Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ব্রিটেনের স্কুলগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে অনলাইন যৌনাচার

প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শিক্ষকদের প্রতি কঠোর হওয়ার নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের, স্কুল পর্যায়ে যৌন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের স্কুলগুলোতে অনলাইনে বিকৃত যৌনাচার মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে বলে সম্প্রতি দেশটির একটি পত্রিকার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। এতে দেখা যায়, গত তিন বছরে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা দশ হাজারেরও বেশি যৌন ছবি নিজেদের মধ্যে আদান প্রদান করেছে। এর ভয়াবহতা রুখতে স্কুল পর্যায়ে যৌন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার এবং শিশু সুরক্ষা সংগঠনগুলো।
যুক্তরাজ্যের ৫০টি স্কুলের ১২ এবং ১৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ওপর এ বিষয়ে একটি অনুসন্ধান চালায় দ্য টাইমস পত্রিকা। অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্কুল পর্যায়ে প্রতি ১০ জনে একজন শিক্ষার্থীই অনলাইনে বিকৃত যৌনাচারের সাথে জড়িত এবং এটাকে তারা বয়োসন্ধিকালের একটি স্বাভাবিক বিষয় বলে মনে করে। অনুসন্ধানে যে ৫০টি স্কুল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এতে ২০১২ সালে ১ হাজার ২১৮ জন শিক্ষার্থী পাওয়া যায় যারা যৌনাচার সম্বলিত বার্তা আদান-প্রদান করেছেন অথবা মোবাইল, ওয়েবক্যাম, ওয়েবসাইটের ডিজিটাল ক্যামেরার মাধ্যমে ছবি আদান প্রদান করেছে। সবচেয়ে বেশি বিকৃত যৌনাচারের ঘটনা ঘটেছে ক্যামব্রিজের হান্টিংটনের হিচিংব্রুক স্কুলে। এখানে ২০১২ সাল থেকে ১১৬টি ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। পত্রিকাটির অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যে স্কুলগুলোতে মাধ্যমিক পর্যায়ের মোট ৪৪ হাজার ১১২ জন শিশু শিক্ষার্থী গত তিন বছরে বিভিন্ন বিকৃত যৌনাচারের সময় ধরা পড়েছে। তদন্তে বলা হয়েছে, বাস্তবে এসব যৌনাচারের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। যেসব ঘটনা স্কুলে অভিযোগ আকারে আছে তা কেবল তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে। শিশুদের বিকৃত যৌন আচরণের আতঙ্কজনক প্রভাব ঠেকাতে স্কুলে বাধ্যতামূলক যৌন শিক্ষা চালু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী এবং নারী ও সমতা-বিষয়ক কমিটির প্রধান মারিয়া মিলার। তিনি বলেন, সরকারিভাবে যৌন শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে ঐতিহাসিকভাবে একটি নেতিবাচক ধারণা ছিল। তবে আমি মনে করি এখন সময় এসেছে এ চিন্তা পরিবর্তন করার।
এদিকে স্কুলগুলোতে অনলাইনে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষামন্ত্রণালয় নিদের্শনা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ শিক্ষামন্ত্রী নিকি মরগ্যান। কোনো শিক্ষার্থীর কাছে অশ্লীল ছবি পাওয়া গেলে তা পুলিশকে অবহিত করার জন্যও বলা হয়েছে। নিকি মরগ্যান বলেন, আমরা চাই দেশের সব যুবক তাদের জীবন ধারণ এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট এবং সামাজিকমাধ্যমের সুবিধা গ্রহণ করুক। তবে আমরা এর ঝুঁকি এবং বিপদ সম্পর্কেও সবাইকে সচেতন করতে চাই। প্রযুক্তি এবং সামজিক মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিশুদের নিরাপদ রাখার দায়িত্ব স্কুলেরও।
এর আগে যুক্তরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী নিকি মরগ্যান বলেছেন, দেশটির স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই শেখাতে হবে যে, যুক্তরাজ্য একটি খ্রিস্টান দেশ এবং সেই সাথে তাদের নাস্তিক্যবাদের ওপর ধর্মকে প্রাধান্য দিতে হবে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, নাস্তিক্যবাদী স্কুলগুলোর প্রতি এক বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি স্পষ্ট করেন যে ধর্মহীনতাকে ধর্মের সমান মর্যাদা দেয়ার দরকার নেই। যদিও স্কুলগুলোর শিক্ষাক্রম থেকে নাস্তিক্যবাদ তুলে দেয়ার বিষয়ে দেশটির শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রায় দেয় দেশটির হাইকোর্ট। এর পরেই এমন মন্তব্য করলেন নিকি মরগ্যান। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মানবতাবাদীরা মানুষের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করতে তাদের কাজের অংশ হিসেবে আদালতকে ব্যবহার করছে। এর মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নাস্তিক্যবাদ শিখতে বাধ্য করা হচ্ছে। স্কুলগুলোর প্রতি দেশটির শিক্ষামন্ত্রীর দেয়া নতুন নির্দেশনা অনুসারে, কোনো স্কুলে ধর্মের সাথে ধর্মহীনতা শিক্ষা দেয়া বা নাস্তিক্যবাদ শিক্ষা দেয়ার জন্য সমান সময় দেয়া বাধ্যতামূলক নয়। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিটেনের স্কুলগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে অনলাইন যৌনাচার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ