Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চামড়ার বাজারের অস্থিরতা কাটেনি ভারতে পাচারের আশঙ্কা প্রবল

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গতকাল ছিল ঈদের পর প্রথম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার হাট। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এই হাটটি যশোরের রাজারহাটে। সরেজমিনে দেখা গেছে, চামড়ার হাট মোটেও জমেনি। চামড়া হাটে ওঠেনি বললেই চলে। অথচ ঈদের পর রাজারহাটে চামড়ার হাট বরাবরই জমজমাট হয়। এবার ঘটেছে ব্যতিক্রম। তাহলে চামড়া কোথায় গেল-সঙ্গত কারণেই এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। বিজিবি ও প্রশাসন থেকে জোর দিয়ে বলা হচ্ছে সীমান্তে কঠোর নজরদারির কারণে ভারতে চামড়া পাচারের আশংকা নেই। ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা বলছেন চামড়ার হাটে দামের হেরফের ও যে অস্থিরতা বিরাজ করছে তাতে ভারতে চামড়া পাচারের আশঙ্কা প্রবল। পাচারকারী চক্র চামড়া গুদামজাত করে সুবিধামতো সময়ে পাচার করবে। তা না হলে হাটে বেচাকেনা হতো চামড়া। চামড়া বাজারের ধস, অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা তুলে কয়েকজন ব্যবসায়ী দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মূল সমস্যা ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের পুঁজি সঙ্কট ও চামড়া পচন ঠেকাতে যে লবন ব্যবহার করা হয় এবার তার দাম প্রায় দ্বিগুণ। তাছাড়া ট্যানারী মালিক ও সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তার চেয়ে অনেকবেশী দামে সিন্ডিকেট চামদা কিনে গুদামজাত করছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চামড়ার বড় হাট যশোরের রাজারহাটের চামড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন মুকুল জানান, প্রথমহাট তো জমলো না, দেখা যাক আগামী শনিবার হাটে কি হয়। তবে এবার চামড়া বাজারের এমন অস্থিরতা নিকট অতীতে ঘটেনি।
রাজারহাটের যে চিত্র অতীতে যারা দেখেছেন তাদের কাছে এটি এখন হাটই মনে হচ্ছে না। ঈদ পরবর্তী প্রথম হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের তেমন সমাগম ঘটেনি। একই সঙ্গে দাম নিয়েও হতাশ ব্যবসায়ীরা। ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিযোগিতার কারণে তারা বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে চড়া দামে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু হাটে এসে সেই মূল্য মিলছে না। ফলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়ছেন তারা। এজন্য চামড়ার দাম পুন:নির্ধারণের দাবি তাদের। ব্যবসায়ীদের কথা, রাজারহাট চামড়া ব্যবসায় ধস নেমেছে। এখন লাভ তো দূরের কথা ঋণের টাকা ও লাভ কিভাবে দেবেন তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। হাটে চামড়ার মূল্য না পাওয়ায় অনেকে চামড়া পাচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন। হাটে গরুর চামড়া প্রতি ২০০-৩০০টাকা ও ছাগলের চামড়ায় ৫০-৬০টাকা পর্যন্ত লোকসান গুণতে হচ্ছে। অপরদিকে, পাইকাররা বলছেন, ঝুঁকি নিয়ে তারা ট্যানারি শিল্প সমিতি নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া ক্রয় করছেন। পরে ট্যানারি মালিকরা দাম না বাড়ালে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে তাদেরও। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার তেমন হাকডাক নেই। নেই উৎফুল্লতা। চামড়ার আমদানিও কম। ব্যবসায়ীদের চোখে মুখেও হতাশার ছাপ। ব্যবসায়ী গোপাল দাস জানালেন, এবার এনজিও থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে চামড়া কিনেছি। বাজার দরের যে অবস্থা তাতে পুঁজি বাঁচবে বলে মনে হচ্ছে না। এদিকে, সীমান্তসুত্র জানায়, সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলের সাতক্ষীরা, কলারোয়া, যশোরের বেনাপোল, চৌগাছা, ঝিনাইদহের সামান্তা, যাদবপুর, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর, দর্শনা, মেহেরপুরের গাংনী ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরসহ বিভিন্ন সীমান্তের ফাঁকফোকর দিয়ে পাচারকারী সিন্ডিকেট ভারতে চামড়া করতে পারে বলে আশংকা রয়েছে। তবে বিজিবির নজরদারি বাড়িয়েছে চামড়া পাচার ঠেকাতে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চামড়া

১৩ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ