হারানোয় মনস্ত¡াত্বিকভাবে এগিয়ে বাংলাদেশই। তবে এই নিকট অতীতের সাফল্য মাথায় এনে আত্মতুস্টিতে ভুগতে চান না মাশরাফি। উন্নতির গ্রাফটা বহাল রাখাই তার লক্ষ্যÑ ‘গত এক দেড় বছর ধরে আমরা যে পারফর্ম করছি, তা কিন্তু টার্গেট করে নয়। টার্গেটের তো শেষ নেই। আমরা সব সময় চাচ্ছি টিম যেভাবে খেলছে তার থেকে যেন আরও ভালোর পথে থাকে। টি-২০তে এখনো আমরা ওই লেভেলে আসিনি। এটাও মানতে হবে। সুপার টেনের প্রথম ম্যাচে কোলকাতায় আমাদের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। ওই ম্যাচে ভাল করতে পারলে আমাদের জন্য ভাল হবে।’
অবিশ্বাস্য হলেও সেমিফাইনাল অসম্ভব নয়, তা মনে করছেন তামীম। তবে তার জন্য সুপার টেনের প্রথম ম্যাচকেই টার্গেট করছেন মাশরাফিÑ ‘টি-২০ ক্রিকেটে অসম্ভব বলে কিছু নেই। ওখানে যদি সেরা ক্রিকেট খেলতে পারি, সে চেস্টাই থাকবে। তবে বাড়ির কাছে ভেন্যুটির অবস্থান মনে হলেও ওখানে খেলা কিন্তু কঠিন। যদি প্রথম ম্যাচ জিতে যেতে পারি, তাহলে তা ভাল হবে। পরের ম্যাচগুলোর জন্য আত্মবিশ্বাস পাওয়া যাবে।’
৩ নম্বরে রুম্মানের অব্যাহত ফর্ম এবং ওমানের বিপক্ষে ম্যাচে সাকিবের ফর্ম ফিরে পাওয়াকেও ধর্মশালা থেকে বাড়তি টনিক মনে করছেন মাশরাফি। আর তামীমের এমন ফর্মটাই যে সুপার টেনে কামনা করছেন মাশরাফিÑ‘প্রস্তুতি তামিমের ভালো হয়েছে। ও খুব ভালো টাচে আছে।যারা ফর্মে নেই তারাও ভালো করবে। মূল পর্বের আগে প্রস্তুতি বেশ ভালোই বলবো। কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পেরেছি। কলকাতা ও ব্যাঙ্গলোরের উইকেট ভিন্ন থাকবে।আশা করি এ রিদম ধরে রাখতে পারলে দ্বিতীয় পর্বে ভালো করতে পারবো।’
তবে ধর্মশালা থেকে দারুন কিছু অর্জনের বিপরীতে তাসকিন,আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করায় অনুভুতিটা যে মিশ্র হয়ে রইল মাশরাফিরÑ ‘ধর্মশালায় যা হয়েছে তা ভালো হয়েছে। ম্যাচ খেলেছি। তবে দূর্ভাগ্যবশত সানী ও তাসকিনের বিষয়টি এখানে এসেছে। আমার বিশ্বাস ওরা তাড়াতাড়ি ফিরে এসে আমাদের সঙ্গে যোগ দিবে।’ গতকাল দুপুর দেড়টার ফ্লাইট ধরে ধর্মশালা থেকে দিল্লী হয়ে কোলকাতায় পা রেখেছে ক্রিকেট দল বিকেলে। তবে ধর্মশালা ছাড়ার আগে সুপার টেন এ ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার সংকল্প রেখে গেছেন মাশরাফিÑ ‘যদি ভাল করতে হয়, তাহলে সাহসী হতেই হবে। ভয়ডরহীন মনোভাব নিয়েই প্রতিপক্ষের উপর নিয়ন্ত্রন নিতে হবে। সামনে আমাদেও চারটি বড় ম্যাচ আছে। সেই ম্যাচগুলোর অপেক্ষায় আছি।’
কোলকাতায় মাশরাফিদের বরনটা হয়েছে বাঙালী কায়দায়। ১৯৯১’র পর দল হিসেবে এই প্রথম কোলকাতায় পা রেখেছে বাংলাদেশ দল। ২৫ বছর পর কোলকাতায় বাংলাদেশ দলকে পেয়ে পশ্চিমবাংলার বাংলাভাষাভাষী জনগণ মেতে উঠেছে। ধর্মশালা থেকেই শোনা গেছে এ খবর। সেখানকার দর্শকের সমর্থনটাও থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাশে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে এই সমর্থনও যে টনিক যোগাবে বাংলাদেশ দলকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।