রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
রাজশাহী ব্যুরো : দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদুল আযহা বা কোরবানীর ঈদ। ঈদ মানে আনন্দ হলেও রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের মাঝে সে আনন্দ নেই। বন্যায় সব আনন্দ ¤øান করে দিয়েছে। কোরবানী ঈদকে ঘিরে মানুষের চিরাচারিত ব্যস্ততায় এবার ভাটা পড়েছে। দল বেধে কোরবানীর পশু কিনতে হাটে যাওয়া। এহাট ও হাট ঘুরে পশু পছন্দ ও দরদাম করা। বনিবনা হলে সাথে নিয়ে আসা। এসব নজরে পরছেনা। মস্ত আকারের গরু এনে বাড়ির সামনে কাগজের ফুলের মালা কিংবা ফিতে বেধে রেখে জানান দেবার ব্যাপারটিও নেই। কি বিত্তবান আর মধ্যবিত্ত সবার মাঝে ঝিমুনি ভাব। এ অঞ্চলের বড়হাট রাজশাহী সিটি হাটে পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় দেশী ও ভারতীয় গরুতে ভরা। সে তুলনায় ক্রেতার আগমন কম। বিগত বছর গুলোয় এতোদিনে হাট বাজার জমে উঠতো। হাটের ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা জানালেন এখনো সেভাবে জমে ওঠেনি কোরবানীর পশুর হাট। রাজশাহীর বাইরে থেকে পাইকাররা আসছে। তারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ক্রেতারা এখনো তেমনভাবে হাটে নামেনি। তাদের আশা দু’একদিনের মধ্যে জমে উঠবে বেচাকেনা।
এদিকে বানের পানির মতই সীমান্তের ওপার থেকে গরুর ঢল নামায় শংকিত স্থানীয় খামারীরা। এমনিতে চাহিদার চেয়ে বেশ গরু খাসী মজুদ রয়েছে । তার সাথে যোগ হচ্ছে ভারতীয় গরু। খামারীরা হাটে গরু নিয়ে গেলেও কাংখিত দাম পাচ্ছেন না বলে জানান। এরমধ্যে রয়েছে দালালদের উৎপাত। পুরো হাট নিয়ন্ত্রন করছে দালালরা। এরাই মালিক সেজে হাটের দাম নিয়ন্ত্রন করছে। পর্যবেক্ষন করে জানাযায়, গত বছর আন্দাজমত গরুর ওজন দেখে দামদর করা হতো। প্রতিমনে হিসাব ছিল ষোল সতের হাজার টাকা। এবার তা উঠেছে কুড়ি হাজারে। গত রমজানে মাংশের দাম নির্ধারণ করার প্রভাব পড়েছে এতে। হাট ইজারাদার ও খামারীদের সাথে কথা হলো বাজার দম ধরে আছে। হাটে প্রচুর গরু খাসী দেখে ক্রেতাদের প্রত্যাশা শেষ মুহুর্তে দাম কমবে। আর বিক্রেতাদের প্রত্যাশা শেষ মুহুর্তে তারা প্রত্যাশিত দামে বিক্রি করতে পারবেন। তবে ভারতীয় গরু সব হিসেব নিকেশ উল্টে দিতে পারে। শুধু কোরবানীর হাট নয় জামা কাপড় তৈষজপত্র সব ব্যবসাতেই চলছে মন্দা। কাপড় ব্যবসায়ীরা জানান কোরবানী ঈদে ঈদুল ফেতরের মত বেচাকেনা না হলেও খুব একটা খারাপ বিক্রি হয়না। কিন্তু এবার চিত্র উল্টো। একেবারেই বেচাকেনা নেই। তৈষজপত্র ছুরি বটি চাকু আর মাংশ তৈরী করায় কাঠের গুড়ির বাজারও মন্দা বলে এসব ব্যবসায়ীরা জানান।
মধ্যবিত্তদের অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত। চাল থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিষের দাম বাড়তি। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে হিমসীম খাচ্ছে। এমন আছে আগে যারা নিজে একটা পশু কোরবানী করেছেন তারাও যাচ্ছেন শেয়ারে। কারো কারো মন্তব্য মাংশ খাওয়ার জন্য নয় আল্লাহর নির্দেশ পালনের চেষ্টা করছেন। রাজশাহী, নওগা, নাটোর, চাপাইনবাবগঞ্জের লাখ লাখ বানভাসী মানুষের ঈদ আনন্দ বানের পানিতে ধুয়ে গেছে। রাজশাহীর বাগমারা ও মোহনপুরের বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বানের পানি কিছুটা কমলেও বানভাসী মানুষের দূর্ভোগ একটুও কমেনি। বরং অনাহার অর্দ্ধাহার রোগ ব্যাধি তাদের জেঁকে বসছে। ফসলের ক্ষেত ডোবা। ঘরেও খাবার নেই। ত্রান নেই। মাঝে মধ্যে কেউ কিছু নিয়ে আসলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে নগন্য। এতে ক্ষুব্ধ বানভাসী মানুষ। তাদের ভাষায় ওরা রিলিফ দেয়ার চাইতে ছবি তুলতে ব্যাস্ত। যেন শুটিং হচ্ছে।
বানভাসী মানুষরা জানান বানের পানি কমার সাথে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগ ব্যাধি। তারা সুষ্ঠু চিকিৎসা পাচ্ছেন না। সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমলা গ্রামের লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন নাসিরগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের আশ্রয় কেন্দ্রে। গরু ছাগল বেধে রেখেছেন সড়ক ও উচু বাগানে। নিজেরাই খেতে পারছেনা। গরু ছাগলকে কি খাওয়াবে। বেড়ে গেছে পশুখাদ্য খড় ও ভুৃষির দাম। হাটে নিয়ে বিক্রি করতে পারেননি বলে জানালেন নাসিম। ঈদের কথা জানাতে বানভাসী মানুষ ক্ষোভ ও দু:খ করে বলেন একবেলা খাবার জোগাড় করতে পারছিনা। আমাদের আবার ঈদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।