বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাসন কর্তৃপক্ষ ‘ওয়াসা’র টাকায় কেনা দু’টি গাড়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে রেজিস্ট্রেশন করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও প্রায় ৪০ লাখ টাকা দামের অপর একটি গাড়ির হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ওয়াসার এমডি গাড়িটি ওয়াসায় রয়েছে বলে দাবি করলেও সেটি কি কাজে ব্যবহার হচ্ছে তা বলতে রাজি হননি। তবে এ গাড়িটি ওয়াসায় নেই বলে জানিয়েছেন ওয়াসার প্রকল্প প্রধান ডিএমডি কামাল উদ্দিন আহমেদ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পানি সরবরাহ প্রকল্পের কাজ চলাকালীন সময়ে তদারকির স্বার্থে কয়েকটি গাড়ী ক্রয় করে ওয়াসা। তবে এরমধ্যে ঢাকা মেট্রো ঠ ১৩-৪৪৮০ এবং ঢাকা মেট্রো ঠ ১৩-৪৪৮১ নম্বরের দু’টি ডাবল কেবিন পিকআপ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না জিও এর নামে। যেখানে খুলনা ওয়াসার স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে এবং সেই সাথে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। কারণ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ওই গাড়ি দু’টিও তখন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী সম্পদে পরিণত হবে। অভিযোগ উঠেছে- দাতা সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ানে বাস্তবায়িত কাজের জন্য কেনা গাড়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কেন রেজিস্ট্রেশন করা হবে?
তবে সে বিষয়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ পিইঞ্জ বলেন, ‘গাড়ি দু’টি ক্রয় করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এজন্য রেজ্রিস্ট্রেশনও হয়েছে তাদের নামে।’ তবে এর অর্থায়ন খুলনা ওয়াসার চলমান প্রকল্পের মধ্য থেকে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অর্থ ওয়াসা দিয়েছে একথা ঠিক। তবে টেন্ডার শিডিউলে এভাবেই উল্লেখ ছিল’।
সুত্র জানান, ওই টেন্ডার ও সিডিউল নিরীক্ষা করেন পিএম (প্রকল্প ব্যবস্থাপক) এবং অনুমোদন দেন এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক)। তিনি ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক পর্যবেক্ষণ করেন। তাদের ভুলের কারণে খুলনা ওয়াসার এই এক কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, একই ভাবে ঠিকাদার চায়না হারবারের দিয়ে প্রকল্পের টাকায় আরও দু’টি পিকআপ ক্রয় করা হয়েছে যার রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে খুলনা ওয়াসার নামে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২১ জুন প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী একনেকে অনুমোদন করেন। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ সময় নির্ধারিত। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাইকা এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে আড়াই হাজার কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অপর সূত্র জানিয়েছেন, কনসালটেন্ট’র মাধ্যমে গত তিন বছর আগে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মিটসুবিসি সিডান কার ক্রয় করেছিল খুলনা ওয়াসা। গাড়িটির নম্বর খুলনা মেট্রো গ ১১-০৪৫৮। ক্রয়ের এক বছর গাড়িটি ওয়াসার কনসালটেন্ট অফিসে দেখা গেলেও গত দুই বছর ওয়াসায় দেখা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নগরীর পানি সংকট মোকাবেলায় একটি প্রকল্প গ্রহণ করে খুলনা ওয়াসা। যার নাম দেয়া হয় খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প। ২ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের আওতায় কয়েকটি গাড়ি ক্রয় করেছিল ওয়াসা। এরমধ্যে দু’টি প্রাইভেট কারও রয়েছে। তবে খুলনা মেট্রো গ ১১-০৪৫৮ নম্বর গাড়িটি গত দুই বছর ধরে ওয়াসার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে না। এটি এখন খুলনা ওয়াসার এমডি মোঃ আব্দুল্লাহ পিইঞ্জ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে খুলনা ওয়াসার এমডি মোঃ আব্দুল্লাহ পিইঞ্জ বলেন, ‘এ গাড়িটি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহৃত হয় না। সেটি ওয়াসাতেই রয়েছে’। তবে গাড়িটির অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আর বেশী কিছু বলতে রাজি হননি।
তবে ওই নম্বরের গাড়িটি খুলনা ওয়াসায় নেই বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল উদ্দিন আহম্মেদ হোসেন। তিনি বলেন, খুলনা ওয়াসায় যতগুলো গাড়ির ফাইল তালিকা রয়েছে তার মধ্যে ওই গাড়িটি নেই। তাছাড়া গাড়িটি প্রকল্প চলাকালীন সময় থেকে তিনি দেখেননি বলে দাবি করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।