পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হজ্জ বা ওমরার সময় তালবিয়া পাঠ করা
হজ্জ বা ওমরার ইহরাম বেঁধে কাবা শরীফের দিকে রওয়ানা হওয়ার প্রাক্কালে উচ্চস্বরে কতগুলো কালেমা পাঠ করতে হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে একে ‘তালবিয়া পাঠ’ বলা হয়। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা:) হতে বর্ণিত হাদীসে তালবিয়ার শব্দগুলো এই : “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্্ নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক লা শারীকা লাক”। অর্থাৎ আমি উপস্থিত হয়েছি তোমার সমীপে হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত হয়েছি। আমি উপস্থিত হয়েছি তোমার আহ্বানে সাড়া দিতে, তোমার কোন শরীক নেই এ ঘোষণা জারী করতেই আমি হাজির হয়েছি। প্রকৃত পক্ষে সকল প্রশংসা ও নিয়ামত তোমার জন্যই নির্ধারিত। আর সকল মালি কানা ও শাসন ক্ষমতা তোমাতেই নিবদ্ধ আছে। তোমার কোন শরীক নেই। (জামে তিরমিজী।)।
এই কালিমায় প্রথম ও বার বার ব্যবহৃত শব্দ হচ্ছে ‘লাব্বাইকা’। লাব্বাইকা ‘ইলবাব’ শব্দমূল হতে গৃহীত। এর অর্থ-কোন স্থানে দন্ডায়মান হওয়া। এই শব্দটির আরও কয়েকটি অর্থ আছে। যথা (ক) এর অর্থ হলো-হে আল্লাহ! আমি তোমার আনুগত্য ও হুকুম পালনের কাজে বার বার প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়েছি। (খ) এর অর্থ হলো-হে আল্লাহ! আমি তোমার আহ্বানে বার বার সাড়া দিয়েছি। (গ) এর অর্থ হলো-হে আল্লাহ! আমার সমস্ত সত্তা ও সমস্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একমাত্র তোমাতেই নিবদ্ধ। (ঘ) এ প্রসঙ্গে আল্লামা ইবনে আবদুল বার বলেছেন : তালবিয়ার অর্থ হচ্ছে : আল্লাহ পাকের নির্দেশক্রমে হযরত ইব্রাহীম (আ:) আল্লাহর ঘরের হজ্জ করার জন্য জনগণকে যে আহ্বান জানিয়ে ছিলেন, তালবিয়া পাঠ করে সেই আহ্বানেরই সাড়া দেওয়া হয়। আর এরূপ কালিমা উচ্চারণ করার কারণ হলো-একজন লোক যখন ইহরাম বেঁধে কাবা শরীফের দিকে, রওয়ানা হয়, তখন সে মূলত : আল্লাহপাকের আহ্বানে সাড়া দেয়। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে কায়মনে সে তাঁরই নিকট উপস্থিত হয়। কেননা, আল্লাহ তায়ালা তাকে তাঁর ঘরের হজ্জ বা ওমরা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সে এই আহ্বান একান্তভাবে কবুল করে তাঁর ঘরে উপস্থিত হয়েছে। সে ‘লাব্বাইকা’ বলে এ কথারই স্বীকৃতি প্রদান করছে।
বস্তুত : তালবিয়ার শব্দগুলো কত যে প্রেরণা দায়ক, উদ্দীপনা পূর্ণ ও ঈমান ও একীনের তেজবীর্য প্রকাশক, তা’ এর প্রত্যেকটি শব্দ নিয়ে চিন্তা বিবেচনা করলেই সুস্পষ্ট হয়ে উঠে এবং আল্লাহর ঘরের দিকে ইহরাম বেঁধে রওয়ানা দেওয়ার কালে সে এই শব্দগুলো বলা যেতে পারে, ইহা হতে উত্তম কথা যে আর হতে পারেনা, তা’ অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করা যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।