পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত একটি ডেইরি বোর্ড গঠনের মাধ্যমেই দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশে দুধ ও মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভব। ডেইরি বোর্ড ও নীতি সহায়তার অভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পশু খাতের উন্নয়ন। তাই খামারীদের ঋণ ব্যবস্থাকে সহজীকরণ করা, বীমা সুবিধা ও উৎপাদন ব্যবস্থায় খামারীদের খরচ কমিয়ে আনা ছাড়াও দুধ ও গরু আমদানি বন্ধের সুপারিশ করা হয়। গতকাল রাজধানীতে আয়োজিত ‘গরুর অর্থনীতি: সংকট ও সমাধান’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল জার্নালিস্টস এন্ড এক্টিভিষ্টস ফেডারেশন (বিএজেএএফ) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাণী সম্পদ অধিদফতরের (ডিএলএস) মহাপরিচালক ডা. মো. আইনুল হক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএজেএএফের সাংগঠনিক সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত¡ করেন অমিয় ঘটক পুলক। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে গতবছর প্রায় ১ কোটি ৪৮ লাখ ৬৫ হাজার টন তরল দুধের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৯২ লাখ ৮৩ হাজার টন। ফলে দেশে গত বছর দুধের ঘাটতি ৫৫ লাখ ৮২ টন। অন্যদিকে গত বছর দেশে পশু কোরবানী হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ। চলতি বছর দেশের বাজারে সরবরাহের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার পশু। চাহিদা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও পশুর কোন ঘাটতি হবার কথা নয়। কিন্তু তারপরেও পার্র্শ্ববর্তী দেশ থেকে গরু আমদানি হচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৩ লাখ ৬৫ হাজার গরু দেশে প্রবেশ করেছে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল হক বেগ বলেন, চার দশকে দেশ একটি ডেইরি বোর্ড গঠন করতে পারলো না। সেই বোর্ডকে একটি কার্যকর মিশন ও ভিশন দিতে পারলে দেশের দুগ্ধ শিল্প যেমন গতি পেত তেমনি নারী কর্মসংস্থান ও দারিদ্রতা দ্রæত হারে কমিয়ে আনা সম্ভব।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাদিক এ্যাগ্রোর সত্ত¡াধিকারী মো. ইমরান হোসেন বলেন, দুধ আমদানি ও গরুর অনুপ্রবেশ বন্ধের পাশাপাশি সরকারের সুনজর থাকলে মাংস ও দুগ্ধ শিল্প দেশে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভব। উন্নত প্রযুক্তি, অর্থায়ন ও বিপনন সুবিধার পাশাপাশি নীতি সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।
দেশের পশুসম্পদ খাতে প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে জানান এসিআই এগ্রিবিজনেসেস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (সিইও) ড. ফা হ আনসারী। এই বিনিয়োগ বাড়াতে হলে সরকারী খাতের নীতি সহায়তা বেসরকারী খাত বান্ধব করতে হবে। পাশাপাশি পশু পালনের জন্য ব্রিডিং, ভাকসিন ও সিমেন আমদানি বেসরকারী খাতের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। সরকারিভাবে ২৫-৩০ বছর আগের সিমেন দিয়ে গরু উৎপাদন কমিয়ে আনতে হবে।
বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষনা প্রতিষ্ঠানের (বিএলআরআই) সাবেক মহাপরিচালক ও কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম চামড়ার দাম কমানোর সমালোচনা করে বলেন, কয়েক বছরে চামড়ার রফতানি দ্বিগুন হয়েছে কিন্তু চামড়ার দাম চলতি বছরে অর্ধেকে নামানো হয়েছে।
ডা. মো. আইনুল হক বলেন, দেশে উৎপাদিত পশু দিয়েই এবারের কোরবানীর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। দুগ্ধ খাতে ঋণ দেওয়া হলেও সব ধরনের পশু পালনে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের কার্যক্রম শিগগিরই শুরু করা হবে। এছাড়া খামারীদের নিরাপত্তায় বীমা চালু করা হবে।
গরুর খাদ্যের অস্বাভাবিক দামের বিষয়টি উল্লেখ করে কক্সবাজার ডেইরি ফার্মার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী মোরশেদ আহাম্মদ বলেন, গরুর খাদ্যের বেশি দামের কারনে উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে। আবার উৎপাদন ও বিক্রয় মৌসুমে গরু ও দুধ আমদানি উন্মুক্ত রাখার কারনে খামারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
ডিএলএসের পরিচালক (স¤প্রসারণ) ডা. মো. মেহেদী হাসান বলেন, কয়েক বছরের ব্যবধানে ডিম, ব্রয়লার আমদানির প্রয়োজন হচ্ছে না। সামনের দিনে মাংস ও দুধ আমানি বন্ধ করতে সহায়ক নীতিমালা ও বোর্ড গঠন করা হচ্ছে। এছাড়া দুগ্ধ নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। এসব বাস্তবায়ন হলে দেশে দুধ ও মাংস উত্পাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আসতে স্বল্প সময়ে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) সাবেক পরিচালক ড. এম আসাদুজ্জামান, ডিএলএসের সাবেক মহাপরিচালক মোসাদ্দেক আলী, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক শাহ এমরান, কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক আনোয়ারুল হক, প্রাণ-ডেইরি লিমিটেডের চিফ ডেইরি (অপারেশন) ডা. মো. রাকিবুর রহমান, পিকেএসএফের মহাব্যবস্থাপক ড. শরিফ আহমেদ চৌধুরী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারী হাসপাতালের চিফ ভেটেরিনারী অফিসার (সিভিও) ডা. মো. আবদুল হালিম ও ডিএলএসের সাবেক পরিচালক (উৎপাদন) ডা. অরবিন্দ কুমার সাহা বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।