পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
সামরিক অভিযানের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। লাখো রোহিঙ্গা মুসলমানদের পাশাপাশি রাখাইনের প্রায় ৩০ হাজার হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীও গৃহহীন হয়েছে। তারা বলছে, রাখাইনের উত্তর দিকের যে এলাকা থেকে উত্তেজনার সূত্রপাত, প্রথম থেকেই তা ঘিরে রেখেছে সরকারি বাহিনী। অন্যদিকে, পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা বলছে, সেনাবাহিনী ও সংঘবদ্ধ বৌদ্ধরা গ্রামের পর গ্রামে গণহত্যা চালিয়ে সেগুলো মুসলমানশূন্য করার পাশাপাশি গ্রামগুলোকে মাটির সঙ্গে মিশিয়েও দিচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের লরা হেই বলেন, যেসব রোহিঙ্গা এখনো তাদের গ্রামে আছেন, তারাও ভয় নিয়েই বসবাস করছেন; বছরের পর বছর যে খাদ্য সাহায্য তারা পেয়ে আসছিলেন, তা পেতেও তাদের কষ্ট হচ্ছে। তারা আদতে আটকা পড়ে আছে, বাজারগুলোও ঠিকমতো চালু নয়। যদিও মিয়ানমার বলছে, তারা রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মংডুতে ত্রাণের ব্যবস্থা করছে, যদিও এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। বিভিন্ন সাহায্যদাতা প্রতিষ্ঠান বলছে, আগস্টের শেষে সহিংসতা শুরুর পর থেকেই তারা উত্তর রাখাইনে পৌঁছতে পারছে না, যে কারণে কী ধরনের মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে তারও পরিমাপ করা সম্ভব হচ্ছে না। জাতিসংঘ গত সপ্তাহে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের অভিযোগ আনলেও ইয়াঙ্গুন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, তাদের সেনাবাহিনী জঙ্গি নির্মূলে রাখাইনে পরিকল্পিত অভিযান চালাচ্ছে। গত ২৫ আগস্ট রাতে বিদ্রোহী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে হামলা চালায়। হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার পর থেকে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে সেনা অভিযান শুরু হয়। এরপর কঠোর সেনা অভিযানের মধ্যে লাখো রোহিঙ্গা দেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। তাহলে সহিংসতা বিধ্বস্ত রাখাইনে এখন থাকছে কারা? ২০১৫ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, রাখাইনে বাস করা ৩০ লাখ মানুষের মধ্যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান। তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তরের জেলা মংডুয়েই এক-তৃতীয়াংশের বাস বলে মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে। গত তিন সপ্তাহে ওই মংডু জেলারই অন্তত ৪০ শতাংশ গ্রাম জনশূন্য হয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গারা জেলাটির মোট ৪৭১টি গ্রামে বসবাস করত। মিয়ানমারের তথ্যবিষয়ক কমিটি বলছে, ৫৯টি গ্রামের প্রায় সাত হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে; যেগুলোর বেশির ভাগই ‘বাঙালিদে’র। রোহিঙ্গাদের অনেকদিন ধরেই এই নামেই ডেকে আসছে মিয়ানমার সরকার। বছরের পর বছর বৌদ্ধ অধ্যুষিত দেশটিতে বসবাস করে এলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে তারা। এনডিটিভি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।